দুই সতীনের লড়াই নিয়ে কত গল্পই না প্রচলিত আছে গ্রামবাংলায়। আর এই হারানো দিনের পিঠাটির ইতিহাসের সঙ্গেও জড়িয়ে আছে এমন এক গল্প। ধারনা করা হয় সবচেয়ে পুরোনো পিঠাগুলোর মধ্যে একটি হলো এই সতীনমোচড় পিঠা। গল্পে আছে, রাজার ছিল দুই রানি। রাজা বড় রানিকে বলেছিলেন রাজদরবারের কিছু বিশেষ অতিথির জন্য পিঠা তৈরি করতে। বড় রানি পিঠা তৈরি করে রেখে আসার পর ছোট রানি পিঠার ওপর এক গাদা তিল ছড়িয়ে দিয়ে আসেন যেন রাজা দেখে রেগে যান।
পরিকল্পনামাফিক রাজা দেখে রেগে গেলেও খেয়ে মুগ্ধ হয়ে গেলেন এবং বলে উঠলেন বাহ এর স্বাদ তো অসাধারণ এ পিঠার! কী নাম? তখন বড় রানি কিছু বলার আগেই ছোট রানি বলে উঠলেন, আমিই এতে তিল দিয়েছিলাম আর এজন্যই তো এতো স্বাদ। তখন রাজা ছোট রানির আসল উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে মুচকি হেসে বললেন তাহলে আজ থেকে এ পিঠার নাম সতীনমোচড়। নাম আর গল্প যেমনই হোক, এই পিঠার স্বাদ সত্যিই জিবে জল আনার মতো।
চালের গুঁড়া ১ কাপ
ময়দা ১ কাপ
নারকেল কোরা দেড় কাপ
তেল আধা কাপ
ঘি ২ টেবিল চামচ
গুড় আধা কাপ
চিনি আধা কাপ
তিল আধা কাপ
ভাজার জন্য তেল ২ কাপ
ময়দা আর চালের গুঁড়া এক চিমটি লবণ দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর অল্প অল্প করে তেল দিয়ে আলতো করে মথে নিন। এবার এতে গুড়, নারকেল, ঘি মিশিয়ে আবার মথে নিন। মিশ্রণটা কিছুটা নরম আর খুব আঠালো হবে। এবার হাতে সামান্য তেল মেখে নিয়ে গোল করার পর চেপে কিছুটা চ্যাপ্টা করে নিয়ে মাঝে একটা ছিদ্র তৈরি করুন ডোনাটের মত। কড়াইতে তেল দিয়ে গরম হয়ে এলে চুলার আঁচ মাঝামাঝি রেখে গাঢ় বাদামি করে ভেজে নিন। গুড় দেওয়ার কারনে খুব তাড়াতাড়ি রং চলে আসে। তাই অল্প আঁচে সময় নিয়ে ভাজবেন। তাহলেই পিঠার বাইরে মুচমুচে এবং ভেতরটা রসালো থাকবে।
এবার পাতলা করে চিনির সিরা তৈরি করে নিবেন। ঘন সিরা করলে পিঠা অতিরিক্ত মিষ্টি হয়ে যাবে। সিরায় পিঠার একপাশ ভিজিয়েই তুলে নেবেন সঙ্গে সঙ্গে। এরপর সিরায় ভেজানো দিকটা ভালোভাবে তিলে গড়িয়ে নেবেন। একদিক যেন তিলে ঢেকে যায়। এভাবে সবগুলো সতীনমোচড় পিঠা বানিয়ে পরিবেশন করুন সাজিয়ে।