যারা কোরবানি দিয়েছেন, তাঁদের ঘরে এখন মাংস এসে গেছে। আত্মীয়পরিজন আর প্রতিবেশীরাও দিয়েছেন গরু বা খাসির মাংস। সুবিধাবঞ্চিত মানুষ আর গরীব দু:খীদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার পর নিজের পরিবারের সদস্য, প্রিয়জন বা বন্ধুদের জন্য একটু বিশেষ কোনো পদ তৈরি করতে ইচ্ছা করে সবারই। কেউ চান একটু মোগলাই ঘরানার জম্পেশ মাংসের পদ আর কেউ বা মাংস দিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত বা ঝটপট, সহজে তৈরি করার মতো রেসিপি খোঁজেন। পরিবারের ছোটরাও চায় মজার কিছু রান্না করে খাওয়াতে সবাইকে৷ এদিকে আবার কিছু ক্ল্যাসিক পদ সকলের প্রিয় হলেও কীভাবে বানানো যায় সে নিয়ে চলে দ্বিধাদ্বন্দ্ব৷ এজন্য শরণাপন্ন হওয়া গেল হাল ফ্যাশনের কালিনারি এক্সপার্ট ও রন্ধনশিল্পী সেলিনা শিল্পীর কাছে।
প্রথমেই শিল্পী বললেন মাংস সঠিকভাবে সংরক্ষণ করার কথা। এই গরমে খুব দ্রুত নষ্ট হতে পারে তাজা মাংস। ফ্রিজে রাখতে ছোট ছোট প্যাকেটে করে অল্প অল্প করে জমতে দিতে হবে, বললেন এই অভিজ্ঞ গৃহিণী। আর বিভিন্ন অংশের মাংস ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আলাদা করে লেবেলিং করে রাখলে ভালো। মাংস ছাড়াও গরুর ভুঁড়ির প্রতি সকলের আগ্রহ এখন। আমাদের দেশে যুগ যুগ ধরে খাওয়া হয় গরুর ভুঁড়ি বা বট। তবে আজকাল ফুড ভ্লগ আর বিভিন্ন হাইপের কারণে তরুণ প্রজন্মও ভুড়ি ভুনা বা ভাজা খুব পছন্দ করে খায়। এজন্য তিনি প্রথম দিনই ভুঁড়িটি প্রাথমিকভাবে পরিস্কার করে রাখতে পরামর্শ দিলেন। এক্ষেত্রে গরম পানি ব্যবহার করলেও চুন দিতে মানা করলেন শিল্পী। এরপর সেদ্ধ করে হাতে ভালোভাবে পরিস্কার করে ভুঁড়ি প্রসেস করে নিতে হবে। আর সকলের জন্য দুর্দান্ত এক ভুঁড়িভুনার রেসিপি দিলেন তিনি। শিল্পী বললেন, কোরবানির ঈদে সেই রোজকার ভুনা আর ঝোল তো থাকবেই। কিন্তু সেই সঙ্গে অন্য রকম কিছু করলে ঈদের ভোজে আসবে নতুনত্ব। আর সে জন্য অনুপ্রেরণা নেওয়া যায় বিভিন্ন দেশের কুইজিন থেকে। তিনি বললেন, যে রেসিপিতেই রান্না করা হোক, মাংস ভালোভাবে কষানোর ওপরেই নির্ভর করে এর স্বাদ। প্রথমেই বেশি পানি দিলে মাংস সেদ্ধ হলেও স্বাদ ভালো আসবে না৷ এবারে বিরিয়ানি নিয়ে শিল্পী দিলেন এক দারুণ আইডিয়া। গরু বা খাসির মাংস দিয়ে হালের ক্রেজ মটকা বিরিয়ানি বাড়িতেই তৈরি করে চমকে দেওয়া যায় সকলকে। আবার যারা খাসির মাংসের তৈরি একটু মোগলাই পদ পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য ট্রেন্ডি হরিয়ালি মাটনের রেসিপি পাওয়া গেল এই রন্ধনপটিয়সীর কাছ থেকে৷ এর পরেই এল কাবাবের কথা। শিল্পী বললেন, কাবাবের জন্য সঠিকভাবে মাংস ম্যারিনেট করা এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। শিক কাবাব, বটি কাবাব, শাসলিক ইত্যাদি তো আজকাল ঘরে ঘরেই বানানো হয় কোরবানির মাংস দিয়ে। তিনি বরং মাংসের কিমা দিয়ে তৈরি ঝটপট বানানো যায় এমন এক সহজ রেসিপি দিলেন। আর পদটি অত্যন্ত সুস্বাদুও। টার্কিশ আদানা কাবাবের এই রেসিপিটি দেখে নয়া রাঁধুনিরাও বানাতে পারবে পদটি সহজে। আর জেনজি প্রজন্মের স্বাদকোরকের বাহবা পাওয়ার মতো এক রেসিপিও মিলল তাঁর ঝুলিতে৷ বানানো যেমন সহজ এই বিফ রামেন, তেমনি বেশ স্বাস্থ্যসম্মত। এবার তবে সেলিনা শিল্পীর বানানো এই সেরা ৫ মাংসের রেসিপি দেখে নিয়ে বানিয়ে ফেলুন যে পদ ইচ্ছা সেটিই।
এই গরমে একেবারে রিফ্রেশিং ফ্লেভারের আর চোখজুড়ানো মাটন হরিয়ালি ঈদের ভোজে নজর কাড়বে সবার।
উপকরণ
খাসির মাংস দেড় কেজি
মাংস সেদ্ধ করার জন্য
আদাবাটা ২ টেবিল চামচ
রসুনবাটা ২ টেবিল চামচ
পেঁয়াজবাটা ৩ টেবিল চামচ
তেল ২ টেবিল চামচ
লবণ স্বাদমতো
গ্রেভির জন্য
পেঁয়াজবাটা ২ টেবিল চামচ
রসুনবাটা ২ টেবিল চামচ
আদাবাটা ২ টেবিল চামচ
ধনিয়া পাতা ২৫০ গ্রাম
পুদিনা পাতা ২ টেবিল চামচ
কাঁচামরিচ ১০ ১২টি
টকদই ৭০০ গ্রাম
ঘন দুধ ২ কাপ
গরম মসলা ২ টেবিল চামচ
গোলমরিচের গুঁড়া ২ চা-চামচ
লবণ স্বাদমতো
তেল আধা কাপ
মাখন ২ টেবিল চামচ
এলাচি ৪-৫টি
লবঙ্গ ৪টি
দারুচিনি ২ টুকরা
তেজপাতা ২-৩টি
প্রণালি
প্রথমে খাসির মাংস ধুয়ে সেদ্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় সব উপকরণ একসঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে প্রেশার কুকারে বা চুলায় ৭০ ভাগ সেদ্ধ হয় করে রান্না করতে হবে।এরপর টকদই এবং ঘন দুধ বা ফ্রেশ ক্রি একসঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। ব্লেন্ডারে কাঁচামরিচ, ধনিয়া পাতা, পুদিনা পাতা, পেঁয়াজ, আদা, রসুন একসঙ্গে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। পাটায়ও বেটে নেওয়া যায়। এবার গলানো মাখন, টকদই ও সব মসলা একসঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে সেদ্ধ করে রাখা মাটনের সঙ্গে মাখিয়ে রাখতে হবে ১০ মিনিট। এরপর একটি কড়াইয়ে তেল দিয়ে গোটা মসলাগুলো দিয়ে সুগন্ধ এলে এতে মাখানো মাংস হালকা ভেজে নিতে হবে। এর মধ্যে মেখে রাখা গ্রেভি ঢেলে দিয়ে ভালোভাবে কষিয়ে নিতে হবে। মাঝারি আঁচে ঢেকে রান্না করতে হবে, যেন মাংস নরম হয়। যখন দেখা যাবে, গ্রেভির গা থেকে তেল ছেড়ে দিয়েছে, তখন নামিয়ে ফেলতে হবে। ওপরে বেরেস্তা ও টকদই বা ক্রিম দিয়ে সাজিয়ে পোলাও বা যেকোনো রুটির সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করতে হবে মাটন হরিয়ালি।
হালের ক্রেজ মটকা বিরিয়ানি ঘরেই বানিয়ে ফেলা যাক সেলিনা শিল্পীর রেসিপিতে। আর এই অত্যন্ত সুস্বাদু পরিবেশনের কায়দাও বাতলাচ্ছেন তিনি তাঁরই তোলা চমৎকার ছবিগুলোতে।
উপকরণ
খাসির মাংস ১ কেজি
বাসমতী চাল ৭০০ গ্রাম
রসুনবাটা ২ টেবিল চামচ
আদাবাটা ২ টেবিল চামচ
পেঁয়াজকুচি ১/২ কাপ
জিরাগুঁড়া ১ টেবিল চামচ
বিরিয়ানি মসলা ১ টেবিল চামচ
জাফরান ১ গ্রাম
জাফরান ভেজানোর জন্য দুধ ১ কাপ
গরমমসলার গুঁড়া ২ টেবিল চামচ
হলুদগুঁড়া ২ চা-চামচ
মরিচগুঁড়া ২ চা-চামচ
তেজপাতা ২-৩টি
এলাচি ৫টি
দারুচিনি আধা ইঞ্চি ৩ টুকরা
আস্ত শাহি জিরা ১ চা-চামচ
কালো এলাচি ২টি
লবণ স্বাদমতো
চিনি ১ টেবিল চামচ
তেল আধা কাপ
ঘি আধা কাপ
প্রণালি
বাসমতী চাল রান্নার আগে দুই ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। এবার একটি বড় হাঁড়িতে পানি দিয়ে তাতে সুতি কাপড়ে পুঁটলি বেঁধে গোটা গরমমসলা দিয়ে ফুটিয়ে লবণ ও চাল দিতে হবে। একবার ফুটলে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। চাল নরম হবে না, শুধু স্বচ্ছ ভাব চলে যাবে।মাংস সব মসলা দিয়ে মাখিয়ে রাখতে হবে ৩০ মিনিটের মতো। এবার একটি কড়াইয়ে তেল গরম করে তাতে শাহি জিরার ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজকুচি দিয়ে ভাজতে হবে। এবার মাংস দিয়ে ভালো করে সব মসলা দিয়ে কষিয়ে নিতে হবে। এবার আলু দিয়ে লবণ ও হলুদ দিয়ে নাড়াচাড়া করে ঢেকে দিতে হবে। দুধে জাফরান ভিজিয়ে রাখতে হবে।এবারে মটকায় নিয়ে বিরিয়ানি লেয়ারিং করার পালা। একটি মাটির পাতিলে প্রথমে মাংস, তারপর আধা সেদ্ধ চালের একটি স্তর দিয়ে তার ওপরে মাংস ও আলু দিয়ে আবার চাল দিয়ে দিতে হবে। ওপরে জাফরান ভেজানো দুধ, বিরিয়ানি মসলা, গরমমসলার গুঁড়া ও ঘি ছড়িয়ে মাটির পাত্রের মুখ আটা দিয়ে ভালোভাবে বন্ধ করে দিতে হবে। এবার তাওয়ার ওপর মাটির পাতিল রেখে খুব ঢিমে আঁচে ৪০ মিনিট দমে রাখার পর নামিয়ে গরম-গরম পরিবেশন করতে হবে। ছবির মতো করে ট্রেতে মটকা উল্টে রেস্তোরাঁর মতো পরিবেশন করা যায়।
তুরস্কের নাম তুর্কিয়ে হয়ে গেল। কিন্তু ঐতিহ্যবাহী টার্কিশ আদানা কাবাবের আবেদন আজও চিরন্তন। সেলিনা শিল্পীর রেসিপিতে আদানা কাবাব রাখলে ডিনারে আসবে অটোমান আমেজ।
উপকরণ
গরুর মাংসের কিমা ৫০০ গ্রাম
পেঁয়াজকুচি ১ কাপ
আদাকুচি ১ চা-চামচ
রসুনকুচি ১ চা-চামচ
লাল ক্যাপসিকাম বিচি ছাড়িয়ে কুচি করা ১/২ কাপ
কাঁচা মরিচকুচি ১ টেবিল চামচ বা স্বাদমতো
ধনেপাতা কুচি ১/২ কাপ
পুদিনাপাতা কুচি ১ টেবিল চামচ
কাঠকয়লা ৪-৫টি
লবণ স্বাদমতো
তেল ও গলানো মাখন প্রয়োজনমতো
চ্যাপটা শিক বা বাঁশের কাঠি (পানিতে ভিজিয়ে রাখা)
প্রণালি
ব্লেন্ডারে মাংসের কিমার সঙ্গে সব গুঁড়ামসলা ও কুচি করে রাখা উপকরণ ভালো করে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। এরপর এর সঙ্গে স্বাদমতো লবণ দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে একটি এয়ারটাইট বক্সে ভরে ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। ১ ঘণ্টা পর ফ্রিজ থেকে বের করে নিতে হবে। চুলায় ফ্রাইপ্যান বসিয়ে সামান্য তেল ব্রাশ করে ভালো করে গরম করে নিতে হবে। কিমার মিশ্রণ থেকে বলের মতো করে খানিকটা নিয়ে একটি শিক বা কাঠিতে গেঁথে আঙ্গুল দিয়ে চ্যাপ্টা চ্যাপ্টা করে আদানা কাবাবের আকারে গড়ে নিতে হবে।এভাবে সবগুলো গড়ে নিয়ে ফ্রাইপ্যানে কাবাব দিয়ে উল্টে-পাল্টে হালকা বাদামি রঙ হওয়া পর্যন্ত ভাজতে হবে। ওপর থেকে মাঝেমধ্যে গলানো মাখন ব্রাশ করে দিতে হবে।সবদিক ভালো করে ভাজা হয়ে গেলে তুলে নিতে হবে। এবারে কাবাব স্মোক করার পালা। কাঠকয়লা আগুনে গরম করে লাল করে নিতে হবে। এবার কাবাবগুলোকে একটি পাত্রে নিয়ে মাঝে ছোট একটি বাটিতে ৪-৫টা গরম কয়লা রেখে তাতে এক টেবিল চামচ শর্ষের তেল বা ঘি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে যাতে ধোঁয়া বের হতে না পারে। পাঁচ মিনিট পর ঢাকনা খুলে নিলেই তৈরি হয়ে গেলো দারুণ স্মোকি ফ্লেবারের টার্কিশ আদানা কাবাব। এই কাবাব তৈরি করা অন্য সব কাবাবের চেয়ে সহজ, ঝামেলাও কম। পছন্দনীয় সালাদ এবং নানরুটির সঙ্গে গরম গরম পরিবেশন করতে হবে।
পরিষ্কার করতে যতই ঝক্কি সামলাতে হোক, কোরবানির ঈদে ভুঁড়ি বা বট ভুনা এক প্রধান আকর্ষণ। অনেকেই ধুয়ে, বেছে সেদ্ধ করে রেখেছেন ভুঁড়ি। এবারে সেলিনা শিল্পীর দারুণ রেসিপিতে ভুনা করে নিলেই কেল্লাফতে। তাঁর তোলা বট ভুনার ছবিগুলো দেখে জিবের জল সামলানো দায়।
উপকরণ
পরিষ্কার করে নেওয়া গরুর বট বা ভুঁড়ি
পেঁয়াজ কাটা ২ কাপ
রসুনবাটা ১ টেবিল চামচ
আদাবাটা ১ টেবিল চামচ
জিরাবাটা ১ চা–চামচ
রান্নার তেল ১ কাপ
লবণ স্বাদমতো
মরিচগুঁড়া ১ টেবিল চামচ
হলুদগুঁড়া ১ চা-চামচ
ধনেগুঁড়া ২ চা-চামচ
গরমমসলার গুঁড়া ২ চা-চামচ
টালা জিরাগুঁড়া ১ চা-চামচ
এলাচি ৪–৫টি
কালো বড় এলাচি ৩টি
লবঙ্গ ৪–৫টি
কালো গোলমরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ
তেজপাতা ২টি
দারুচিনি ২ টুকরা
কাঁচামরিচ ৪–৫টি
আস্ত রসুনের কোয়া ৮-১০টি
পানি ২ কাপ
প্রণালি
যে প্যানে বা কড়াইতে ভুঁড়ি ভুনা করা হবে, প্রথমে তাতে ছোট করে কেটে নেওয়া ভুঁড়ি নিতে হবে। ভুঁড়ি রান্নার আগে অবশ্যই খেয়াল করতে হবে ভালোভাবে পরিষ্কার হয়েছে কি না। এবার এতে কাঁচামরিচ, আস্ত রসুনের কোয়া, গরমমসলা ও টালা জিরাগুঁড়া ছাড়া তেলসহ একে একে সব কটি উপকরণ দিয়ে ভুঁড়ির সঙ্গে মিশিয়ে মেখে নিতে হবে। পানি দিতে হবে। এরপর ঢাকনাসহ কড়াই চুলায় বসিয়ে দিতে হবে। পানি শুকিয়ে না আসা পর্যন্ত ভুঁড়ি মাঝারি তাপে রান্না করতে হবে। কিছুক্ষণ পরপর ঢাকনা খুলে চামচ বা হাতা দিয়ে ভুঁড়ি উল্টেপাল্টে নেড়ে দিতে হবে।পানি শুকিয়ে এলে স্বাদ অনুযায়ী লবণ দিতে হবে। এবারে কয়েকটি কাঁচামরিচ টুকরা করে কেটে দিয়ে দিতে হবে এবং ভুঁড়ি অনবরত নেড়ে দিতে হবে, যেন কড়াইয়ের তলায় লেগে না যায়। এ পর্যায়ে চুলার আঁচ কমিয়ে দিতে হবে। আস্ত রসুনের কোয়া দিয়ে দিতে হবে এবং চুলার আঁচ কমিয়ে ভালোভাবে ভুনা ভুনা না হওয়া পর্যন্ত একটু পরপর নেড়েচেড়ে দিতে হবে। ভুঁড়ি যখন বেশ ভুনা হয়ে যাবে, তখন গরমমসলা ও জিরার গুঁড়া ছড়িয়ে দিতে হবে।এবারে নেড়েচেড়ে নামিয়ে পরিবেশনের পালা। ভাত, রুটি, পরোটা সবকিছুর সঙ্গেই দারুণ এই ভুঁড়ি ভুনা। অনেকেই আছেন, একেবারে ভাজা ভাজা করে ভুঁড়ি খেতে পছন্দ করেন। তেমন খেতে চাইলে চুলায় এই ভুঁড়ি ভুনা হালকা আঁচে রাখতে হবে যতক্ষণ না ঝোল একেবারে শুকিয়ে যায়।
এই গরমে ভারী বা ভাজাপোড়া খাবারে অরুচি সবারই। বোনলেস বিফ দিয়ে ঝটপট রংচঙে রামেন তৈরি করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেওয়া যায় খুব সহজে।
উপকরণ
টেন্ডার লয়েন বা চাপের অংশের গরুর মাংস পাতলা লম্বা স্লাইস এক কাপ
ইনস্ট্যান্ট রামেন ১ প্যাকেট বা ফ্রেশ এগ নুডলস এক কাপ
সয়াসস ৩ চা-চামচ
অয়েস্টারসস ১ চা-চামচ
স্টক কিউব- অর্ধেকটি
চিলিফ্লেক্স ১ চা-চামচ
চিলিসস ১ চা-চামচ
তিলের তেল ১ চা-চামচ
আদা ঝুরি করে কাটা আধা চা-চামচ
পানি ৪ কাপ
লাল ও হলুদ ক্যাপসিকামকুচি ৩ টেবিল চামচ
ডিম সেদ্ধ ২টি
গোলমরিচের গুঁড়া আধা চা–চামচ
লবণ পরিমাণমতো
সাজানোর জন্য সাদা তিল
প্রণালি
৪ কাপ পানি হাঁড়িতে নিয়ে ফুটে উঠলে তাতে সয়াসস, অয়েস্টারসস, স্টক কিউব, চিলিসস, আদা ঝুরি দিয়ে ভালোভাবে ফুটিয়ে নিতে হবে। উচ্চ তাপে ফুটতে থাকা স্যুপে বিফ স্লাইসগুলো দিয়ে ৫-৭ মিনিট পরে তুলে নিতে হবে। স্যুপ কমে ২ কাপের কাছাকাছি হয়ে আসবে। সেদ্ধ বিফ ১ চা-চামচ সয়াসস আর অল্প চিলিফ্লেক্স দিয়ে ভেজে নিতে হবে৷আরেকটি প্যানে পানি ফুটিয়ে নুডলস সেদ্ধ করে ঝরিয়ে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, যেন নরম হয়ে না যায়। বাটিতে নুডলস, তার ওপরে অর্ধেক করে কেটে নেওয়া সিদ্ধ ডিম, ক্যাপসিকাম আর বিফের স্লাইস নিয়ে ওপর থেকে স্যুপ ঢেলে নিতে হবে।গোলমরিচের গুঁড়া, চিলিফ্লেক্স, সাদা তিল ছড়িয়ে গরম গরম পরিবেশন করতে হবে।এতে মাশরুম, পেঁয়াজকলি, পাতলা করে কাটা গাজর, বাঁধাকপি ইত্যাদিও দেওয়া যায়। ঝাল খেতে চাইলে চিলিফ্লেক্স ও চিলিসসের পরিমাণ বাড়ানো যায়। চপস্টিকস সহযোগে পরিবেশন করলে বেশি মানাবে।