নাদিমা জাহান
ন্যাড়া বেলতলায় কয়বার যায়, সে প্রশ্নের উত্তর আজও জানা হলো না। তবে বেলের বহুবিধ স্বাস্থ্যগুণ, অনন্য স্বাদ ও অন্য রকম এক সৌরভ নিয়ে কোনোই প্রশ্ন নেই। বিশেষত এই গ্রীষ্মের দাবদাহে এক গ্লাস হিমশীতল বেলের শরবত মনপ্রাণ জুড়িয়ে দেয়। আর নানা ঔষধি গুণের বদৌলতে স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও এর জুড়ি মেলা ভার।
শুনতে অবাক লাগলেও, এ উপমহাদেশের বাইরে আমাদের মতো বেল খাওয়ার প্রচলন একেবারেই নেই। বিশেষ করে আমাদের এই বাঙালিদের মধ্যেই এর এতটা সামাজিক ও ধর্মীয় গুরুত্ব রয়েছে। বেলের শরবতের মোহনীয় সুবাস আর অসাধারণ সুমিষ্ট স্বাদ এই ঋতুতে ইফতারেও একেবারে বাজিমাত করে দেয়। আবার নববর্ষের বাঙালিয়ানারও প্রতীক হতে পারে বেলের শরবত। লেবুর দরদাম নিয়ে হাহুতাশ না করে ইফতারে অত্যন্ত উপাদেয় ও তৃপ্তিদায়ক বেলের শরবত করা যেতেই পারে মাসজুড়ে। এর পুষ্টিগুণগুলো একনজরে দেখে নেওয়া যাক।
বেল হজমে সহায়ক। এতে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণ আঁশ ও ভিটামিন সি। শরীরকে ঠান্ডা রেখে গরমে হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচাতে পারে বেল। বেল কোষ্ঠ পরিষ্কার রাখতে পারে। লবণ ও গোলমরিচসহযোগে বেল, বিশেষত কাঁচা বেল শুকিয়ে বানানো বেলের শুঁঠ খেলে সব ধরনের পেটের সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। আলসার ও পাইলসের সমস্যায় বেল খেলে উপকার পাওয়া যায়। পাকা মিষ্টি বেলে শর্করার পরিমাণ যথেষ্ট।
তাই বেলের শরবত পান করলে গরমে ক্লান্ত, বিধ্বস্ত হওয়ার পর শক্তি পুনরুদ্ধার করা যায়। এতে থিয়ামিন ও রিবোফ্লাভিনও আছে যথেষ্ট পরিমাণে। বেলের ডিটক্সিফায়িং প্রভাব থাকায় নিয়মিত বেলের শরবত পান করলে অন্ত্রের স্বাস্থ্য সুনিশ্চিত হয়, ভালো থাকে কিডনি ও লিভার। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও এর পরীক্ষিত উপকারী প্রভাব রয়েছে বলে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে।
বেলের শরবত কতটা সুস্বাদু হবে, তা নির্ভর করে বেলের গুণাগুণের ওপর। গাছপাকা বেল ফাটালেই এক মনমাতানো সৌরভ ছড়িয়ে পড়ে। নতুন বছরের প্রথম দিনের ইফতারে থাকুক বেলের শরবত।
মাঝারি সাইজের বেল ২টি
চিনি পরিমাণমতো
পানি পরিমাণমতো
প্রথমে বেল থেকে শাঁস বের করে নিতে হবে। এরপর প্রথমেই মিহি জালিদার চালনিতে বেলের শাঁস অল্প অল্প করে পানি দিয়ে চেলে নিতে হবে।
এবারে পরিমাণমতো চিনি ও পানি বা ইচ্ছে হলে বরফ দিয়ে খুব ভালো করে ব্লেন্ডার বা ডাল ঘুটনি দিয়ে মিশিয়ে নিতে হবে। তাহলেই তৈরি হয়ে গেল বেলের শরবত।