ব্যাংককের খাও সান রোডের আমেজ আর থাই খাবারের স্বাদ পেতে এই রেস্তোরাঁয় এরই মধ্যে আনাগোনা শুরু করে দিয়েছেন নগরীর রসনাপ্রিয়রা। পরিবেশবান্ধব প্রয়াস এই রেস্তোরাঁর অন্যতম বৈশিষ্ট্যও।
রিফাত পারভীন
ভ্রমণ ও ভোজনপ্রেমীদের কাছে জনপ্রিয় নাম খাও সান রোড। থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের এই সড়ক ব্যাকপ্যাকার ঘেটো বা মহল্লা হিসেবেও পরিচিত। কারণ, খাও সান সড়কজুড়ে ট্যুরিস্টদের জন্য রয়েছে সাশ্রয়ী পথখাবার ও থাকার ব্যবস্থা। তাই চাইলেই এখানে দিব্যি কম টাকায় কাটিতে দেওয়া যায় ভ্রমণের দিনগুলো।
এবার খাও সান সড়ক পাওয়া যাবে ঢাকাতেই। শুনে কিছুটা অবাক লাগতে পারে। তবে হালে রেস্টুরেন্টপাড়া হিসেবে পরিচিতি পাওয়া ধানমন্ডিতে মাসখানেক আগে যাত্রা শুরু করেছ খাও সান রেস্তোরাঁ। অথেনটিক থাই খাবারের ভক্তদের কাছে বাড়ছে এর জনপ্রিয়তা। এ ছাড়া সাজসজ্জায় মূল খাও সান রোডের আমেজ থাকায় বিভিন্ন ফুড রিভিউ গ্রুপে চলছে ইতিবাচক আলোচনা।
খাও সান শব্দটির বাংলা হলো একধরনের মোটা চাল। ৪০ বছর আগেও ব্যাংককের সব থেকে বড় চালবাজার ছিল এটি। আর এখন ট্যুরিস্টদের কাছে ছোট সড়কটি জনপ্রিয় মজাদার স্ট্রিট ফুডের জন্য। তবে খাও সান রেস্টুরেন্টে থাই খাবার ছাড়াও আছে কিছু ফিউশন খাবারও।
খাও সান রেস্টুরেন্টে প্রায় ৩৫ রকমের খাবার পাচ্ছেন রসনাপ্রিয়রা। অ্যাপেটাইজার, ডেজার্ট, মেইন কোর্স থাকছে সব বয়সীদের জন্য। অর্ডারে নেই কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। যেকোনো বিভাগ থেকে চাইলে একটি খাবারও অতিথিরা উপভোগ করতে পারবেন।
তিন রকমের থাই স্যুপ, তিন রকম থাই ও ফিউশনধর্মী সালাদ ও নুডলস, সাত রকম অ্যাপিটাইজার, ছয়টি স্বাদের চিকেন, পাঁচ রকম সি ফুড, চার ধরনের বিফ, রাইস, ডেজার্ট ও পানীয়তে সাজানো হয়েছে খাও সানের মেনু। খাও সই, রেড কারি, গ্রিন কারি, টম খা গাই স্যুপে পাওয়া যাবে অথেনটিক থাই স্বাদ। ১৬০ টাকা থেকে ৫৯০ টাকার মধ্যে উপভোগ করা যাবে খাও সানের থাই খাবার।
ব্যাংককের খাও সান রোডের আদলে রেস্টুরেন্টে রাখা হয়েছে ক্যাজুয়াল লুক; যাকে বলা হয় ফাইন বা ফাস্ট ক্যাজুয়াল ডাইনিং। তাই বসার জন্য সোফার বদলে কাঠের চেয়ার, বেঞ্চে সাজানো হয়েছে রেস্টুরেন্ট।
২ হাজার ২০০ স্কয়ার ফিটের রেস্টুরেন্টের দেয়ালজুড়ে দেখা যাবে খাও সান রোডের দৃশ্য; যা ব্যাংককের সড়কে বসেই থাই খাবার উপভোগের অনুভূতি দেবে। এ ছাড়া দেয়ালে উজ্জ্বল ও ভাইব্র্যান্ট রং সহজেই নজর কাড়ে। রেস্টুরেন্টের লোগোতে হাতির অবয়ব ব্যবহারের মজার তথ্য দিলেন রেস্টুরেন্টের অন্যতম উদ্যোক্তা সাইয়িদ সামিন শাহারিয়ার। খাবারের খোঁজে জঙ্গল ছেড়ে খাও সানের সড়কে চলে এসেছে হাতি। বিষয়টি বোঝাতেই লোগোতে হাতির উপস্থিতি রাখা হয়েছে।
কাচে ঘেরা রেস্টুরেন্টে একসঙ্গে ৬০ জন অতিথির স্থানসংকুলান হবে। এখানকার ওপেন কিচেনে চাইলে নিজের খাবার তৈরিও দেখা যাবে।
অতিথিদের প্রকৃতির আমেজ দিতে রেস্টুরেন্টে রয়েছে অন্তত ৪৫ ধরনের ইনডোর গাছ। সাইয়িদ সামিন শাহারিয়ার জানান, কেবল ব্যবসায়িক মুনাফা নয়, প্রকৃতির কথা ভেবে পরিবেশবান্ধব মডেলে রেস্টুরেন্টটি ডিজাইন করার চেষ্টা চলছে।
মাঞ্চ স্টেশন নামেও আমাদের একটি রেস্টুরেন্ট রয়েছে। যেটা ইতিমধ্যেই পুরোপুরি ইকো-ফ্রেন্ডলি মডেলে পরিবর্তন করা হয়েছে। খাও সান রেস্টুরেন্টের জন্যও আমরা ভিন্ন কিছু ভেবেছি। খাবার তৈরির জন্য পুদিনাপাতা, ধনেপাতা বা কাঁচা মরিচের মতো উপাদানগুলো আমরা রেস্টুরেন্টের মধ্যেই চাষ করার চেষ্টা করছি, যেন কিছুটা হলেও আমরা নিজেরাই উৎপাদন করতে পারি।
ছবি: খাও সান