কমলার সৌরভে
শেয়ার করুন
ফলো করুন

দেশি-বিদেশি নানা জাতের কমলালেবু এখন সারা বছরই মেলে আমাদের দেশে। কিন্তু দেশি জাতের টক-মিষ্টি রসে ভরপুর কমলার ফ্লেভার একেবারেই আলাদা।

শীত এবার আগেই বিদায় নিয়েছে। তবে বাজারে, ফেরিওয়ালার ঝুড়িতে আর রাস্তার মোড়ের ভ্যানে কমলালেবুর জমজমাট কেনাবেচা হচ্ছে এখনো।

বিজ্ঞাপন

টক-মিষ্টি আর রসাল সিট্রাস–জাতীয় ফল কমলা। এই কমলালেবুর আবেদন সারা বিশ্বেই অপ্রতিদ্বন্দ্বী পর্যায়ের। পৃথিবীতে এমন দেশ খুঁজে পাওয়া কঠিন, যেখানে কমলা পাওয়া যায় না। আর জাতভেদে অরেঞ্জ, ক্লেমেন্টাইন, ম্যান্ডারিন, সাতসুমা এমন বিভিন্ন নাম রয়েছে এর। ভেতরে টুকটুকে লাল ব্লাড অরেঞ্জ পাওয়া যায় অনেক দেশেই। তবে আমাদের দেশের ছাতকসহ সিলেট অঞ্চলে যুগ যুগ ধরে জন্মানো হলদে-সবুজ খোসার টক-মিষ্টি কমলালেবুর মজাই আলাদা।

জ্বর-জারি আর সর্দি-কাশির ফলে অরুচি হলে কমলা এক অব্যর্থ পথ্য। এমনিতে কোয়া ছাড়িয়ে বা খোসা ছিলে পাতলা স্লাইস করে তো বটেই, যেকোনো সালাদ বা ফলের চাটে প্রাণ আনে কমলালেবু।

বিজ্ঞাপন

কমলার রস বোধ হয় ফলের রসের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় বিশ্বজুড়ে। বোতল, গ্যালন আর কার্টনে অরেঞ্জ জুস পাওয়া যায় সব জায়গায়। কমলার ফ্লেভারে অরেঞ্জ কেক, চকলেট, টার্ট, জ্যাম-জেলি বা মার্মালেড, ক্যান্ডি, পুডিংসহ হাজারো রকমের ডেজার্ট বানানো হয়। কমলার রসের আইসললি, জেলাটো বা সরবেজাতীয় আইসক্রিমও সমান জনপ্রিয়। আমাদের দেশে কমলা ব্যবহৃত হয় জর্দা রান্না করতে। আবার সেভরি পদেও কমলার জুড়ি নেই। চাইনিজ জনপ্রিয় পদ অরেঞ্জ চিকেন যেমন জিবে জল আনে, তেমনি দেশি কমলা-কাতলা আর কই-কমলা স্বাদকোরকে ঝড় তুলতে পারে।

কমলার খোসারও রয়েছে বহুবিধ ব্যবহার। পরিপক্ব কমলার খোসা রোদে শুকিয়ে কুচি করে ব্যবহৃত হয় জর্দা বা অন্যান্য মিষ্টান্নে। পানের সঙ্গেও খাওয়া হয়। সিলেট অঞ্চলে কমলার ‘বাকলর তরকারি’ বা খোসা রান্না করা হয় ছোট মাছ দিয়ে।

আচারও করা হয় এই খোসা দিয়ে। তিতা-মিঠা ফ্লেভার দিতে মার্মালেডে কমলার খোসা দেওয়া হয়। আবার তাজা কমলার খোসার মিহি ঝুরি বা রাইন্ড ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন ডেজার্ট আর সেভরি পদে।

কমলার স্বাদে স্বাদকোরক উদ্বেল হয়, সৌরভ ঘ্রাণেন্দ্রিয়ে আনে সতেজতা। আবার ভিটামিন সি আর ফোলেটের দারুণ উৎস এই ফল। তাই নানাভাবে কমলা রাখা যায় আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় নিঃসন্দেহে।

প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২৩, ১৬: ০০
বিজ্ঞাপন