বিভিন্ন খাবার ত্বককে সুন্দর করে, খাবার মন ভালো করে, খাবার ওজনও কমায়। তবে খাবার কি ভালোবাসা বাড়াতে পারে? আশ্চর্যজনক শোনালেও এটিই সত্য যে কিছু খাবারের মধ্যে এই গুণাগুণ রয়েছে। ইংরেজিতে এসব খাবারকে বলা হয় আফ্রোডিজিয়াক। গ্রিক ভালোবাসার দেবী আফ্রোদিতির নাম থেকে এই নামকরণ করা হয়েছে। এবার দেহমনে ভালোবাসার রসায়নে প্রভাব ফেলতে পারে এমন কিছু খাবারের কথা জেনে নেওয়া যাক।
১. চকলেট
বিশ্বজুড়ে ভালোবাসা দিবসে প্রিয়জনকে চকলেট উপহার দেওয়ার রীতি বহুদিনের পুরোনো। চকলেট, বিশেষত ডার্ক চকলেটে থাকা ট্রিপটোফ্যান দেহে সেরোটোনিন বাড়িয়ে দেয়, যা মন ভালো করতে ও আনন্দের অনুভূতি দিতে সাহায্য করে। এনাডামাইড ও ফিনাইলথাইলামিন মনে আকর্ষণ ও সুখের অনুভূতি জাগায়। তাই ভালোবাসার মানুষটিকে ছোট্ট একটি ফিতে মোড়ানো বাক্সে চকলেটের রূপে ভালোবাসা উপহার দেওয়া যেতেই পারে।
২. কাঠবাদাম
প্রাচীন যুগের কবিদের মতে, কাঠবাদামের সুগন্ধ নারীদের মুগ্ধ করে। আমরা অবশ্য কবিদের ভাবুক কথার চেয়ে বিজ্ঞানেই বেশি বিশ্বাসী। বিজ্ঞান অনুযায়ী, কাঠবাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম ও ফাইবার। এ ছাড়া রয়েছে নাইট্রিক অ্যাসিড, যা রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে, শক্তি বাড়ায় ও স্নায়ুকে সক্রিয় করে। কাঠবাদামের এসব গুণের জন্য প্রাচীনকালে একে ফার্টিলিটি বা উৎপাদনশীলতার প্রতীক হিসেবেও ব্যবহার করা হতো। বাজারে পাওয়া সল্টেড বা রোস্টেড কাঠবাদাম উপহার দিতে না চাইলে, বাসায় চকলেট ও কাঠবাদাম দিয়ে সহজেই কিছু বানিয়ে নিতে পারেন। সাহায্যের জন্য ইউটিউবে অসংখ্য রেসিপি তো রয়েছেই।
৩. মধু
পরিচিত সব খাবারের নাম শুনে নিশ্চয়ই চমকে উঠছেন? মধুতে রয়েছে বোরন, যা নারীদের ইস্ট্রোজেন হরমোনকে উদ্দীপিত করে। মধুতে থাকা ভিটামিন বি, পুরুষদের টেস্টোটেরন হরমোনের মাত্রায় বাড়ায় বলেও ইদানীং বেশ কিছু গবেষণায় উঠে এসেছে। বাড়িতে প্যানকেক, ওয়াফল বা সিনামন রোল বানিয়ে সঙ্গে বেশ খানিকটা মধু নিয়ে নিতে পারেন। খাবার তো মিষ্টি হবেই, মিষ্টি হবে সম্পর্কও।
৪. কলা
কলা নিঃসন্দেহে বেশ স্বাস্থ্যকর খাবার। কলা যে একটি আফ্রোডিজিয়াক খাবার, তা কি জানতেন? কলা পটাসিয়াম–সমৃদ্ধ, যা পেশিশক্তি বাড়াতে ভূমিকা রাখে। ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন-বিতে পরিপূর্ণ এই ফলে থাকা বিভিন্ন খনিজ ও এনজাইম পুরুষদের জন্য শক্তিবর্ধক হিসেবে কাজ করে।
৫. আনার
লাভ অ্যাপেল নামে পরিচিত, এই ফলটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। এগুলো রক্তপ্রবাহ এবং আমাদের যৌনাঙ্গের সংবেদনশীলতা বাড়ায়। দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ মাত্রার অ্যান্টি অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করলে ক্যানসার এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমে।
৬. মরিচ
খাবারে একটুখানি ঝাল শরীরের তাপমাত্রা বাড়াতে পারে। একই সঙ্গে বাড়ায় হৃদ্স্পন্দন ও রক্তপ্রবাহ। স্নায়ু উদ্দীপনা বাড়াতেও ঝালের জুড়ি নেই। এটি এন্ডোরফিন নামক হরমোনের প্রবাহও বৃদ্ধি করে, যা আমাদের মন ভালো করতে সাহায্য করে। তাই ভালোবাসা দিবসে নিজ হাতে রান্না করতে গিয়ে খাবারে একটু বেশি ঝাল দিয়ে ফেললেও ঘাবড়াবেন না। শেষটা সুন্দরও হতে পারে।
সূত্র: ভেরি ওয়েল ফিট
ছবি: পেকজেলস ডট কম