সারা দিনের দৌড়ঝাঁপে শরীরের মতো পা-ও চায় একটু আরাম। পুরো শরীরকে বহন করে নিয়ে চলাটা সহজ কথা নয়। পায়ের আরামে অনেক ধরনের ব্যায়াম, মালিশ ও অন্যান্য জিনিসের কথা বলেন সবাই। তবে যে জিনিসটির কথা একেবারেই ভোলা যায় না, তা হচ্ছে, এক জোড়া আরামদায়ক জুতা। ২০২৫ সালে বাজারে আসা সেরা হাঁটার ৩০টি জুতার মধ্যে থেকে পরীক্ষার মাধ্যমে বেছে নেওয়া হয়েছে এই সেরা ১০ জুতা।
এই তালিকায় শীর্ষস্থানে আছে হোকা ট্রান্সপোর্ট। এ ছাড়া দেখা যাচ্ছে ব্রুকস, অন ক্লাউড, নাইকি প্রভৃতি বিখ্যাত ব্র্যান্ডের সেরা মডেলগুলো, যেগুলো প্রতিদিনের হাঁটা, দৌড়ানো বা কর্মস্থলে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে কাজ করার জন্য আদর্শ।
হোকা ট্রান্সপোর্ট জুতাকে সেরা হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে নিরীক্ষার ভিত্তিতে। নিরীক্ষায় এটি নারী ও পুরুষ সবার কাছেই প্রশংসা কুড়িয়েছে। এটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে পায়ের স্বাভাবিক ভঙ্গিমা বজায় থাকে এবং দীর্ঘক্ষণ হাঁটার পরও আরাম দেয়। আরেকটি চমৎকার মডেল হলো আলট্রা এক্সপেরিয়েন্স ফ্লো। এর প্রশস্ত টো-বক্স পায়ের আঙুলগুলোকে সহজে ছড়াতে দেয়, ফলে স্বস্তিদায়ক অনুভূতি পাওয়া যায়। এটি এমন একধরনের জুতা, যা কাজ হোক বা হাঁটাচলা—দুই কাজেই সমান আরাম দেয়।
হাঁটার সেরা জুতা বেছে নেওয়ার এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুধু আরামের ওপর ভিত্তি করে হয়নি। প্রতিটি জুতার গঠনগত সমর্থন, ট্র্যাকশন, ওজন ও স্থায়িত্বও উঠে এসেছে বিবেচনায়। বিশেষত যাঁদের অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয় বা প্রতিদিন অনেক বেশি হাঁটতে হয়, তাঁদের জন্য উপযুক্ত জুতা নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেমন যাঁরা দিনে অনেকক্ষণ হাঁটেন, তাঁদের চাই কুশনিং বা নরম ভিত্তিযুক্ত জুতা। জুতাগুলো তাঁদের পায়ে একধরনের সমর্থনকারী শক্তি হিসেবে কাজ করে, যা পা’কে সারা দিনের ঝক্কি থেকে বাঁচায়। এই দিক থেকে হোকা ও ব্রুকসের কিছু নির্দিষ্ট মডেল নিরীক্ষায় সেরা হিসেবে বিবেচিত হয়। কারণ, জুতাগুলো একজন ব্যবহারকারীকে এসব সুবিধা দিচ্ছে।
পাশাপাশি অন ক্লাউডের কিছু মডেল আছে, যেগুলোর হ্যান্ডস ফ্রি ডিজাইন করা হয়েছে। এসব জুতা সহজে পরা ও খোলা যায়। এটি বিশেষত নারীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। অন্যদিকে নাইকির কিছু জুতা রয়েছে, যাঁরা বেশি হালকা ও স্লিম প্রোফাইল পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য আদর্শ। গবেষণায় দেখা গেছে, উপযুক্ত ট্র্যাকশনসহ জুতা হাঁটার সময় পায়ের চাপ কমায় এবং একই ধরনের সমান্তরাল পায়ের আকারের ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ ধরনের সাপোর্টযুক্ত জুতা যেমন ব্রুকস অ্যাডিক্ট ও আলট্রা ফ্লো বেশ কার্যকর।
নারীদের জুতা ও পুরুষদের আরামদায়ক জুতার মধ্যে আবার ভিন্নতা আছে। নারীরা ইদানীং বিশেষভাবে পছন্দ করছেন স্কেচারস ও স্নিকারস। বাংলাদেশের নারীদের শাড়ির সঙ্গেও এই দুই ধরনের জুতা পরতে দেখা যায়। হাঁটার সময় এই জুতা বেশ আরাম দেয়। স্কেচারস ‘গো ওয়াক জয়’ এমন একটি জুতা, যা এই তালিকায় নাম লিখিয়েছে।
যাঁরা পেশাদার রানার নন, তবে কাছাকাছি হেঁটে ঘুরতে পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য এটি সাধ্যের মধ্যে একটি বেশ উপযোগী জুতা। এ ছাড়া কুশন জুতার মধ্যে নারীদের জন্য এ তালিকায় রাখা হয়েছে হোকার ‘হোকা ক্লিফটন টেন’ জুতাটি। এটি সারা দিন হেঁটে বেড়ানোর জন্য কাজে দেয়। পুরুষদের রোজকার হাঁটার জুতা হিসেবে বাজেটের মধ্যে রাখা আছে ‘'আন্ডার আর্মার চার্জড অ্যাসার্ট টেন’।
ভালো হাঁটার জুতা শুধু আরামের জন্যই নয়, এটি দৈনন্দিন জীবনে অনেক কিছুই সহজ করে তুলতে পারে। ভালো জুতা পায়ের ওপর চাপ কমায়, হাঁটার অভিজ্ঞতাকে সহজ ও আনন্দদায়ক করে তোলে এবং দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যা, যেমন পায়ে ব্যথা, গাঁটে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। তাই উপযোগী জুতা বেছে নেওয়াটা খুবই জরুরি।
ছবি: ইন্সটাগ্রাম, পেকজেলসডটকম ও ব্র্যান্ডের ওয়েবসাইট