যেকোনো পোশাকের ক্ষেত্রে সবার আগে চলে আসে আরাম ও স্বস্তির ব্যাপারটি। এবারে গ্রীষ্মের শুরু থেকেই গরমটা একটু বেশি। আর এখন শরৎকাল হলেও ভ্যাপসাটাও আছে। তাই ব্লাউজ ট্রেন্ডে স্থান পেয়েছে ঢিলেঢালা ক্রপ টপ ঘরানার ও স্লিভলেস ব্লাউজ।
এ ছাড়া ব্লাউজের হাতা ও গলার কাটিংয়ে বৈচিত্র্য দেখা যাচ্ছে সবচেয়ে বেশি। মোটিফের ক্ষেত্রে দেশি–বিদেশি দুটিই রয়েছে। চেষ্টা করা হচ্ছে ব্লাউজগুলোয় প্রকৃতির রং নিয়ে কাজ করতে।
এ ছাড়া ব্লাউজের আরেকটি ট্রেন্ড চলছে, সেটি হলো ব্লাউজ কাম ক্রপ টপ। অর্থাৎ ব্লাউজকে ঠিক ব্লাউজের মতো না পরে টপস হিসেবে শাড়ির সঙ্গে পরা যায়। এতে ব্লাউজটিই আরও বেশি হাইলাইটেড হয়। এ ছাড়া ব্লাউজে লেস ও কুর্শিকাটার ব্যবহার দেখা যাচ্ছে। পুরো ব্লাউজ খুবই সিম্পল, কিন্তু গলায় কুর্শিকাটার কাজ বসানো এই ব্লাউজ পরলে গলায় আলাদা করে কোনো গয়নাও পরতে হবে না।
যেহেতু আবহাওয়ার গরমের আধিপত্য রয়েছে, তাই ব্লাউজের ফেব্রিকের ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহার হচ্ছে সুতি। এ ছাড়া রয়েছে এন্ডি কটন, ভারমিলিয়ন সিল্ক, খাদি ইত্যাদি।
ডিজাইনে শিবুরি, টাইডাই ও কলমকারির ব্যবহার চোখে পড়ার মতো। নানা রঙের কলমকারি কাপড় ব্যবহার করা হচ্ছে ব্লাউজের হাতায়। বডিতে থাকছে হ্যান্ডলুম। কিছু ব্লাউজ রয়েছে এক্সক্লুসিভ রেঞ্জের। সেগুলোর বডিতে এন্ডি সিল্কের আর হাতাটা প্যাচওয়ার্কের।
ভিনটেজ ও ট্র্যাডিশনাল প্রিন্ট ব্লাউজগুলোয় চোখে পড়ার মতো।
ফ্যাশন সব সময় পরিবর্তনশীল। আশি কিংবা নব্বইয়ের দশকে যে ধরনের কাটিংগুলো ছিল ব্লাউজে, সেগুলো আবারও নতুনভাবে ফিরে এসেছে। গলা ও হাতা নিয়ে সবচেয়ে বেশি কাজ করেছেন ডিজাইনাররা।
এখন আর কেউ সাদামাটা ব্লাউজ পরতে পছন্দ করেন না। তাই হাতার ক্ষেত্রে নানা ভ্যারিয়েশন লক্ষ করা গেছে। যেমন ম্যাগিহাতা, কনুইঢাকা হাতা, পাফি স্লিভের ঘটিহাতা, কনুইয়ের নিচে ফ্লেয়ার করা বা বেলবটম হাতা। ক্রপ টপ ব্লাউজের ক্ষেত্রে হাতাটা গোল করে পুরো বডিটার সঙ্গে একদম মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। গলার কাটিংয়ের ক্ষেত্রে কিছু ইউ আকৃতি, কিছু আবার নৌকা ধাঁচের কাটিং রয়েছে।
আবহাওয়ার কথা চিন্তা করে ক্রপ টপ ব্লাউজে একটু ঢিলেঢালা কাটিংয়ের ব্যবহারও লক্ষ করা যায়। এ ছাড়া চৌকো গলা, ওভাল শেপ, ঢেউখেলানো বায়াস কাট, হাইনেক বেশ ট্রেন্ডি এখন।
ব্লাউজ এমনই হওয়া উচিত, যেন দৃষ্টিকটু না হয় আর পরতেও আরাম লাগে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ফিটিংস। ব্লাউজ কেনা হোক কিংবা বানানো, সঠিক মাপ নেওয়া জরুরি। খুব বেশি আঁটসাঁট কিংবা এমন কোনো কাটিং যেটা শরীরের সঙ্গে মানানসই নয়, এমন যেন না হয় সেভাবে ব্লাউজ নির্বাচন করতে হবে।
শাড়ির সঙ্গে ব্লাউজ একেবারে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যদি শাড়িতে অনেক বেশি প্রিন্ট বা অনেক বেশি কারুকাজ থাকে, তাহলে ব্লাউজ একেবারেই সাদামাটা বা একরঙা পরা উচিত। আবার জমকালো ব্লাউজের সঙ্গে একরঙা চিকন পাড়ের শাড়ি ভালো লাগবে। জ্যামিতিক নকশা, ফ্লোরাল প্রিন্ট কিংবা নানা ধরনের মোটিফের ব্লাউজের সঙ্গে একরঙা শাড়ি খুব সুন্দরভাবে ফুটে ওঠে। সে ক্ষেত্রে ব্লাউজটিও প্রাধান্য পায়। এভাবে বৈপরীত্য ও সামঞ্জস্য রেখে পোশাক পরলে সুন্দর লাগে দেখতে।শাড়ির পাড়ে যদি ফ্রিল নকশা থাকে, তাহলে ব্লাউজের বর্ডারেও ছোট ফ্রিলের নকশা রাখলে ভালো লাগবে।
যেকোনো পোশাকেরই যত্ন প্রয়োজন। ব্লাউজ শখ করে কিনে বা বানিয়ে পরার পর অযত্নে ফেলে রাখা উচিত নয়। ছোট্ট কিছু টিপস তাই মেনে চললে প্রিয় ব্লাউজগুলোও যত্নে থাকবে। ব্লাউজ ব্যবহারের পর বাতাসে মেলে দেওয়া উচিত। ব্লাউজে ভারী কাজ কিংবা নকশা থাকলে নিজে না ধুয়ে ড্রাইক্লিন করতে দিতে হবে। সুতির তৈরি ব্লাউজ ভাঁজ করে রাখুন, কিন্তু অন্যান্য ফেব্রিকের ব্লাউজ হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে রাখলে ভালো থাকবে।