ভূমিসুতার এবারের পূজা সংগ্রহ পরম্পরা সূত্র
শেয়ার করুন
ফলো করুন

পরম্পরা সূত্র। নামটিই বলে দেয় এতে বংশানুক্রমিক ইতিহাস জড়িয়ে আছে। এই ইতিহাস দেশি শাড়ির। সেলাইবিহীন বারো হাত দৈর্ঘ্যের এই কাপড় ইতিহাসের কথা যেমন বলে, একই সঙ্গে কথা বলে আধুনিকতা ও ফ্যাশনের। ভূমিসুতা প্রকৃতির উপাদানে এই তিনটি দিক ফুটিয়ে তোলে শাড়িতে। তাদের পূজা কালেকশন তাই শিল্পকলা, ঐতিহ্য ও আধুনিক রুচির এক অপূর্ব মিশেল। এতে তারা দেশীয় তাঁতশিল্পের ঐতিহ্য এবং আধুনিক ডিজাইনকে মিলিয়েছেন এক কাপড়ে। তৈরি হয়েছে এবারের পূজা সংগ্রহ।

জরির পাড়ে উৎসবের আমেজ
জরির পাড়ে উৎসবের আমেজ

উদ্যোগটির স্বত্বাধিকারী প্রিয়াংকা দাশ জানান, ‘ভূমিসুতা মূলত দেশীয় তাঁতে বোনা শাড়ি নিয়ে কাজ করে। এই শাড়ির নকশার মধ্যে তাঁতের বুনন, কাঁথাফোঁড়ের ব্যবহার এবং নকশা পাড়ের রঙের ব্যবহার করা হয়েছে; যা আমাদের ঐতিহ্যকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলে।’

বিজ্ঞাপন

ভূমিসুতার শাড়ির আরেকটি বিশেষত্ব এর পাড়। উপলক্ষভেদে পাড়ের নকশা হয় আলাদা। উৎসবের শাড়ির পাড় হয় জমকালো। এবারের পূজার শাড়ির পাড়ে তাই থাকছে জরি সুতার কাজ। এই শাড়ির নকশা শুধু ঐতিহ্যের প্রতীকী রূপ হিসেবে জরির কাজ রেখেছে তা নয়, বরং আধুনিক ফ্যাশনসচেতন তরুণীদের কাছেও জরি বা গ্লিটার একধরনের ক্রেজ। সে দিকটিও মনে রেখেছেন উদ্যোগের কর্ণধার ও ডিজাইনার প্রিয়াংকা। তাঁর মতে, তিনি মূলত আধুনিক রুচির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা একটি নিখুঁত মিশেল তৈরি করতে চেয়েছেন।

লালসাদায় ঐতিহ্য
লালসাদায় ঐতিহ্য

ভূমিসুতা মানেই বাক্সবন্দী ভাবনা থেকে বেরিয়ে নতুন চমক। প্রতিবারের মতো এবারের কালেকশনেও তাই আছে ব্যতিক্রমী কিছু। প্যাচওয়ার্কের মাধ্যমে শাড়ির নকশায় বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করা হয়েছে। প্যাচওয়ার্কের ধারণা পুরোনো হলেও এই শাড়িগুলোতে পেয়েছে নতুন রূপ। বিভিন্ন আঙ্গিকে প্রতিটি শাড়ির ডিজাইন আলাদা ও সৃজনশীল রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। যাতে তা একদিকে যেমন ঐতিহ্যবাহী মনে হয়, তেমনি আধুনিকতার ছোঁয়াও পায়।

বিজ্ঞাপন

পূজার সময়টা ভ্যাপসা গরম দিয়ে শুরু হবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এ ছাড়া উৎসবের জন্য সব সময় আরামদায়ক পোশাকই সবার পছন্ন্দ। তবে সেই সঙ্গে ফেস্টিভ লুকও তো রাখা চাই। প্রিয়াংকা বলেন, ‘আমাদের কালেকশনে আমরা বিশেষভাবে আরামদায়ক কাপড় বেছে নিয়েছি। যাতে উৎসবের দিনগুলো সবাই ঝামেলাবিহীনভাবে কাটিয়ে দিতে পারেন। আনন্দ মাটি করতে পোশাকের অস্বস্তির চেয়ে বড় কিছু হয় না।’

সুতিতে স্বস্ত
সুতিতে স্বস্ত

প্রিয়াংকা দাশ আরও জানান, তাঁরা পূজা সংগ্রহ কাজ শুরু করেছিলেন প্রায় তিন মাস আগে। কারণ, শাড়ির নকশা থেকে শুরু করে কাপড়, বুনন, শুট—সব মিলিয়ে অনেক সময়ের প্রয়োজন হয়। শাড়ির নকশা তিনি নিজেই করেন। বাকি কাজগুলো পরিচালনার দায়ও থাকে তাঁর। সব মিলিয়ে উৎসব উপযোগী শাড়ি তৈরি হয়েছে। পূজার শাড়ি বলে লাল, মেরুন, খয়েরি এসব রঙের প্রাধান্য বেশি রাখা হয়েছে। তবে হালের ট্রেন্ডের সঙ্গে মিলিয়ে একেকজন পূজার পাঁচটি দিনে অন্য রংও পরতে পছন্দ করেন।

সেদিকটিও বিবেচনায় রাখা হয়। প্রতিটি শাড়ি হাতে তৈরি এবং একেকটি শাড়ির জন্য অনেক সময় ও যত্ন নেওয়া হয়েছে। এই শাড়িগুলো একে একে তৈরি হয়েছে তাঁদের নিজস্ব শিল্পীদের তত্ত্বাবধানে। তাই যিনি পরবেন, প্রতিটি শাড়িই তাঁকে আলাদা সৌন্দর্য এনে দিতে বাধ্য। কারণ, আধুনিকতা এবং ফ্যাশনের সঙ্গে ঐতিহ্যের একধরনের যোগ তৈরি করবে এই শাড়ি।

ছবি: ভূমিসুতা

ছবির মুখ: অনামিকা সাহা সঞ্চারী, অন্তরা সরকার অর্থী, অনুপা সরকার অথৈ, সূচনা পাল চৌধুরী

ছবির কারিগর: শ্রী অনীক দাস

ডিজাইন ও কনসেপ্ট: প্রিয়াংকা দাস (ভূমিসুতার কর্ণধার)

প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২: ০০
বিজ্ঞাপন