অনেক ফ্যাশন সমালোচকের মতে, ইউনিফর্ম ক্লদিং খুব একটা ফ্যাশনেবল ও গ্ল্যামারস নয়। অবশ্য ফ্যাশনে যে সবকিছুই গ্ল্যামারস হতে হবে, তা মানতে নারাজ মিউসিয়া প্রাদা। শুধু তা–ই নয়, পুরো বিষয়টাকেই তিনি ঘৃণা করেন। এবার মিলান ফ্যাশন উইকে মিউসিয়া প্রাদা ও র্যাফ সাইমনস নার্স ও মিলিটারি ইউনিফর্ম এবং ঐতিহ্যবাহী বিয়ের পোশাককে নতুন রূপে সবার সামনে হাজির করেছেন। কালেকশনে ছিল কয়েকটি সাদা স্কার্ট, যা বিয়ের গাউন থেকে আপসাইকেল করা হয়েছে। এর সঙ্গে ছিল ধূসর, কালো, নেভি ব্লু, ক্রিম রঙের সোয়েটার।
এতে আরও ছিল হাই ওয়েস্টেড পেনসিল প্যান্ট ও লং স্লিভ টপ। এ ধরনের পোশাক অফিস ও পার্টি—সব জায়গায় পরা যাবে। এসবের পাশাপাশি ছিল অ্যাসিমেট্রিক্যাল মিনি স্কার্ট, শার্ট, ওভারকোট, এ-লাইন ড্রেস, কোট ইত্যাদি। তবে এই সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছে প্রাদার লোগো-প্রাণিত ত্রিকোণাকৃতির নতুন তিনটি ব্যাগ। সাদা, কালো, চকলেট ও প্যাস্টেলের নানা শেডের এই আকর্ষণীয় ব্যাগগুলোর এখনো কোনো নাম প্রকাশ করা না হলেও ফ্যাশনবোদ্ধারা এখনই এগুলোকে বছরের ‘হটেস্ট ব্যাগ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
হয়তো কোনো ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর নেই বলেই গুচির নতুন সংগ্রহ দেখার জন্য সবার অনেক আগ্রহ। মাত্র এক মাস হলো গুচি ডিজাইনার সাবাতো দে সারনোকে নতুন ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। ব্র্যান্ডের হয়ে তাঁর প্রথম কালেকশন দেখা যাবে আগামী সেপ্টেম্বরে। স্বাভাবিকভাবে জানুয়ারিতে প্রদর্শিত পুরুষদের সংগ্রহের মতো এবারের নারীদের রেডি-টু-ওয়্যার পোশাকের সংগ্রহ ডিজাইন করেছে গুচির ইন হাউস টিম। এবার তারা অনুপ্রেরণা নিয়েছে তাদের নব্বই, শূন্য ও দশ—এই তিন দশকের আর্কাইভ থেকে। সে সময়গুলোতে গুচির ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করে বিখ্যাত হয়েছেন টম ফোর্ড, ফ্রিদা জিয়ান্নি, আলেসান্দ্রো মিকেল।
এই কালেকশনের মধ্য দিয়ে তাঁদের সৃষ্টিকে সম্মান জানানো হয়। এতে ছিল লাইলাক, নীল, হলুদ, ফুশিয়া রঙের ফো ফার কোট, ওভারসাইজড কোট, শার্ট, জিনস, নিটওয়্যার। এক–দুটি কোটে সিলভারের ফ্রিঞ্জও ব্যবহার করা হয়েছে। মডেলদের বেশ কিছু শিয়ার শার্ট, স্কার্ট, কালো ড্রেসে দেখা গিয়েছে। গুচি এই কালেকশনে কিছু নতুন ডিজাইনের লোফার ও ব্যাগ এনেছে।
তোমো কইজুমিকে আন্তর্জাতিক ফ্যাশন–দুনিয়ার ‘মেঘে ঢাকা তারা’ বললে খুব একটা ভুল হবে না। ৩৫ বছর বয়সী এই জাপানি ডিজাইনারকে আবিষ্কার করেন ব্রিটিশ ম্যাগাজিন ‘লাভ’-এর এডিটর ইন চিফ ক্যাটি গ্র্যান্ড। ২০১৯ সালে নিউইয়র্ক ফ্যাশন উইকে কইজুমি প্রথম তাঁর আন্তর্জাতিক ডেব্যু কালেকশন প্রদর্শন করেন। সেই আয়োজনের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ছিলেন মার্ক জ্যাকবস। এবার কইজুমি প্রথমবারের মতো মিলানে এলেন। এই ফ্যাশন উইকের অন্যতম কালারফুল সংগ্রহটি ছিল তাঁর দখলে। রাফল নিয়ে কাজ করতে খুব ভালোবাসেন কইজুমি। তাই কালেকশনের ২৯টি কতুর ধাঁচের পোশাকে মনের মাধুরী মিশিয়ে রাফল নিয়ে নিরীক্ষা করেছেন।
নতুন এই কালেকশন দাঁড় করাতে তাঁকে রংবেরঙের টাফেটা ও সাটিন আর জুতা ও ব্যাগ দিয়ে সাহায্য করেছেন ফ্যাশন ব্র্যান্ড ডলসে অ্যান্ড গাবানা। এ ছাড়া কইজুমিকে নিজেদের ডিজাইন ব্যবহার করার অনুমতিও দিয়েছে তারা। তিনি ডলসে অ্যান্ড গাবানার নতুন কালেকশনের একটি প্রিন্টকে থ্রি-ডি ফ্লোরাল অ্যাপ্লিকে পরিণত করেছেন। কইজুমির এই সংগ্রহ বেশ প্রশংসিত হয়েছে। ফ্যাশন সমালোচকেরা ধারণা করছেন, সম্ভবত এ বছরের মধ্যেই ইউরোপের নামী ফ্যাশন ব্র্যান্ডের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর হিসেবে কইজুমিকে দেখা যাবে।
ছবি: রয়টার্স