কিন’ভি। ফ্রেঞ্চ রেগে শিল্পী। আসল নাম কেভিন বোনে। ২০০৮ সালে ক্যারিয়ার শুরু করে এরই মধ্যে তিনি বেশ জনপ্রিয়। মাত্র তিন বছরের মাথায় ২০১১ সালেই তাঁর জে’মেরি ত্রোপ তাঁকে সাফল্য এনে দেয়। এই অ্যালবাম উঠে আসে ফ্রেঞ্চ সিঙ্গলস চার্টের তৃতীয় স্থানে। পরের বছর এনআরজে মিউজিক অ্যাওয়ার্ডে সম্মাননাও জুটেছে তাঁর।
সম্প্রতি তাঁর নতুন মিউজিক ভিডিও লে’মো প্রকাশিত হয়েছে। এই মিউজিক ভিডিওতে কিন’ভি পরেছেন বাংলাদেশের হাই ফ্যাশন ব্র্যান্ড জুরহেমের পোশাক। চারটি স্বতন্ত্র লুকে দেখা গেছে তাঁকে। এই পোশাকগুলো ছিল জুরহেমের সোলারিস শিরোনামের ফল–উইন্টার ২০২৫ কালেকশনের। এই সংগ্রহ গত ৮ মার্চ প্যারিস ফ্যাশন উইকের সাইডলাইনে হাউস অব ভ্যানডমের আয়োজন জুরহেমের এই সংগ্রহ উপস্থাপিত হয় চ্যাপেল সেন্ট জন দ্য’ আর্ক–এ। এরপর দারুণ প্রশংসা পান জুরেহেমের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর মেহরুজ মুনির।
ওই ফ্যাশন শোর পর তাঁর সোলারিজ কালেকশনের অনেক পোশাকই বিক্রি হয়ে যায়। এরপর তিনি কিছু পোশাক দেশে নিয়ে না এসে একটি জনসংযোগ প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে এসেছিলেন। তাদের মাধ্যমেই জুরহেম এবার পৌঁছেছে কান চলচ্চিত্র উৎসবে। একাধিক ডাকসাইটে তারকা এবার পরেছেন জুরেহেমের পোশাক।
জুরহেমের পোশাক পরার তালিকায় এবার যোগ হলেন আরেক তারকা। ফ্রেঞ্চ রেগে আর্টিস্ট কিন’ভি। কীভাবে কিন’ভির সঙ্গে জুরহেমে গাঁটছড়া বাঁধা হলো তা নিয়ে কথা হয় মেহরুজ মুনিরের সঙ্গে। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে মূল উদ্যোগ অবশ্যই উমেই বেনেইশার। তিনি ফ্রান্সের একজন সেলিব্রিটি স্টাইলিস্ট। তিনি মূলত এই মিউজিক ভিডিওতে কিন’ভির লুক তৈরিতে কাজ করেছেন। আর সেটা করতে গিয়ে তিনি আমাদের পোশাক বেছে নিয়েছেন। এ জন্য অবশ্য তাঁর প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।
‘লে’মো’ শিরোনামের মিউজিক ভিডিওর শুরুতে কিন’ভি পরেন কালো ক্রপড জ্যাকেট। ক্রিস্টাল আর কালো পাথর বসানো। এই পোশাক আসলে মূল ফ্যাশন শোতে শোস্টপার পরেছিলেন। আলো আর আঁধারির যে নাটকীয়তা, সেটিই এই পোশাকের অলংকরণে তুলে ধরা হয়।
এ ছাড়া এই মিউজিক ভিডিওতে আরও তিনটি পোশাক পরেন কিন’ভি। যেমন সবুজ রাজশাহী সিল্কের বন্ধগলা জ্যাকেট। এতে ছিল সূর্যকিরণের মতো সূক্ষ্ম অলংকরণ। সঙ্গে মিলিয়ে পরেছেন সবুজ মখমলের প্রশস্ত পায়জামা। আরেকটি দৃষ্টিনন্দন পোশাক হলো মুক্তাখচিত সাদা ট্রেঞ্চ কোট; এর সঙ্গে ছিল সাদা ঢিলেঢালা প্যান্ট—যেটি আগে প্যারিস ফ্যাশন উইক ও কান চলচ্চিত্র উৎসবে যথেষ্ট প্রশংসিত হয়েছে। শেষ পোশাকটি ছিল মুক্তাখচিত ক্রপড ডাবল-ব্রেস্টেড জ্যাকেট। এর সঙ্গে পরেছেন প্রশস্ত প্যান্ট। এর মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হয় ঐতিহ্য ও আধুনিক ছাঁটের মেলবন্ধন নিখুঁতভাবে ঘটানোর ক্ষেত্রে জুরহেমের মুনশিয়ানা।
কিন’ভির সঙ্গে এই কোলাবরেশনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ফ্যাশন অঙ্গনে জুরহেমের সৃজনশীলতা যেমন স্বীকৃত হলো, তেমনি বাংলাদেশের ডিজাইন ও কারুশিল্পের নান্দনিকতাও সম্মানিত হলো। এই পোশাক আমাদের ঋদ্ধ ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির এক অনন্য সংমিশ্রণ; ফলে আন্তর্জাতিক লাক্সারি ফ্যাশনের পরিমণ্ডলে জুরহেম নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করার প্রয়াস পেল। অবশ্য এটা কেবলই সূচনামাত্র; আন্তর্জাতিক মঞ্চে জুরহেমের এই পথচলা অব্যাহত থাকার ইঙ্গিত দেয় কিন’ভির সঙ্গে এই মেলবন্ধন।
ছবি: কিন’ভির সামাজিক মাধ্যম