আবহাওয়া বিবেচনায় তো বটেই, বিশ্ব ট্রেন্ডের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ছুটে চলা গতিময় তারুণ্যের প্রথম পছন্দ এখন পশ্চিমা ধাঁচের পোশাক। তবে ঈদ উৎসবের সঙ্গে মানানসই ঝলমলে লুক থেকেই-বা কে বঞ্চিত হতে চায়। তাই তো পশ্চিমা ছাঁটকাটে ট্র্যাডিশনাল ছোঁয়া রেখেছে ওয়েস্টার্ন ওয়্যারে বিশেষায়িত ফ্যাশন হাউসগুলো। রঙের ব্যবহারেও উৎসবের ছোঁয়া।
প্রকৃতি ও প্রযুক্তির যুগলবন্দীকে অনুপ্রেরণায় রেখে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড লা রিভ এবার ঈদে নিয়ে এসেছে নতুন পোশাকের সম্ভার। কালেকশনটির নাম নাম রাখা হয়েছে ‘রেসিপ্রোসিটি’ বা পারস্পরিকতা। মোটিফ, প্যাটার্ন, প্রিন্ট এবং ফেব্রিক নির্বাচনে প্রকৃতি ও প্রযুক্তির গাঁটছড়াকে প্রতিনিধিত্ব করছে লা রিভের লেটেস্ট কালেকশনটি। এদিকে বিশ্ব ফ্যাশনের চলতি ধারাও অনুসরণ করা হয়েছে ঈদ পোশাকের ডিজাইনে এবার।
প্রযুক্তির অবদানস্বরূপ আরামদায়ক কিছু ফেব্রিক, যেমন ভিসকস ব্লেন্ড, মসলিন ব্লেন্ড, নাইলন-কটন ব্লেন্ড, লেসি-স্ট্রাকচার, পলিয়েস্টার-কটন ব্লেন্ড, রামি কটন ও হেম্প ব্লেন্ড এবং কটন মোডালে প্রকৃতি থেকেই তুলে আনা বিভিন্ন প্রিন্ট স্টোরি ও মেটাভার্স-ফ্রেন্ডলি নিয়ন শেড দিয়ে ঈদের নতুন পোশাকসম্ভার সাজানো হয়েছে। এই প্রিন্ট স্টোরির মাধ্যমে পোশাকগুলোতে মানুষ ও প্রকৃতির নির্ভরশীলতা এবং সহাবস্থানের চিত্র এঁকেছে ব্র্যান্ডটি।
রেট্রো ধাঁচের লেয়ার ডিজাইনের পোশাকগুলো প্রাধান্য পেয়েছে এবার সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি পোশাকগুলোতে রয়েছে রাফল, ড্রপ ও পাফ স্লিভস, পিন বা টাকিং করা স্লিভস। আছে প্যাচওয়ার্ক, কারচুপি ও এমব্রয়ডারির কাজ। রঙের ক্ষেত্রে নীল ও সবুজের নানা শেড এবং নিয়ন বেজড রং লক্ষণীয়।
মেয়েদের পোশাক সম্ভারে রয়েছে নতুন স্টাইলের টিউনিক, টপস, কামিজ, শ্রাগ-টিউনিক, গাউন ও শ্রাগ। এথনিক বিভাগের মূল পোশাকগুলো হলো সালোয়ার-কামিজ, লং টিউনিক, গাউন ও শাড়ি। পুরুষদের জন্য সেমি-ফর্মাল ও স্মার্ট-ক্যাজুয়াল স্টাইলের কালেকশন থাকছে এবার। ডিজিটাল প্রিন্ট করা সুতি, ভিসকস পাঞ্জাবিসহ লম্বা হাতার ক্যাজুয়াল শার্ট, টি-শার্ট, পোলো শার্ট এ ঈদের ফিচার ডিজাইন।
ঈদ সামনে রেখে ভিনটেজ ও এথনিক থিমে ঐতিহ্যবাহী মোটিফে বিভিন্ন ফেব্রিক নিয়ে কাজ করেছে ফ্যাশন হাউস টুয়েলভ। কালার প্যালেটে বেশ বৈচিত্র্য দেখা যাচ্ছে। আছে গাঢ় সবুজ, জলপাই সবুজ, মেরুন, কালো, নেভি ব্লু এবং আরও সব গাঢ় রং। তবে সেই সঙ্গে নারী ও পুরুষ উভয়ের পোশাক কালেকশনে রয়েছে লক্ষণীয় রকমের সাদার উপস্থিতি। কারুকাজের ক্ষেত্রে মিশ্র মাধ্যমের কাজই বেশি। স্ক্রিনপ্রিন্ট ও ডিজিটাল প্রিন্টের সঙ্গে এমব্রয়ডারি দেখা যাচ্ছে পোশাকে। আছে কারচুপির কাজও। ফেব্রিকের রং গাঢ় হলেও বেশ উজ্জ্বল এবং কারুকাজে রাখা হয়েছে বহুবর্ণের উপস্থিতি। কাজগুলো খুব বেশি জমকালো রাখা হয়নি। মানানসই প্যাটার্ন ও নকশায় আছে মিনিমালিস্ট আমেজ। হালকা ফেব্রিকে এই কাজগুলো ফুটেছেও বেশ।
ঈদ সামনে রেখে ‘সারা’ নিয়ে এসেছে পোশাকের আকর্ষণীয় সব ওয়েস্টার্ন পোশাক। তবে রয়েছে এথনিক পোশাকও। এবারের ঈদে তাদের সব পোশাকের অলংকরণেই বেছে নেওয়া হয়েছে স্ক্রিনপ্রিন্ট, ডিজিটাল প্রিন্ট, কারচুপি ও এমব্রয়ডারির কাজ। এসব পোশাকের মোটিফ হিসেবে জিওমেট্রিক, ট্র্যাডিশনাল, ফ্লোরাল এমন অনেক কিছুই থাকছে। পোশাকের কাটিং ও প্যাটার্নে রয়েছে বৈচিত্র্য। পোশাকগুলোর ছাঁটকাটে এ-লাইন, সিমেট্রিক, এসিমেট্রিক প্যাটার্ন আছে।
আবহাওয়া, প্রকৃতি ও সমসাময়িক ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আরামদায়ক সুতি কাপড়ের ব্যবহার হয়েছে সবচেয়ে বেশি। যেহেতু উৎসব, তাই ফেব্রিক হিসেবে এসব পোশাকে ব্যবহার করা হয়েছে ভিসকস, স্যাটিন নেট, ডেনিম ও টুইল ফেব্রিক, জ্যাকার্ড কটন, ডবি কটন, জর্জেট, সিল্ক ইত্যাদি।
মেয়েদের জন্য সিঙ্গেল কামিজ, কাফতান, এথনিক কুর্তি ও টপস রয়েছে। আর এবারের ছেলেদের আয়োজনে থাকছে পাঞ্জাবি, কাবলি সেট, কাবলি ধাঁচের কুর্তা, ক্যাজুয়াল শার্ট, ফরমাল শার্ট, টি-শার্ট, পোলো শার্ট, ফতুয়া, ডেনিম প্যান্ট, চিনো প্যান্ট, কার্গো প্যান্ট, পায়জামা ইত্যাদি। এ ছাড়া সারার এবার ঈদের কালেকশনে পরিবারের সবার জন্য একই থিমের পোশাক রয়েছে।
ছবি: লা রিভ, টুয়েলভ ও সারা