চোখধাঁধানো ৮৫টি পোশাকের বিশাল এক সংগ্রহ আর কিম কার্ডাশিয়ানকে দিয়ে সবাইকে অবাক করে দিয়েছেন ডোমেনিকো ডোলসে ও স্টেফানো গাবানা। ব্যালেন্সিয়াগার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়েও কিম ডোলসে অ্যান্ড গাবানার সঙ্গে কোলাবরেশন করবেন, এটা কেউ ভাবতেও পারেনি। এর পেছনে একটি মজার ঘটনাও আছে।
মে মাসে ইতালির পোর্টোফিনোতে বিয়ে হয় কোর্টনি কার্ডাশিয়ান ও ট্রাভিস বার্কারের। কোর্টনির বিয়ের ড্রেস ডিজাইন করে ডোলসে অ্যান্ড গাবানা। সেই অনুষ্ঠানেই কিম পরেছিলেন এই ব্র্যান্ডের একটি ভিনটেজ ড্রেস। এ ছাড়া সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন ডোলসে অ্যান্ড গাবানার আরও ভিনটেজ সংগ্রহ, যা ব্র্যান্ডটির নিজস্ব আর্কাইভেও নেই। ওই দিনই কিমকে এই ডিজাইনার জুটি তাঁদের নতুন রেডি-টু-ওয়্যার সংগ্রহে কোলাবরেশনের প্রস্তাব দেন। কিম ডোলসে অ্যান্ড গাবানার কিউরেটর হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি ১৯৮৭ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত হওয়া সব পুরোনো সংগ্রহ থেকে নতুন সংগ্রহের জন্য পোশাক বাছাই করেন। পাশাপাশি সমসাময়িক ট্রেন্ডের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতিটি পোশাকে সূক্ষ্ম পরিবর্তন আনতে পরামর্শ দেন ও সহায়তা করেন তিনি।
তাই কালেকশনটি ভরপুর ছিল ডোলসে অ্যান্ড গাবানার সিগনেচার, বিজুয়েলড কোরসেট ড্রেস, কতুর-স্টাইল টেইলরিং, রিপড জিনস ও লেপার্ড প্রিন্টে। কিম জানান পুরো কাজটি ছিল তাঁর জন্য খুব নস্টালজিক মজার অভিজ্ঞতা।
ডোনাটেলা ভারসাচে আবারও সবাইকে ‘মনোক্রোম ম্যাজিক’ দিয়ে তাক লাগালেন। তাঁর এবারের কালেকশন সাজিয়েছেন মাত্র চারটি রঙে। কালো, ইলেকট্রিক ফুশিয়া, প্রিন্সলি পার্পল, নিয়ন গ্রিন। ভারসাচের সংগ্রহে প্রিন্ট থাকবে না, তা কি হয়। খুব অল্প কিছু পোশাকের কাপড়ে জেব্রা স্ট্রাইপ ও ট্রপিক্যাল প্রিন্ট দেখা গিয়েছে।
বসন্তের নতুন এই সংগ্রহের থিম ছিল ‘ডার্ক গোথিক গডেস’। এতে ছিল সুপার স্লিঙ্কি লিটল ব্ল্যাক ড্রেস, লঞ্জারি স্টাইল লেসের মিনিড্রেস, ট্যাসেল দেওয়া লেদারের জ্যাকেট, ড্রেনপাইপ (একধরনের ট্রাউজার), হুডওয়ালা বডি হাগিং কাটআউট ড্রেস, কোরসেট, সাইড স্লিট গাউন, মিনিস্কার্টসহ আরও অনেক কিছু। ভারসাচের রানওয়েতে শো-স্টপার হিসেবে হেঁটে সবাইকে চমকে দেন হলিউডের বিখ্যাত সেলিব্রিটি প্যারিস হিল্টন।
সেদিন ডোনাটেলা তাঁকে পরিয়েছিলেন বার্বিকোর প্রাণিত লিটল পিংক চেইনমেল ড্রেস আর মাথায় ভেইল। প্যারিসকে এই সাজে একেবারে সত্যিকারের গথিক দেবী লাগছিল।
মিলান ফ্যাশন উইকের সবচেয়ে অদ্ভুতুড়ে কালেকশন নিয়ে হাজির হন মসকিনোর ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর জেরেমি স্কট। ব্যাকস্টেজে ভোগকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘খাদ্য, বাসস্থান, জীবন—সবকিছুর দাম বাড়ছে। তাই আমি আমার সংগ্রহে ইনফ্ল্যাশন বা স্ফীতি নিয়ে এসেছি।’ তিনি আক্ষরিক অর্থেই প্রতিটি পোশাকে ইনফ্ল্যাটেবল বা বাতাসে পরিপূর্ণ প্লাস্টিকের হার্ট ও কার্টুন আকৃতির পুল টয় এমবেলিশমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করেছেন। এর অনুপ্রেরণা পেয়েছেন, মসকিনোর ভিনটেজ কালেকশনগুলো থেকে।
এই ব্র্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা ফ্র্যাঙ্কো মসকিনোর আইকনিক সিম্বল লাল টকটকে হার্ট শেপকে বিভিন্নভাবে ভেঙেচুরে তা দিয়ে বানিয়েছেন কলার বা হেমলাইন। আবার টেইলর স্যুটে ব্রোকেন হার্ট ল্যাপেলও দেখা যায়। ফ্র্যাঙ্কো ১৯৮৯ সালে তাঁর ‘ক্রুজ মি বেবি’ কালেকশনের জন্য একটি লাইফ জ্যাকেট তৈরি করেন, যা দেখতে অনেকটা প্লেনের সিটের নিচে রাখা ভেস্টের মতো ছিল। সেই জ্যাকেটের কথা মাথায় রেখে জেরেমি এই নতুন সংগ্রহে গাউন, টেইলর স্যুটে জুড়ে দিয়েছেন কার্টুন আকৃতির পুল রিং।
যেন চাইলেই গ্রীষ্মের ছুটিতে গিয়ে ওই পোশাক পরে পুলে বা সমুদ্রে নেমে যেতে কেউ দ্বিধা না করেন। ফ্যাশন সমালোচকেরা জেরেমির এই অদ্ভুত চিন্তাভাবনা দেখে তাঁকে ফ্র্যাঙ্কো মসকিনোর যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে আখ্যা দিচ্ছেন।
ছবি: রয়টার্স ও ইন্সটাগ্রাম