জেনজি প্রজন্মের ভীষণ শখের এক পোশাক জার্সি। ক্রিকেট ও ফুটবল খেলোয়াড়দের ক্রেজ ছাপিয়ে এই জার্সি এখন আলোচনার শীর্ষে রয়েছে। কারণটি আর কেউ নন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জনপ্রিয় নাম হাসনাত আব্দুল্লাহ। দেশের মানুষের মন তো তিনি জয় করেছেন অনেক আগেই।
তবে এখন জেন-জি প্রজন্মের কাছে মূল আকর্ষণ তাঁর বটল-গ্রিন রঙের জার্সিটি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের এগারো ব্যাচের শিক্ষার্থী হাসনাতের এই জার্সিটি তাঁর বিভাগেরই। এক জার্সি পরেই রাজপথ থেকে বঙ্গভবনের পথ পাড়ি দিয়েছেন তিনি।
অনেকেই হাস্যরস করে বলছে, ছেলেরা জামাকাপড়ের ব্যাপারে বরাবরই উদাসীন প্রকৃতির হয়। রাতারাতি তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের মিম। অনেকে না বুঝে একে হালকাভাবে দেখলেও এই জার্সি পরিবর্তন না করার পেছনের কারণটি কিন্তু অত্যন্ত গভীর।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক হয়রানির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে একাই অনশনে বসেছিলেন এর আগে হাসনাত আব্দুল্লাহ প্রশাসনিক ভবনের সামনে। তাঁর হাত ধরে এসেছিল পরিবর্তনও। এবারের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনেও একজন সমন্বয়ক হিসেবে তাঁর ভূমিকা ছিল বেশ জোরালো। তবে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় সব ছাপিয়ে এখন নজর কাড়ছে তাঁর ইংরেজি বিভাগের ১০ নম্বর জার্সিটি।
জার্সি কেন পরিবর্তন করেন না এর কারণ জানতে চাইলে হাসনাত জানান, এমনিতে তিনি বিজয় একাত্তর হলে থাকেন তবে ঘটনাক্রমে বনশ্রীর বাড়ি থেকে এই পোশাকেই আন্দোলনে যোগ দেন। সেদিনই ছাত্রলীগের আতর্কিত হামলা হয় এবং তাকে খুব অত্যন্ত নির্মমভাবে পেটানো হয়। এরপর থেকে তিনি প্রতিজ্ঞা করেন, যতদিন না স্বৈরাচারের পতন হচ্ছে, জার্সিটি তিনি খুলবেন না। সুতরাং, হাসনাত আব্দুল্লাহর জার্সিটি নেহাতই মিম ম্যাটেরিয়াল কিন্তু নয়, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন, প্রত্যয় আর প্রতিবাদের প্রতীক।
তবে এই ঘটনার মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগকে সারাদেশে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে ছেড়েছেন তিনি।
আরেকটি মজার তথ্য হলো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা তুমুল আগ্রহে হাসনাত আব্দুল্লাহর ১০ নম্বরের জার্সিটি নিজেদের সবার জন্য তৈরি করছেন। যেদিন তাঁকে বিভাগীয় সংবর্ধনা দেওয়া হবে, সেদিন নাকি এটি পরা হবে সবাই মিলে!
ছবি: ফেসবুক