মডেল হতে আগ্রহী এমন অনেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন। কর্মশালাটি যেকোনো বয়সের, পেশার ও শারীরিক গড়নের মানুষের জন্য উন্মুক্ত ছিল। দুই দিনব্যাপী কর্মশালায় ক্লাস নিয়েছেন পিয়া জান্নাতুল, টেন মিনিট স্কুলের কনসালট্যান্ট সাকিব বিন রশিদ, মডেল আজিম উদ্দৌলা, স্টাইলিস্ট মাহমুদুল হাসান মুকুল, মেকআপ স্পেশালিষ্ট সুমাইয়া মহসিনিন, অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া, মনোবিজ্ঞানী এম ডি আরিফুল হক, ফটোগ্রাফার রফিকুল ইসলাম।
ওয়ার্কশপের অভিজ্ঞতা নিয়ে পিয়া জান্নাতুল বলেন, ‘প্রথম হিসেবে আমরা বেশ ভালো সাড়া পেয়েছি। এই ওয়ার্কশপে অংশ নিতে বরিশাল থেকেও এসেছেন একজন। এমনকি একজন অংশগ্রহণকারী এসেছেন লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে। সবাই যে মডেলিং করবেন এই উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছেন এমনও নয়। এখানে যাঁরা এসেছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই তাঁদের দক্ষতা উন্নয়ন করতে চান। আর এটাই আমাদের ওয়ার্কশপের মূল লক্ষ্য। যেকোনো পেশায় যেতে হলে গ্রুমিংটা অনেক বেশি জরুরি। সেটা ফটোগ্রাফি, স্টাইলিং, অভিনয় বা মিডিয়ার বাইরে অন্য কোনো চাকরি। আমরা আমাদের ওয়ার্কশপের কারিকুলাম সেভাবেই সাজিয়েছি। ভার্বাল বা নন-ভার্বাল কমিউনিকেশন থেকে শুরু করে ক্যাটওয়াকসহ সবকিছুই রাখা রয়েছে। ক্যাটওয়াক বা সুন্দর করে হাঁটা, সঠিক বডি পশ্চার বা শরীরের ভঙ্গিমা বজায় রাখা একটা আর্ট; যা আমরা এখানে শেখাচ্ছি।
মানসিক স্বাস্থ্যকেও আমরা কারিকুলামে রেখেছি। কারণ, এ সময়ে এসে দেখা যাচ্ছে পেশাগত অসন্তুষ্টি বা চাপ, ব্যক্তিগত ঝামেলা থেকে অনেকেই আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে উঠছেন। এ জন্য আমরা মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর জোর দিচ্ছি প্রথম থেকেই। বলতে গেলে প্রতিটি সেক্টর থেকে আমরা বিশেষজ্ঞদের এনেছি। এই ওয়ার্কশপের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, এখানে যাঁরা অংশগ্রহণ করছেন, তাঁদের দুটো ছবি দিয়ে পোর্টফোলিও বানিয়ে দেওয়া হবে। যাতে তাঁরা মডেলিং করতে চাইলে এই পোর্টফোলিও কাজে লাগাতে পারেন। শুরুটা এভাবেই করেছি, পরে আমরা গ্রুমিংয়ের দীর্ঘ কোর্স নিয়ে আসব; যেখানে সবকিছুর খুঁটিনাটি ধরে ধরে শেখানো হবে।’
কর্মশালায় যোগাযোগের দক্ষতা উন্নয়ন নিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও মডেল শবনম ফারিয়া। তিনি বলেন, ‘যখন আমি মডেলিং শুরু করেছিলাম, তখন জানতাম না কোথায় যেতে হবে বা কী করতে হবে। তখন আমি অনেক ভয় পেতাম; কারণ, বাংলাদেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি বা মিডিয়া কেমন, সে সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা ছিল না।
তখন থেকে আমার মনে হতো, এ রকম একটা প্ল্যাটফর্ম থাকা উচিত, যেখান থেকে সবাই শিখতে পারবে। অনেকেই ভাবেন দেখতে সুন্দর হলে বা হাইট ভালো হলেই মডেলিং করা যাবে। কিছু শেখার দরকার নেই। এ ধারণা ভুল। এখানেও যে শেখার অনেক কিছু আছে, সেটা না জানা থাকলে এই পেশায় অনেক সংগ্রাম করতে হয়। তাই আমি মনে করি এই গ্রুমিং ওয়ার্কশপ খুব ভালো একটা উদ্যোগ। আর এর অংশ হতে পেরে আমি সত্যিই খুব আনন্দিত।’
ভবিষ্যতে প্রতিটি বিভাগীয় শহর ও জেলায় এমন আরও সংক্ষিপ্ত কর্মশালার আয়োজন করা হবে বলেন জানান পিয়া জান্নাতুল।
ছবি: পিকচার পার্ফেক্ট