পরিপাটি করে নিজেকে উপস্থাপন করতে অপরিহার্য ফ্যাশন অনুষঙ্গের একটি হচ্ছে জুতা। পুরো সাজের ঢঙে পরিবর্তন নিয়ে আসতে তুলনা নেই এক জোড়া জুতার। তাই পোশাকভেদে জুতা হওয়া চাই মানানসই ও ফ্যাশনেবল। তবে অতি প্রয়োজনীয় এই ফ্যাশন অনুষঙ্গ কেনার সময় সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনায় পড়তে হয় ক্রেতাদের। আমাদের দেশে সাধারণত মেয়েদের ক্ষেত্রে ৩৫ থেকে ৪০ এবং ছেলেদের ৩৯ থেকে ৪৬ ইউরোপিয়ান সাইজের জুতা সহজেই পাওয়া যায়। কিন্তু এর চেয়ে বড় কিংবা ছোট হলেই মনমতো জুতা পাওয়া হয় ভার।
বিশেষ করে যাঁদের পা বড় কিংবা যাঁদের পায়ে কোনো ত্রুটি আছে। দুর্ঘটনা, অসুস্থতা কিংবা জন্মগত কারণে অনেকের পায়ে নানা সমস্যা হয়ে থাকে। পা স্বাভাবিকের চেয়ে ফোলা বা বাঁকা হলে অনেক ক্ষেত্রে উপযুক্ত জুতা খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়। ফলে অনেক ইচ্ছা সত্ত্বেও পছন্দের ডিজাইনের জুতাটি তাঁরা পরতে পারেন না। আর সেই সমস্যার সমাধান খুঁজতেই নাজমুল ইসলাম শুরু করেন ‘মুচিবাড়ি’।
মুচিবাড়ি অনলাইনভিত্তিক একটি উদ্যোগ। ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী যেকোনো ডিজাইন, আকার ও রঙের জুতা তৈরি করে দেয় তারা। স্টাইল অনুসারে স্যান্ডেল থেকে শুরু করে হিল যেকোনো ধরনের জুতা তৈরি করিয়ে নেওয়া যাবে এখানে। তা ছাড়া তাদের নিজস্ব সংগ্রহও আছে।
ছেলেমেয়ে উভয়ের জন্য ফ্লিপ-ফ্লপ, স্লাইডস, পেছনে বেল্টসহ ও বেল্ট ছাড়া নানা ঢঙের-রঙের কজি ও স্বস্তিদায়ক স্যান্ডেল দিয়ে ইতিমধ্যে বেশ পরিচিতি পেয়েছে মুচিবাড়ি। ফ্ল্যাট এই জেনুইন লেদারের স্যান্ডেলগুলো দেখতে যেমন আরামদায়ক, তেমনি দেবে এলিগ্যান্ট লুকও। বাইরে চলাফেরা, আড্ডার আয়োজন, ট্যুর কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ে পায়ের সঙ্গী হতে পারে এই স্যান্ডেলগুলো। কারণ, পায়ের জুতা স্টাইলিশ ও আরামদায়ক হলে যাত্রাও হয় সহজ।
জিনস আর লেদারের ফিউশন নিয়েও কয়েকটি ডিজাইন এনেছে মুচিবাড়ি। ছেলেমেয়ে যে কেউ পরতে পারবে এই স্লাইডসগুলো। সবগুলো জুতা মুচিবাড়ির নিজস্ব কারিগরদের হাতে তৈরি। প্রতিটি সেলাইয়ে আছে তাঁদের যত্নের ছোঁয়া। একে তো মিনিমাল ডিজাইন দিয়ে নজর কাড়ছে ক্রেতাদের। পাশাপাশি জুতাগুলোর দামও রাখা হয়েছে হাতের নাগালে।
সালোয়ার কামিজ হোক বা শাড়ি কিংবা পশ্চিমা কোনো পোশাক পাতলা এই স্যান্ডেলগুলো সব পোশাকেই দেবে কজি লুক। শুধু স্যান্ডেল নয়, মেয়েদের সংগ্রহে আছে ফ্যাশনেবল মিউলও। শীতের দিনে পায়ের সামনের দিকে ঢাকা জুতা বেশ আরামদায়ক। যেকোনো ফরমাল লুকের সঙ্গী হতে পারে এই জুতা জোড়া। মেয়েদের জন্য ইউরোপিয়ান ৩৯ থেকে ৪২ সাইজের ও ছেলেদের সর্বোচ্চ ৪৬ পর্যন্ত জুতাগুলো মুচিবাড়ির সংগ্রহে আছে। এর চেয়ে ছোট-বড় কিংবা ডিজাইনে কোনো পরিবর্তন চাইলে কাস্টমাইজেশনের উপায় তো আছেই।
২০২০ সাল থেকে এভাবে ক্রেতাদের ফ্যাশন বজায় রাখার কাজটি করে যাচ্ছে মুচিবাড়ি। ‘বড় সাইজের জুতা অনেক জুতার দোকানেই পাওয়া যায় না কিংবা যাঁদের পায়ে কোনো সমস্যা আছে, তাঁদেরও মানিয়ে নিতে হয় রেগুলার জুতাগুলোতে, যা পরিধানকারীর জন্য কষ্টকর। এসব ভেবেই শুরু করি মুচিবাড়ি’, জানিয়েছেন মুচিবাড়ির স্বত্বাধিকারী নাজমুল ইসলাম। তরুণ এই উদ্যোক্তার মতে, মুচিবাড়ির প্রায় ৭০ ভাগ ক্রেতা বাজারে সঠিক মাপের অরিজিনাল চামড়ার জুতা না পেয়ে তাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করছে নিজেদের পছন্দমতো ডিজাইনের ও রঙের জুতা জোড়া।
ছবি: মুচিবাড়ি