বাতাসে পূজার সৌরভ। উৎসবের আমেজ চারদিকে। দুর্গার দশভুজা রূপ আর মায়াভরা মুখটি গয়নার নকশায় এসেছে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে। যেন সশব্দ আর সদর্পে জানান দিচ্ছে পূজার উৎসবমুখরতা। মণ্ডপে বন্ধুরা মিলে ঘুরে বেড়াতে শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ বা পশ্চিমা ধাঁচের যেকোনো পোশাকের সঙ্গে দারুণ মানাবে ত্রিনিত্রি আর হৈমালীর পূজাসংগ্রহের প্রতিমা প্রতিকৃতির গয়নাগুলো। স্টেটমেন্ট নেকপিস ও নজরকাড়া দুলগুলো শারদীয় রঙে উজ্জ্বল। কাঠ, টেরাকোটা, শামুক, কঞ্চির বুনন, ধাতু, ময়ূরের পালক আর রংবেরঙের সুতার মিশেলে তৈরি গয়নাগুলোয় দুর্গা প্রতিমার স্পষ্ট মুখাবয়বেও রয়েছে উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার।
এবারে শারদীয়ার নতুন গয়না ‘উমা’ এলো ঢাকের সাজে সজ্জিত হয়ে। আগের দিনের বনেদি পূজাগুলোতে এমন সাদা ঢাকের সাজে সজ্জিত মায়ের প্রতিমা গড়া হতো। যার প্রচলন এখনকার পূজাতে তেমন একটা দেখা যায় না। সেই ভাবনা থেকে তৈরি হয়েছে ‘উমা’ নেকপিসটি। টেরাকোটার মাতৃমুখের চারপাশে রয়েছে কাঠের খোদাই করা সাদা ঢাকের সাজ। সবচেয়ে আকর্ষণীয় হলো গয়নায় ব্যবহৃত ময়ূরের পেখমসজ্জিত নকশা।
এই নেকপিস সুতায় বোনা শিউলিতে সাজানো হয়েছে মা দুর্গাকে। লালের ওপর বেশ সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে প্রতিটি শিউলি। সেই সঙ্গে কড়ি দিয়ে সাজানো পাটের বেসের ওপর বসানো হয়েছে টেরাকোটা মায়ের মুখ।
কয়েক বছর ধরে ‘চোকার’ বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তাই দুর্গাকে কেন্দ্র করে সহজ নকশার চোকার তৈরি করেছে গয়নার ব্র্যান্ড হৈমালি। পার্বণে লাল-সাদা ছাড়াও কালোর আবেদন অন্যতম। তাই কাপড়, লেস ও সুতার ব্যবহারে সেভাবেই নকশা করা হয়েছে। ভিন্নতা আনতে দুর্গার মুকুটটি বানানো হয়েছে দড়ি ও ছোট পমপম দিয়ে। কানের দুলের প্রতীকী হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে শরতের শিউলি ফুল। চোকারটির নাম ‘সত্যা’। যাঁরা পূজার সাজে একটু অন্যরকম কিছু পরতে পছন্দ করেন, তাদের কথা মাথায় রেখে মূলত এই চোকারটি ডিজাইন করা।
নানা আয়োজনে দুর্গা মাকে বরণ করা হয়। মাতৃবরণের এই মঙ্গলসজ্জা ধারণাটি মাথায় রেখে নকশা করা হয়েছে গয়নায়। বেতের বেসের ওপর লাল কাপড় কুঁচি করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নেকপিসটি । তার ওপর বসানো হয়েছে টেরাকোটা দুর্গামুখ। সঙ্গে সাজানো রয়েছে পদ্ম, শাঁখা-পলা, পাতা ও শঙ্খ। মালাটি আকর্ষণীয় করতে রঙিন সুতা ব্যবহার করা হয়েছে। গয়না: ত্রিনিত্রি
দুর্গার আরেক নাম নারায়ণী, যিনি সর্বমঙ্গলদায়িনী। সেটিই এবার ফুটে উঠেছে গয়নার ব্র্যান্ড ত্রিনিত্রির প্রিন্টেড কালো কাপড় দিয়ে তৈরি নেকপিসে। টেরাকোটা দুর্গামুখ আর কাঠের মুকুটের সঙ্গে সোনালি ধাতুর সমন্বয়ে নকশা করা হয়েছে।
ছাইরঙা ছাপা কাপড়ের ওপর টেরাকোটা দুর্গামুখ বসিয়ে তৈরি করা হয়েছে নেকপিস। আকর্ষণীয় করতে কড়ি, ছোট পমপম ও ধাতু ব্যবহার করা হয়েছে। নেকপিসটি লাল সুতার ওপর রঙিন সুতার নকশা ও বেস চোখে পড়ার মতো।
উৎসবে কাঠের গয়না এখন ট্রেন্ড। হালকা ও খুব সহজেই যেকোনো পোশাকের সঙ্গে মানানসই। ত্রিনিত্রির এই নেকপিসে হাতে আঁকা হয়েছে দেবীর মুখ। সঙ্গে রয়েছে কাঠের বিডস, কড়ি ও ত্রিশূল। এই হারের নাম ‘ঐশানী’। দেবীদুর্গার এই নামকে শক্তির প্রতীক ধরা হয়।
পূজা উপলক্ষে এসেছে নানা নকশার টিপ। সবগুলো টিপ পূজার থিমকে উপজীব্য করে নকশা করা হয়েছে। শঙ্খ, পানপাতা, ত্রিশূল, পদ্ম, জবা, শিউলি, ওম ফুটে উঠেছে টিপগুলোতে।
কাঠের বেসের ওপর ত্রিপুণ্ড্রকের নকশা করা হয়েছে। এই দুল সাজানো হয়েছে রুপালি ঝুমকায়।
কাঠের চুড়ির নকশায় ব্যবহৃত হয়েছে কাঠের প্রতীকী ত্রিশূল।