ছাতা কেনার সময় এই ৫টি বিষয় মাথায় রাখছেন তো
শেয়ার করুন
ফলো করুন

বৃষ্টিতে অপরিহার্য সঙ্গী ছাতা। তাই বাজার থেকে যে কোনো একটি ছাতা কিনে নিলেই কিন্তু হয় না। ছাতা কেনার আগে বেশ কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। রোদের তাপ থেকে বাঁচতে আমরা যেসব ছাতা ব্যবহার করি, ঝড়-বাদলার দিনে কিন্তু সেসব ছাতা অনেক সময় কার্যকর হয় না। তাইতো মাঝে মাঝে অনেকেই দেখা যায়, ঝড়ের দিনে সঙ্গে ছাতা থাকলেও পড়েন নানা বিপত্তিকর পরিস্থিতিতে। আবার দেখা যায়, ছাতা কিনে ঠকতেও হয়। এ বছর ছাতা কিনে পরের বছরই দেখা যায় ছাতা শেষ। অনেক সময় তো বৃষ্টির দিন যেতে না যেতেই ছাতা নষ্ট হয়ে যায়। ছাতা কেনার সময় মানুষ সচরাচর রং দেখেই ছাতা কেনেন। ছাতার রং কেবল ফ্যাশনের অংশ নয়, ব্যবহারিক দিক থেকেও তা গুরুত্বপূর্ণ। যেমন গাঢ় রঙের ছাতায় ধুলাবালি কম ধরে, তেমন গরমে তাপও বেশি শোষণ করে। অন্যদিকে, হালকা রং যেমন সাদা বা নীল ছাতা রোদে আরামদায়ক হলেও এগুলোতে খুব সহজেই বৃষ্টির ছোপ পড়ে যেতে পারে। এছাড়া ছাতা কেনার সময় আরও বেশ কিছু ব্যাপারে খেয়াল রাখা ভালো। চলুন জেনে নেওয়া যাক, ছাতা কেনার আগে মাথায় রাখতে হবে যেসব বিষয়।

মাঝারি আকৃতির ফোল্ডিং ছাতাগুলো সবচেয়ে বেশি উপযোগী
মাঝারি আকৃতির ফোল্ডিং ছাতাগুলো সবচেয়ে বেশি উপযোগী

১. ছাতার সাইজ

ছাতা কেনার সময় সবার আগে যে বিষয়টির দিকে খেয়াল রাখতে হবে তা হলো ছাতার সাইজ। ছোট আকারের পকেট ছাতাও পাওয়া যায়, আবার বড় আকারের ছাতাও পাওয়া যায়। ছোট আকারের ছাতাগুলো বহন করার জন্য সবচেয়ে ভালো। আপনি যদি একা চলাফেরা করে থাকেন, তবে এই পকেট ছাতাগুলো নিতে পারেন। ১০০–১০৫ সেমি ব্যাসবিশিষ্ট একটি ছাতা এক জনের জন্য একেবারেই ঠিকঠাক। এগুলো হালকা এবং সহজে বহনযোগ্য। ১১০–১২০ সেমি ব্যাসবিশিষ্ট একটি ছাতা দুইজন মানুষের জন্য যথেষ্ট, কিংবা বাড়তি সুরক্ষার জন্য একজন একাই এই আকৃতির ছাতা ব্যবহার করতে পারেন। ১৩০–১৪০ সেমি ব্যাসের বড় ছাতাগুলো দুইজন মানুষের জন্য আদর্শ মাপের। তবে এগুলো তুলনামূলকভাবে ভারী ও বড় হওয়ায় সবসময় বহনযোগ্য নয়। যাঁরা প্রতিদিন অফিস বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করেন, তাঁদের জন্য মাঝারি আকৃতির ফোল্ডিং ছাতাগুলো সবচেয়ে বেশি উপযোগী।

বিজ্ঞাপন

২. ছাতার  উপকরণ

ছাতা কেনার সময় এর ফ্রেম, হ্যান্ডেল এবং কাপড়ের মান কেমন, সেদিকে নজর দেওয়াও অত্যন্ত জরুরি। ফ্রেম যদি দুর্বল ধাতুর তৈরি হয়, তবে সামান্য ঝড়েই তা ভেঙে যেতে পারে। সাধারণত অ্যালুমিনিয়াম ও ফাইবারগ্লাস দিয়ে তৈরি ফ্রেমগুলো মজবুত হয় এবং মরিচা পড়ে না। স্টিলের ফ্রেম শক্ত হলেও সময়ের সঙ্গে মরিচা পড়ার আশঙ্কা থাকে। ছাতার কাপড় হিসেবে পলিয়েস্টার ও নাইলনের মিশ্রণে তৈরি কাপড় বেশি টেকসই এবং বৃষ্টির পানি প্রতিরোধে কার্যকর। এছাড়া ইউভি প্রটেকশন বা রোদ থেকে রক্ষা করার জন্য বিশেষ স্তরযুক্ত কাপড় থাকলে তা বাড়তি সুবিধা দেয়।

ছাতা কেনার সময় এর ফ্রেম, হ্যান্ডেল এবং কাপড়ের মান কেমন, সেদিকে নজর দেওয়াও অত্যন্ত জরুরি
ছাতা কেনার সময় এর ফ্রেম, হ্যান্ডেল এবং কাপড়ের মান কেমন, সেদিকে নজর দেওয়াও অত্যন্ত জরুরি

৩. ছাতার খোলা ও বন্ধের ব্যবস্থা

বাজারে বিভিন্ন ধরনের ছাতা পাওয়া যায়—কিছু ছাতা পুরোপুরি হাত দিয়ে খোলা-বন্ধ করতে হয়, আবার কিছু অটোমেটিক সিস্টেমে একটি বোতাম চাপলেই খুলে যায় বা বন্ধ হয়ে যায়। অটোমেটিক ছাতা ব্যবহার করতে সহজ হলেও, এর মেকানিজম নষ্ট হলে পুরো ছাতাটিই অকেজো হয়ে যেতে পারে। তাই যাঁরা দীর্ঘমেয়াদি বা টেকসই ছাতা চান, তাঁদের জন্য ম্যানুয়াল ছাতা ভালো হতে পারে। তবে যাঁরা দ্রুত কাজ করতে চান, বিশেষ করে ভিড় বা ব্যস্ত রাস্তায়, তাঁদের জন্য অটোমেটিক ছাতাই বেশ সুবিধাজনক হবে।

বিজ্ঞাপন

৪. ছাতার হ্যান্ডেল

অনেক সময় দেখা যায় ছাতার হ্যান্ডেল আরামদায়ক নয়, ফলে হাতে রাখতে কষ্ট হয় বা হাত পিছলে যায়। ছাতা কেনার সময় হ্যান্ডেলটি হাতে নিয়ে পরীক্ষা করে দেখা জরুরি—তা যেন হাতের মাপ ও আকার অনুযায়ী হয় এবং যথেষ্ট গ্রিপ থাকে। রাবার কোটেড বা আরামদায়ক প্লাস্টিকযুক্ত হ্যান্ডেল হলে দীর্ঘ সময় ছাতা ধরে রাখলেও হাতে কষ্ট হয় না। আবার অনেক ছাতায় হুক বা কাঠের তৈরি নান্দনিক হ্যান্ডেলও পাওয়া যায়, যেগুলো দেখতে দৃষ্টিনন্দন হলেও বাস্তব ব্যবহারের দিকটি বিবেচনায় নেওয়া জরুরি।

ছাতার কাপড় ও সেলাইয়ের গুণগত মান নিশ্চিত হতে হবে
ছাতার কাপড় ও সেলাইয়ের গুণগত মান নিশ্চিত হতে হবে

৫. ছাতার মান

ছাতা তো ব্যবহারই হয় মূলত বৃষ্টি বা রোদ থেকে বাঁচার জন্য। তাই ছাতার কাপড় ও সেলাইয়ের গুণগত মান নিশ্চিত হতে হবে যেন তা রোদ ও বৃষ্টি ঠেকাতে পারে। কিছু ছাতা আছে যেগুলোর কাপড়ে ওয়াটার রিপেলেন্ট প্রলেপ থাকে, ফলে পানি গড়িয়ে পড়ে যায় এবং ছাতা ভেজে না। এতে ছাতা দ্রুত শুকিয়ে যায়, ব্যাগ বা অন্য কাপড়ও ভিজে না। এছাড়া ছাতা ভালোভাবে সেলাই করা কিনা সেদিকেও খেয়াল রাখা দরকার।

সূত্র: গুড হাউজকিপিং

ছবি: পেকজেলস

হিরো ইমেজ: সঙ্গীতশিল্পী ও অভিনেত্রী পারশা মাহজাবীন

প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫, ০৭: ০৪
বিজ্ঞাপন