প্রতিটি উৎসবের অন্যতম অনুষঙ্গ পোশাক। সেদিক থেকে বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদ। এ উপলক্ষে প্রত্যেক মানুষ নিজের পছন্দের পোশাক কিনতে ভিড় করছেন নানা দোকানে। তবে দেশের কাপড় ও সুতা দিয়ে পোশাক তৈরি করে জনপ্রিয় হয়েছে বিশ্বরঙ, দর্জিবাড়ি ও শিকড়। ঈদ উপলক্ষে প্রতিটি ব্র্যান্ড অনেকগুলো নান্দনিক লুকের উপস্থাপন করেছে। উত্তরবঙ্গের ছোট্ট শহর রাজশাহীতে এই তিন ব্র্যান্ডের আউটলেট রয়েছে।
প্রতিটি ঈদে বিশ্বরঙের বিশেষ আয়োজন থাকে। এবারও ট্রেন্ডি এবং ট্র্যাডিশনাল লুকের উপস্থাপন থাকছে পোশাকে। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের হাতে তৈরি ঐতিহ্যবাহী পোশাকে ব্যবহৃত নকশার অনুপ্রেরণায় সাজানো হয়েছে বিশেষ এই কালেকশন। এ ছাড়া ঋতুবৈচিত্র্যের হিসাব রেখে পাঞ্জাবি, থ্রি-পিসহ সব পোশাকে আরামদায়ক কাপড়, যেমন সুতি, ধুপিয়ান সিল্ক, তসর সিল্ক, লিনেন কাপড় ব্যবহার করেছে। রঙের ব্যবহারে কনট্রাস্ট কালারের পাশাপাশি নানা শেডের রংও ব্যবহার করা হয়েছে। কাজের মাধ্যম হিসেবে রয়েছে স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক, ডিজিটাল প্রিন্ট, মেশিন এমব্রয়ডারি, কম্পিউটার এমব্রয়ডারি, হ্যান্ড এমব্রয়ডারি, কারচুপি, নকশিকাঁথা, জারদৌসিসহ মিশ্র মাধ্যমের কারুকাজ।
রাজশাহীর গণকপাড়া বিশ্বরঙ ব্রাঞ্চের প্রধান তুষার বলেন, ‘আমাদের ব্যবসার অবস্থা ভালোই। ঈদ উপলক্ষে পাঞ্জাবি, শার্ট, থ্রি-পিস ও শাড়ির বড় কালেকশন এসেছে। সবচেয়ে ভালো ব্যাপার হলো, ক্রেতারা আমাদের পোশাক এবার আগের তুলনায় বেশি পছন্দ করছেন। গরমের কথা চিন্তা করে সব পোশাকে আরামদায়ক ফেব্রিকস ব্যবহার করা হয়েছে।’
তরুণদের সবচেয়ে পছন্দের ব্র্যান্ড দর্জিবাড়ি। সব ঈদের মতো এবারও তরুণদের এক্সক্লুসিভ সব পাঞ্জাবি নিয়ে এসেছে দেশীয় এই ব্র্যান্ড। ঈদ উপলক্ষে পাঞ্জাবি ছাড়াও টি-শার্ট, পলো-শার্ট ক্যাজুয়াল ও ফরমাল শার্ট, কুর্তা, ব্লেজার, ফতুয়া ও প্যান্টের বড় কালেকশন নিয়ে এসেছে তারা।
দর্জিবাড়ি রাজশাহী শাখার প্রধান মো. পিয়াস আলী বলেন, ‘সারা বছরের তুলনায় ঈদের সময় ব্যবসা ভালো হয়। এবারও তেমন চলছে। আর ঈদে তরুণদের কথা মাথায় রেখে আমরা সবচেয়ে এক্সক্লুসিভ পাঞ্জাবি নিয়ে এসেছি। অন্য যেকোনো বিদেশি ব্র্যান্ডের তুলনায় আমাদের পোশাক আরামদায়ক হবে।’
রাজশাহী স্থানীয় ব্র্যান্ড হলো শিকড়। এই ব্র্যান্ড ২০১৪ সাল থেকে দেশীয় প্রায় সবকিছু দিয়ে নারীদের পোশাক তৈরি করে আসছে। হাতের কাজ ও এমব্রয়ডারি হলো তাদের প্রধান বৈশিষ্ট্য। মূলত অল্প দামে ভালো পোশাক ক্রেতাদের পৌঁছে দেওয়া এই ব্র্যান্ডের লক্ষ্য। এই ব্র্যান্ড শুধু নারীদের পোশাক তৈরি করে থাকে।
শিকড় ব্র্যান্ডের কর্ণধার নাজমুল হাসান জানান, ‘প্রায় ১০ বছর ধরে নারীদের পোশাক নিয়ে কাজ করছি। শুকরিয়া, ভালোই সারা পেয়েছি। আমাদের অন্য কোনো জায়গায় ব্রাঞ্চ নেই, তবে সারা দেশের বিভিন্ন দোকানে আমাদের পণ্য সরবরাহ করা হয়।’
ছবি: আব্দুস সবুর