পদ্মরেশমের সফল উৎপাদনে নতুন সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ
শেয়ার করুন
ফলো করুন

বাংলাদেশে পদ্মরেশম সফলভাবে উদ্ভাবন ও উৎপাদন সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের অর্থায়ন ও পৃষ্ঠপোষণায় 'পদ্মফুলের বৈচিত্র্য, ব্যবহার উপযোগিতা ও সংরক্ষণ' বিষয়ক গবেষণা প্রকল্পের উপজাতক হিসেবে বেঙ্গল প্ল্যান্টস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিপিআরডি) পদ্মরেশম উদ্ভাবনে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে মসলিন পুনরুজ্জীবন প্রকল্প বাস্তাবায়নের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সীমাবদ্ধ পরিসরে পদ্মরেশমের কাপড় তৈরিতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। বলা যায়, বাংলাদেশে পদ্মরেশমের সফল উদ্ভাবন আমাদের বস্ত্রবয়ন শিল্পে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

পদ্মের ডাঁটা থেকে সুতা কাটা হচ্ছে
পদ্মের ডাঁটা থেকে সুতা কাটা হচ্ছে
 নানা রংয়ের পদ্মরেশম সুতা
নানা রংয়ের পদ্মরেশম সুতা

এই সুতা পরীক্ষামূলকভালে ৭ ধরণের রং করা হয়। গর্ততাঁতে জামদানি বয়নকৌশল অবলম্বনে এই সুতা থেকে প্রাথমিকভাবে ৬ গজ দৈর্ঘ্যের একটি স্কার্ফ বোনা হয়। একটি বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনকে প্রদান করা হয়েছে। সেগুনবাগিচায় তাদের অফিসে গেলে এই স্কার্ফটি দেখা যাবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মো. তাজউদ্দিন। তিনি মনে করেন অতীব সম্ভাবনার এই সিল্ককে প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তার মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করে দেওয়া যেতে পারে।

বিজ্ঞাপন

নেপথ্যের কুশীলব

পদ্মরেশম বা লোটাস সিল্কের বাংলাদেশে সফল উদ্ভাবন ও উৎপাদন সম্ভব হয়েছে কয়েকজনের ঐকান্তিক সম্পৃক্ততার কারণে। এক্ষেত্রে অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেন বেঙ্গল প্ল্যান্টস রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিপিআরডি) চেয়ারম্যান শিকদার আবুল কাশেম শামসুদ্দীন। এই প্রকল্পে পরামর্শক ছিলেন ঢাকা বিশ্বিদ্যালয়ের সুপারনিউমেরারি অধ্যাপক প্রফেসর ড. রাখহরি সরকার। তবে 'পদ্মফুলের বৈচিত্র্য, ব্যবহার উপযোগিতা ও সংরক্ষণ' বিষয়ক গবেষণা প্রকল্প থেকে শুরু করে পদ্মরেশম প্রকল্পে নানাভাবে সহায়তা ও পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মো. তাজউদ্দিন।

বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল জুবাইদা মান্নানকে হস্তান্তর করা হচ্ছে পদ্মরেশমের স্কার্ফ। সঙ্গে আছেন বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মো. তাজউদ্দিন ও বিপিআরডির চেয়ারম্যান শিকদার আবুল কালাম শামসুদ্দীন
বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল জুবাইদা মান্নানকে হস্তান্তর করা হচ্ছে পদ্মরেশমের স্কার্ফ। সঙ্গে আছেন বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মো. তাজউদ্দিন ও বিপিআরডির চেয়ারম্যান শিকদার আবুল কালাম শামসুদ্দীন
নিজে বোনা পদ্মরেশম কাপড় হাতে ওস্তাদ কারিগর আছিয়া
নিজে বোনা পদ্মরেশম কাপড় হাতে ওস্তাদ কারিগর আছিয়া

এছাড়া সুতা কাটা, রং করা ও কাপড় বোনায় সহায়তা করেছেন তাঁত বোর্ডের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন বিভাগের প্রধান এবং মসলিন পুনরুদ্ধার প্রকল্পের পরিচালক মো. আইয়ুব আলী, ব্যবস্থাপক (অপারেশনস) মো. মঞ্জুরুল ইসলাম। তাঁদেরকে সহায়তা করেছেন মসলিন প্রকল্পের সহায়তাকারী মো. মোহাইমিনুল ইসলাম। পদ্মরেশম সুতা থেকে কাপড় বুনেছেন সোনারগাঁর ওস্তাদ কারিগর মো. আছিয়া বেগম।

বিজ্ঞাপন

পদ্মরেশম সুতার গঠনপদ্মের ডাঁটায় থাকে অসংখ্য ছোট ছোট কূপ বা পোর। সেখানে জমা থাকে আঠাসদৃশ পদার্থ। এই আঠা বাতাসের সংস্পর্শে এসে জমাট বেঁধে যায়। সেটা নিপুণতার সঙ্গে পাকিয়ে সুতা তৈরি করা হয়ে থাকে। এই সুতা বাতাসে দ্রুতই শুকিয়ে যায়। রোদে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। এই সুতা থেকেই কাপড় তৈরি হয়। উল্লেখ্য গোলাপী পদ্মের (Nelambo Nucifera) ডাঁটা পদ্মরেশম সুতা তৈরির জন্য আদর্শ। অন্য পদ্ম থেকেও সুতা তৈরি হতে পারে। তবে অন্যান্য পদ্মের ডাঁটায় সেলুলোজের পরিমাণ কম থাকায় বাণিজ্যিকভাবে সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম।পদ্মডাঁটার আঠাসদৃশ এই পদার্থ এক ধরণের জৈবযৌগ। এটা বস্তুত সেলুলোজ, হেমিসেলুলোজ ও অন্যান্য উপাদানের (পেকটিন, লিগনিন, ফ্যাট ও অ্যামাইনো অ্যাসিড) সমষ্টি; যা বাতাসের সংষ্পর্শে এসে জমাট বাঁধে। ফলে নির্দিষ্ট পদ্ধতি অবলম্বন করে এই আঠাকে সুতায় রূপান্তর করা হয়। পদ্মরেশমের বৈশিষ্ট্য পদ্মরেশম সুতার রং হালকা দুধে হলুদ। এর ঘনত্ব প্রতি সেন্টিমিটারে ১.১২ গ্রাম। সুতি সুতা ও মালবেরি সিল্ক সুতার চেয়ে এই সুতা শক্ত, টেকসই ও শতভাগ পানিরোধী; তবে অধিক প্রসারণযোগ্য না হলেও এই সুতা কোঁচকায় না (অথ্যাৎ রিঙ্কল ফ্রি)। এই সুতা প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল, কোমল ও বায়ু চলাচলকারী।

পদ্মের ডাঁটার আঠা থেকে সুতা কাটা হচ্ছে
পদ্মের ডাঁটার আঠা থেকে সুতা কাটা হচ্ছে

এতে চমৎকার রং ধরে এবং যে কোন রং করলেই তা আরো সুন্দর হয়। এই সুতা প্রাকৃতিক, অর্গানিক ও ভেগান। উপরন্তু এর উৎপাদন প্রক্রিয়ায় কোন কীটপতঙ্গের প্রাণহানি হয় না। এজন্য প্রাণিজ উৎস থেকে উৎপাদিত পণ্যের বিরোধীদের কাছে লোটাস সিল্ক বিশেষভাবে আদৃত। বস্তুত অন্যান্য যে কোন সিল্ক সুতার চেয়ে পদ্মরেশম সুতা কাটা সহজ ও পরিবেশবান্ধব। এই সুতা উৎপাদনে পানির প্রয়োজন হয় না এবং জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার না হওয়ায় কার্বন নিঃসরণও হয় না। ফলে জলবায়ু পরিবর্তনে কোন ভূমিকা রাখে না।

লোটাস সিল্কের উৎপত্তি

আমাদের দেশে পদ্মরেশম বা লোটাস সিল্ক নতুন হলেও, পূর্ব এশিয়ায়, বিশেষত মিয়ানমার, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া এর উৎপাদনের আছে দীর্ঘ ইতিহাস। এর উদ্ভাবক হিসেবে প্রথম নাম আসে মিয়ানমারের উইম সান নামক এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসিনীর, যিনি ১৯ শতকে এই প্রক্রিয়ার সূচনা করেন। ২০১৭ সাল থেকে ভিয়েতনাম, ২০০৩ সাল থেকে কম্বোডিয়া বাণিজ্যিকভাবে পদ্মেরশমের কাপড় তৈরি শুরু করে। ভারত যোগ দিয়েছে ২০১৯ সাল থেকে।

গর্ততাঁতে বোনা হচ্ছে এই অত্যন্ত দামী কাপড়
গর্ততাঁতে বোনা হচ্ছে এই অত্যন্ত দামী কাপড়

সারা বিশ্বে লোটাস সিল্ক অত্যন্ত দামী কাপড়গুলোর অন্যতম হিসেবে সুবিদিত। অতীতে কম্বোডিয়া ও মিয়ানমারের বৌদ্ধভিক্ষুরা পবিত্র, স্বর্গীয় ও শান্তির প্রতীক হিসেবে প্রাকৃতিক রংয়ে রাঙানো লোটাস সিল্ক পরতেন।

সুতা কাটার পদ্ধতি

সাধারণ পদ্মের ১–২টি ডাঁটা নিয়ে এক ইঞ্চি পর পর ভাঙার পর যে আঠা নির্গত হয় সেটা পাকিয়েই সুতা তৈরি করা হয়ে থাকে। তবে এই ডাঁটা সংখ্যার বেশি হলে সুতা মোটা হবে। আর ডাঁটার সংখ্যা কম হলে সুতা সরু হবে। এই আঠার বৈশিষ্ট্য অনেকটা  ফুটি কার্পাস তুলার মত বলে আমাদের দেশের দেশের মেয়েদের পক্ষে উন্নতমানের সুতা কাটা সম্ভব। আর সেটা প্রমাণও করেছেন ফরিদপুরের কানাইপুরের রনকাইল গ্রামের মহিলারা। মাত্র তিনদিনের প্রশিক্ষণেই তাঁরা চমৎকার মানের সুতা কাটতে সক্ষম হয়েছেন। বাংলাদেশে সাধারণত আগস্ট থেকে ডিসেম্বর মাস সুতা কাটার ভাল সময়। ঐ সময়ে মেয়েদের তেমন কোন কাজ থাকে না। অন্যদিকে পদ্মও এই সময়ে ভাল পাওয়া যায়। এই সিল্ক উৎপাদন কৃষির সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত হওয়ায় গ্রামীণ নারীদের জন্য এটি আয়ের নতুন উৎস হতে পারে। এজন্য এই প্রকল্প বাণিজ্যিকভাবে বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় প্রচুর দক্ষ কাটুনি তৈরি হবে এবং তাঁরা এই কাজের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে।

পদ্মের ডাঁটা থেকে সুতা কাটার পদ্ধতি
পদ্মের ডাঁটা থেকে সুতা কাটার পদ্ধতি

বাংলাদেশের সম্ভাবনা

বিপিআরডির গবেষণার সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় নানা আকারে অন্তত ৩৫–৪০টি বিল আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় বিলগুলো সরকারি মালিকানাধীন। এসব বিলে সারা বছর পানি থাকে এবং পদ্ম সংগ্রহ করা যেতে পারে। আবার কিছু বিল আছে সরকার ও ব্যক্তি যৌথ মালিকানার। উল্লেখ্য পদ্মের ডাঁটা কেটে নিলে পানির নিচে পুনরায় বাড়তে থাকে। এই বৃদ্ধি প্রতিদিন অন্তত ৬–৮ ইঞ্চি। ফলে প্রতি মাসে কম করে পাঁচবার পদ্মের ডাঁটা সংগ্রহ করা সম্ভব বলে জানিয়েছে পদ্ম গবেষক শিকদার আবুল কাশেম শামসুদ্দীন। বর্তমান উৎপাদন ও রপ্তানি পরিস্থিতিবর্তমানে লোটাস সিল্ক উৎপাদনে সবচেয়ে এগিয়ে আছে কম্বোডিয়া। এই দেশটির সিম রিপ অঞ্চলে লোটাস সিল্ক কাপড় সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হয়। এরপর আছে ভিয়েতনাম। তবে উৎপাদনের পরিমাণ জানা যায় না। অন্যদিকে রপ্তানিতে এগিয়ে অবশ্য মিয়ানমার ও ভিয়েতনাম। এই দুই দেশের সিল্ক কাপড় আন্তর্জাতিক বাজারে উচ্চ মূল্যে বিক্রি হয়; এই কাপড় দিয়ে বিলাসবহুল পোশাক ও অনুষঙ্গ তৈরি হয়। গুণগত মানের ওপর নির্ভর করে এক গজ লোটাস সিল্ক কাপড়ের দাম পড়ে ২৫০ থেকে ১০০০ মার্কিন ডলার। অন্যদিকে এক কিলোগ্রাম সুতার দাম ২০০০ থেকে সাড়ে ৩ হাজার মার্কিন ডলার হয়ে থাকে। সুতার মানের ওপর নির্ভর করে এর দামে।

বিলের থেকে পদ্মের ডাঁটা সংগ্রহ করে নৌকায় বসে পদ্মরেশম সুতা দেখাচ্ছেন পদ্ম গবেষক শিকদার আবুল কালাম শামসুদ্দীন
বিলের থেকে পদ্মের ডাঁটা সংগ্রহ করে নৌকায় বসে পদ্মরেশম সুতা দেখাচ্ছেন পদ্ম গবেষক শিকদার আবুল কালাম শামসুদ্দীন
বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মো. তাজউদ্দিনকে পদ্ম সিল্ক দেখাচ্ছেন পদ্ম গবেষক শিকদার আবুল কালাম শামসুদ্দীন
বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মো. তাজউদ্দিনকে পদ্ম সিল্ক দেখাচ্ছেন পদ্ম গবেষক শিকদার আবুল কালাম শামসুদ্দীন

গবেষণায় জানা গেছে, এক কিলোগ্রাম সুতা তৈরি করতে অন্তত ৩০ হাজার পদ্মের ডাঁটার প্রয়োজন হয়। পাইলট প্রকল্পের অভিজ্ঞতার নিরীখে মো. আইয়ুব আলী আলী মনে করেন, বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হলে সুতা তৈরিতে অন্যদেশের তুলনায় অনেক কম পদ্মের ডাঁটা প্রয়োজন হবে এবং মিহি সুতা কাটা সম্ভব হবে। এছাড়া অধিক কাপড়ের উৎপাদন বাড়াতে জ্যাকার্ড ও আধা–স্বয়ংক্রিয় তাঁত ব্যবহার করা যেতে পারে। অন্যদিকে আবুল কালাম শামসুদ্দীনের অভিমত, আমাদের দেশে মজুরি কম হওয়ায় সুতা কাটা এবং কাপড় উৎপাদন ব্যয় কম হবে। ফলে আমাদের পক্ষে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা করা সহজ হবে।  বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মো. তাজউদ্দিন মনে করেন অতীব সম্ভাবনার এই সিল্ককে প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তার মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করে দেওয়া যেতে পারে।

অধিকতর উৎপাদনের জন্য করণীয়

বাংলাদেশে লোটাস সিল্কের উৎপাদন বাড়াতে কিছু বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের।

গবেষণা ও উন্নয়ন: পদ্ম ফুলের জাত উন্নয়ন এবং সিল্ক উৎপাদন প্রক্রিয়া সহজ করার জন্য গবেষণা চালানো। বাণিজ্যিকভাবে পদ্মফুলের চাষ করা।

বিল রক্ষা: বৃহত্তর স্বার্থে বিলের ইজারা উঠিয়ে দিয়ে পদ্ম চাষের উদ্যোগ নিতে হবে। কৃত্রিমভাবে মাছ চাষ বন্ধ করে প্রাকৃতিকভাবে মাছ জন্মাতে দিলেই বিলগুলো রক্ষা পাবে।

প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা: গ্রামীণ নারীদের দক্ষ কাটুনি হিসেবে গড়ে বিলের ইজারা উঠিয়ে দিয়ে পদ্ম চাষে মনোযোগ দিতে হবে। আর কৃত্রিমভাবে মাছ চাষ বন্ধ করে প্রাকৃতিকভাবে মাছ জন্মাতে দিলেই বিলগুলো রক্ষা পাবে। বোনার জন্য সংশ্লিষ্ট পেশাদারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া।

অর্থায়ন ও নীতি সহায়তা: সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অর্থায়ন ও নীতিগত সহায়তা দেওয়া।

গোলাপি পদ্ম  পদ্ম চাষের উদ্যোগ নিতে হবে
গোলাপি পদ্ম পদ্ম চাষের উদ্যোগ নিতে হবে

বাজার তৈরি: স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের লোটাস সিল্কের যথাযথ ব্র্যান্ডিং করে প্রচারণা চালানো।

মেধাসত্ত্ব সংরক্ষণ: ইতিমধ্যে এই রেশমের মেধাসত্ত্ব সংরক্ষষণের জন্য আবেদন করা হয়েছে। তাঁত বোর্ডের সম্পৃক্ততাভবিষ্যতে বাণিজ্যিকভাবে পদ্মরেশমের সুতা কাটা ও কাপড় তৈরিতে বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের সম্পৃক্ততার প্রয়োজন হবে। এজন্য এই প্রাথিমক প্রকল্পে সংশ্লিষ্ট থাকতে ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি মাসে আবেদন করা হলেও তাঁত বোর্ডের তদানীন্তন চেয়ারম্যানের অনুমতি মেলেনি। এরপর ২০২৪ সালের ৯ ডিসেম্বর পুনরায় আবেদন করলে এর গুরুত্ব বিবেচনায় এ বছরের ১১ জানুয়ারি তাঁরা অনুমোদন পেয়েছেন বলে জানান মো. আইয়ুব আলী।  

পরিশেষে বলা যায়, বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে ভ্যালু অ্যাডেড পোশাক তৈরির সক্ষমতার উপর। অন্তত বিশেষজ্ঞরা সেটাই বলছেন। এক্ষেত্রে দেশিয় হেরিটেজ টেক্সটাইলের পাশাপাশি নতুন সম্ভাবনার পদ্মরেশম হতে পারে তুরুপের তাস। যথাযথ পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়ন বিশ্বের বিলাসী পোশাকের বাজারে পদ্মরেশম দিয়ে বাংলাদেশ জায়গা করে নিতে সক্ষম হবে এবং বিদেশি মুদ্রা আয়েও ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আশা করা যায়। পাশাপাশি পদ্মেরশম উৎপাদনক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বজুড়ে আদৃতও হবে।  

ছবি: বিপিআরডি ও তাঁত বোর্ড

প্রকাশ: ০৭ মার্চ ২০২৫, ১৬: ০০
বিজ্ঞাপন