‘ব্রাজিলিয়ান’, ‘সুদর্শন’—শব্দগুলো একসঙ্গে শুনলেই যে নামটি প্রথমেই মাথায় আসে, তা হলো রিকার্ডো কাকা। তিনি শেষ বিশ্বকাপ খেলেছেন ২০১০ সালে। তবে এবারের বিশ্বকাপে ব্রাজিল ফুটবল দলে যদি দু-একজন স্টাইলিশ ও সুদর্শন খেলোয়াড়ের তালিকা করা হয়, তাহলে অ্যালিসন রামসেস বেকারের নাম আসবেই।
গোলপোস্টে সদর্পে দাঁড়িয়ে থাকা ৬ ফুট ৩ ইঞ্চির এই ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টারকে চেনে না, এমন ফুটবল ভক্ত নেই বললেই চলে। তবে ফুটবল মাঠের বাইরেও অ্যালিসন বেকারের দারুণ জনপ্রিয়তা রয়েছে। সুদর্শন এই ফুটবলার তাঁর স্টাইল ও ফ্যাশনের জন্য সব সময় আলোচিত। অ্যালিসন বেকারের লাইফস্টাইল ও ফ্যাশন সম্পর্কে তাই জেনে নেওয়া যেতেই পারে।
লিভারপুলের সুপারস্টার অ্যালিসন বেকার আলোচনায় থাকেন একেক সময় তাঁর চুল ও দাড়ির একেক স্টাইলের জন্য। কখনো তাঁকে দেখা যায় লম্বা চুলে আবার হঠাৎ মাঠে উপস্থিত হন চুল ছোট করে। দাড়ির ক্ষেত্রেও একই দৃশ্য। কখনো মুখভর্তি দাড়ি আবার কখনো ক্লিন শেভড। এই তো বিশ্বকাপ শুরুর আগে লিগের শেষ ম্যাচেই লিভারপুলের হয়ে খেলতে নামলেন ক্লিন শেভড হয়ে। কে জানে বিশ্বকাপ চলাকালেই আবার হয়তো তিনি বদলে ফেলবেন লুক।
কখনো কখনো তিনি শুধু গোঁফ রেখেই হাজির হন ক্যামেরার সামনে। তাঁর এই হঠাৎ লুক বদলের প্রবণতার সম্পর্কে তাঁর ভক্তরাও অবগত। তাই তো তাঁর নতুন লুক দেখার জন্য সব সময়ই তাঁদের মধ্যে থাকে উত্তেজনা। তবে তিনি যেই লুকেই মাঠে আসুন না কেন, ভক্তরা ভালোবাসেন এই ফুটবলারকে।
লিভারপুলের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ বেকার নাইকির জামাকাপড় ও অ্যাকসেসরিজ ব্যবহার করতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। ফুটবল মাঠে গ্লাভস ব্যবহার করেন নাইকির ভেপর গ্রিপ থ্রি; আর বুট হলো নাইকি টিয়েমপো লেজেন্ড নাইন। মাঠের বাইরেও অ্যালিসনকে নাইকির পোশাক ও অন্যান্য অ্যাকসেসরিজ পরতে দেখা যায়। অ্যালিসন শার্ট, টি-শার্ট ইত্যাদির সঙ্গে টুপি বা হ্যাট পরতে ভালোবাসেন।
সলিড গোল্ড রোলেক্স ডেটোনা ঘড়ি থাকে হাতে। নিজের ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলে তিনি এই ঘড়ি পরে ছবি পোস্ট করেছেন। তবে বিটস বাই ড্রের সঙ্গেও রয়েছে তাঁর এনডোর্সমেন্ট চুক্তি।
খাবারের ব্যাপারে বেশ শৌখিন ব্রাজিলিয়ান এই তারকা। ইতালিয়ান ফুড সবচেয়ে প্রিয় তাঁর। পানীয় হিসেবে কফিকেই প্রাধান্য দেন। তবে প্রতিদিন সকালে ফলের জুস খেতে পছন্দ করেন বেকার। এ ছাড়া ফিটনেসের জন্য আলাদা ডায়েট চার্ট ফলো করেন। পরিবার নিয়ে বিভিন্ন দেশের রেস্টুরেন্টে খেতেও ভালোবাসেন অ্যালিসন বেকার।
গাড়ির প্রচণ্ড অনুরাগী এই ফুটবল তারকা। তাঁর প্রতিদিনের সঙ্গী অডি কিউ-সেভেন। এ ছাড়া রেঞ্জ রোভার স্পোর্ট গাড়িটি তিনি ব্যবহার করেন পরিবারের সঙ্গে ঘোরাঘুরির জন্য ফ্যামিলি কার হিসেবে। তৃতীয় আরেকটি গাড়ি রয়েছে তাঁর। সেটা মার্সিডিজ বেঞ্জ এস ক্লাস। এটাই তাঁর সবচেয়ে দামি গাড়ি।
ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি জেনেরিওতে সমুদ্রের দিকে মুখ করা একটি বিলাসবহুল বাড়ি রয়েছে বেকারের। ব্রাজিলে গেলে সেখানে তাঁর পরিবার নিয়ে থাকেন। তবে লিভারপুলেও আছে নিজের বাড়ি।
তবে কেবল মাঠে নন, মাঠের বাইরেও রয়েছে তাঁর কার্যক্রম। শিশুদের খেলাধুলায় আগ্রহী করা এবং শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। এ জন্য ২০১৯ সালে তাঁকে শুভেচ্ছাদূত নিযুক্ত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাঁর স্ত্রী ডা. নাতালিয়া লোয়ে বেকারও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একজক শুভেচ্ছাদূত।