‘গজনি’র সিক্স প্যাক অ্যাবস থেকে শুরু করে ‘দঙ্গল’-এর ওজন বেড়ে যাওয়া আর তারপর আবার তা ঝরিয়ে ফেলা। প্রতিটি পর্যায়েই নিজের শরীর ও মনের ওপর দারুণ নিয়ন্ত্রণ দেখিয়েছেন আমির। তবে ৬০ বছর বয়সে এসে এই সুপারস্টার যা বললেন, তা হতে পারে অনেকের জন্য চমকপ্রদ! সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যম লাল্লনটপ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আমির খান জানিয়েছেন, ‘‘ফিটনেস ধরে রাখার তাঁর মূল মন্ত্র হলো: ডায়েট, বিশ্রাম ও ব্যায়াম। এই তিনটির সঠিক সমন্বয়।’’
আমির জানান, নিজের জন্য তিনি একটি নিয়ম বানিয়েছিলেন। ‘‘যতক্ষণ না ওয়ার্কআউট শেষ হচ্ছে, ততক্ষণ আমি অন্য কোনো কাজ করব না। এমনকি এডিটিং-এও যাই না।"
এই কঠোর নিয়মই তাঁকে প্রতিদিনের ফিটনেস রুটিনে ধরে রাখতে সাহায্য করেছে। তবে এত কড়া নিয়ম পালনের পাশাপাশি একটি চমকপ্রদ সত্যি কথা বলেন তিনি, “সত্যি বলতে, আমি খুব অলস প্রকৃতির। ওয়ার্কআউট করতে ভালো লাগে না”।
২০০৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘গজনি’ সিনেমার জন্য আমির খান এক ভয়ংকর কঠিন ফিটনেস চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিলেন। রাজ শামানির পডকাস্টে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আমির বলেন, “প্রথমে আমি ২০০টা অ্যাবস র্যাপ দিয়ে ব্যায়াম শুরু করেছিলাম। ধীরে ধীরে সেটা ১,০০০-এ পৌঁছেছিল। এরপর ছিল ৯০ মিনিটের স্ট্রেংথ ট্রেনিং। তারপর আরও ১ ঘণ্টা কার্ডিও। সব মিলিয়ে প্রতিদিন ৩ থেকে ৩.৫ ঘণ্টা করে ব্যায়াম করতাম।”
তিনি আরও বলেন, ‘‘শেষে আমি এতটাই ক্লান্ত হয়ে পড়তাম যে, স্নান করে সোজা ঘুমিয়ে পড়তাম।’’
তবে এখন এসে নিজের পুরোনো পন্থা নিয়ে একধরনের অনুশোচনাও প্রকাশ করেন আমির। বলেন, “আমি মনে করি আমি ওভার ট্রেনিং করেছি। ৩ থেকে ৩.৫ ঘণ্টা প্রতিদিন ব্যায়াম করা একদমই উচিত নয়। এটা শরীরের ওপর প্রচণ্ড চাপ ফেলে।” তিনি আরও বলেন, ‘এর বদলে এখন যা মেনে চলছি তা অনেক বেশি বৈজ্ঞানিক ও ভারসাম্যপূর্ণ। ভালো স্বাস্থ্যের জন্য শরীরকে বিশ্রাম দিতে হবে, উপযুক্ত খাবার খেতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যায়াম করতে হবে। এই তিনটি বিষয়ে ভারসাম্য রাখতে হবে। আর সত্যি বলতে, ঠিক এভাবেই করা উচিত। প্রথমে বিশ্রাম, তারপর খাবার, তারপর ব্যায়াম।”
‘দঙ্গল’-এর সময় আমির শিখেছিলেন কীভাবে ‘স্মার্ট ওয়ার্কআউট’ করতে হয়। তখন তিনি বুঝেছিলেন, শুধু বেশি সময় ব্যায়াম করলেই ফল পাওয়া যায় না। বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে শরীরের চাহিদা বুঝে ব্যায়াম করতে হয়, তাহলেই দীর্ঘস্থায়ী ফিটনেস পাওয়া সম্ভব।
আমির খানের এই ফিটনেস দর্শন অনেকের জন্য এক বড় শিক্ষা। অনেকেই ভাবেন, সুস্থ থাকতে হলে প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা জিমে কাটাতে হবে। কিন্তু আমির বলছেন, আসল চাবিকাঠি হচ্ছে ‘ব্যালেন্স’। আপনার বিশ্রাম, খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়ামের মাঝে যে সামঞ্জস্য, সেটাই আপনাকে সুস্থ রাখবে।
ছবি: আমির খান’স প্রডাকশনস–এর ইনস্টাগ্রাম