শৈশবে সানি লিওন নিজের পা নিয়ে অনেক দ্বিধায় থাকতেন। কানাডার শ্বেতাঙ্গ প্রধান সমাজে বেড়ে ওঠা এই পাঞ্জাবি বংশোদ্ভূত অভিনেত্রী জানান, গায়ের রং আর ঘন কালো চুলের জন্য সহপাঠীদের থেকে নিজেকে আলাদা মনে হতো নিজেকে। তিনি বলেন, “ছোটবেলায় আমার পা ভীষণ অপছন্দ ছিল। স্কুলে অন্য মেয়েদের সোনালি চুল আর ত্বকের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করে। আমি আমাকেই আড়াল করতে চাইতাম। তাই কখনো পা দেখাতে চাইতাম না।”
কিন্তু বয়সের সঙ্গে বদলেছে দৃষ্টিভঙ্গি। ধীরে ধীরে তিনি উপলব্ধি করেছেন, শরীরের প্রতিটি অংশই আসলে তার নিজের সৌন্দর্যের অংশ। এখন তিনি ছোট স্কার্ট বা শর্টস পরতে দ্বিধা করেন না। বরং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে উপভোগ করেন নিজের লুক। সম্প্রতি হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সানি লিওন বডি পজেটিভিটি নিয়ে কথা বলেছেন।
সানি লিওন সাক্ষাৎকার শুরু করেন অনেকটা এভাবে, ‘‘৪৪ বছর বয়সে এসে আমি ব্যস্ত ও সুখী জীবন কাটাচ্ছি নিজের পরিবার, অর্থাৎ আমার স্বামী ও তিন সন্তান নিশা, নোহা এবং অ্যাশারকে নিয়ে। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস আর নিয়মিত যত্নই আমার উজ্জ্বল ত্বক ও প্রাণবন্ত জীবনের একমাত্র রহস্য।
বয়স বাড়াকে অনেকেই ভয়ের মনে করেন। তবে সানির মতে, আয়নায় নিজেকে দেখে যদি খুশি থাকা যায়, সেটিই আসল সৌন্দর্য। আর কেউ যদি চেহারায় পরিবর্তন আনতে চান, তাতেও সমস্যা নেই। ইনজেকশন, ফিলার, লেজার বা যেকোনো চিকিৎসা যদি আপনাকে খুশি করে, তবে তা-ই করুন। কিন্তু সব সময় সঠিক চিকিৎসক বেছে নিতে হবে। ভুল হাতে পড়লে ক্ষতি মেরামত করতে অনেক সময় লেগে যায়। এ বিষয়ে অবশ্যই সতর্ক থাকা উচিত।
সব সময় নিজেকে ‘পারফেক্ট’ দেখানোর চাপে থাকেন না সানি। তার মতে, “আমি শুধু নিশ্চিত করি যেন আমি ভেতর থেকে ভালো অনুভব করি। স্বাস্থ্যকর খাবার খাই, শরীরচর্চা করি। আমরা যা খাই তারই প্রতিফলন দেখা যায় আমাদের চেহারায়।”
প্রাণী কল্যাণ সংগঠন ‘পেটা’-র সমর্থক সানি লিওন মাংস খাওয়া থেকে নিজেকে দূরে রেখেছেন। কারণ, মাংস ও প্রাণিজ পণ্যে থাকা হরমোন ও পিজারভেটিভকে তিনি শরীরের জন্য ক্ষতিকর মনে করেন। তার বিশ্বাস, নিরামিষ খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চাই শরীর-মনকে ভালো রাখার প্রথম ধাপ।
বডি পজেটিভিটি নিয়ে সানি লিওন বেশ স্পষ্ট ভাষায় বলেন, শরীর নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু বয়সের সঙ্গে সঙ্গে আত্মবিশ্বাসী হওয়াই আসল। নিজের শরীরকে যেমন আছে তেমনই ভালোবাসা, আর সুস্থ জীবনধারাই এনে দিতে পারে ভেতরের শান্তি ও বাইরের সৌন্দর্য।