আলিয়া ভাটকে বর্তমান সময়ে বলিউডের সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেত্রী বললে খুব একটা অত্যুক্তি হবে না। তবে পরমা সুন্দরী এই তারকাকে ক্যারিয়ারের শুরুতেই ভাট-তনয়া হিসেবে বেশি সুবিধা পাওয়ার মতো অভিযোগ সামাল দিতে হয়েছে। সদাহাস্যময় আর মিষ্টি অথচ দৃঢ় স্বভাবের আলিয়া এসব সমালোচনার জবাব দিয়েছেন তাঁর মেধা, পরিশ্রম আর কাজ দিয়ে৷ হালকা মেজাজের টিপিকাল বলিউড মুভি ছাড়াও নন গ্ল্যামারাস আর জটিল সব চরিত্র করেছেন একের পর এক৷ পেয়েছেন সবার ভূয়সী প্রশংসা।
তবে সত্যিকারের শক্তিশালী কিংবদন্তি নারী অধিকার নেত্রী গাঙ্গুবাইয়ের ভূমিকায় অভিনয় করে তিনি যেন নিজেকেই ছাড়িয়ে গেছেন। ফলে মিলেছে জাতীয় পুরস্কারের মতো স্বীকৃতি। আর এই সম্মাননা পেয়েছেন তিনি বলিউডের আরেক মেধাবী অভিনেত্রী কৃতি শ্যাননের সঙ্গে যৌথভাবে।
আলিয়া ভাটের সর্বস্তরে এত জনপ্রিয়তার আরেক কারণ তিনি এক পরিবারেকেন্দ্রিক মানুষ। কোটি মানুষের স্বপ্নের নায়িকা হয়েও তিনি এক প্রেমময়ী স্ত্রী আর মমতাময়ী মা। বলিউডের একসময়ের ক্যাসানোভা বলে খ্যাত রণবীর কাপুরের সঙ্গে গভীর প্রণয়ের পর তাঁদের পরিণয়ের পর্বটিও সবাইকে উদ্বেল করেছিল। বলিউডের ইতিহাসের স্মরণীয় এক বিবাহ অনুষ্ঠান হয়ে থাকবে আলিয়া-রণবীরের গাঁটছড়া বাঁধার দিনটি। আর কনে রূপে মোহনীয় আলিয়ার সাজপোশাক এখনো উজ্জ্বল সবার স্মৃতিতে। আর সেই বিয়ের শাড়িতেই আলিয়া ভাট জাতীয় পুরস্কার গ্রহণ করে সবাইকে অবাক করে দেন। কারণ, সচরাচর এত লাইমলাইটে থাকা তারকারা একেকটি বিশেষ দিনে অত্যন্ত এক্সক্লুসিভ সব পোশাক পরে থাকেন যা শুধু সেদিনটিকে লক্ষ্য রেখেই তৈরি করা হয়।
আলিয়া ভাট অবশ্য খুব স্পষ্টভাবেই জানিয়ে দিয়েছেন বিয়ের শাড়ি পরে জাতীয় পুরস্কার গ্রহণের পেছনের কারণ। তাঁর বয়ানে, এমন বিশেষ দিনে পোশাকটিও হতে হবে বিশিষ্ট। কিন্তু কখনো কখনো কোনো একটি বিশেষ আর খুব তাৎপর্যপূর্ণ পোশাক আগে থেকেই থাকে আমাদের কাছে। একবার যেটি বিশেষ কিছু ছিল, সেটি বারবারই বিশিষ্ট হয়ে থাকবে। আর নিঃসন্দেহে সেটি তাঁর বিয়ের শাড়ি।
রিওয়্যার, রিইউজ, রিপিট—এই তিন হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে তিনি সব সময়ের মতো পরিবেশ রক্ষায় তাঁর জোরালো অবস্থান জানালেন। অনেকেরই হয়তো মনে আছে, এই একই কারণে আলিয়া ভাট পুরোনো কাপড়ের টুকরা প্যাচওয়ার্ক করে জোড়া লাগানো লেহেঙ্গা পরেছিলেন তাঁর মেহেদি অনুষ্ঠানে।
ভারতীয় তারকা ডিজাইনার সব্যসাচী মুখার্জির তৈরি স্মৃতিবহ বিয়ের শাড়িটি এবার একটু অন্যভাবে জড়িয়েছেন গায়ে। স্টাইলিং আলাদা বলে লাগছেও সেদিনের চেয়ে একেবারে অন্য রকম। চুলে খোঁপা বাঁধা, সাদা গোলাপ গোঁজা তাতে। ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুরমুর কাছ থেকে পুরস্কার নেওয়ার সময় গর্বিত হাসিতে উজ্জ্বল আলিয়া যেন দ্যুতি ছড়াচ্ছিলেন আরেক এমন খুশির দিনের স্মৃতিমাখা বিশেষ শাড়িটিতে৷ এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে আলিয়া বলিউডে এক নতুন ট্রেন্ডের শুভসূচনা করলেন, যেখানে এক পোশাক একাধিকবার পরাকে মানুষ শ্রদ্ধার চোখে দেখবে। কারণ, নিজেরা পুনর্ব্যবহার আর পুনর্চক্রায়ন অনুশীলন না করে শুধু মুখে পরিবেশ বাঁচানোর কথা বলে লাভ নেই।
ছবি: ইন্সটাগ্রাম