৫০০ মিলিয়ন ডলারের এই বিলাসবহুল ভাসমান প্রাসাদে হতে যাচ্ছে বেজোস-সানচেজের রাজকীয় বিয়ে
শেয়ার করুন
ফলো করুন

অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব লরেন সানচেজ ঐতিহাসিক শহর ইতালির ভেনিসে ২৪ থেকে ২৬ জুনের মধ্যে কয়েকদিনের জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে গাঁটছড়া বাঁধছেন । শোনা যাচ্ছে, এই টেক বিলিয়নিয়ার তাঁর ৫০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের বিলাসবহুল সুপার ইয়ট কোরুতেই বিয়ের আয়োজন করছেন, যাকে ভাসমান প্রাসাদই বলা যায়।

সুপার ইয়ট কোরুকে ভাসমান প্রাসাদই বলা যায়
সুপার ইয়ট কোরুকে ভাসমান প্রাসাদই বলা যায়
এখানেই প্রপোজ করেছিলেন বেজোস লরেনকে
এখানেই প্রপোজ করেছিলেন বেজোস লরেনকে

বেজোস দুইবছর আগে এমি অ্যাওয়ার্ডজয়ী টিভি সাংবাদিক লরেন সানচেজকে তাঁর এই অভিজাত প্রমোদতরী কোরুতে ২০ ক্যারেট গোলাপি হীরার আংটি দিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এই আংটিটির দাম ২.৫ মিলিয়ন ডলার। দুই বছর পর একই ইয়টে তাঁরা বিয়ে করছেন। তাঁদের কাছে এই ইয়ট এতটাই বিশেষ। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই অভিজাত ভাসমান প্রাসাদের আদ্যোপান্ত।

বিজ্ঞাপন

বেজোসের সুপারইয়টের নাম কোরু। কোরু মাওরি শব্দ । এর অর্থ চক্র বা প্যাঁচ, যা নতুন সূচনাকে নির্দেশ করে। ২০১৮ সালে জেফ বেজোসের নির্দেশনায় ৪১৭ ফুট দৈর্ঘ্যের এই নৌযান নির্মাণ শুরু করে ডাচ প্রতিষ্ঠান ওসিয়ানকো। নেদারল্যান্ডসের রটারড্যামের কাছে এটি নির্মিত হয়। এরপর ইয়টটি প্রথম জিব্রাল্টারে পৌঁছায় ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে । পরের মাসে এর প্রথম যাত্রায় বেজোসকে দেখা যায় হেলিকপ্টারে করে ইয়টে আসতে।  

কোরুর স্ট্রাকচার ও ডিজাইন ডিটেইলস
কোরুর স্ট্রাকচার ও ডিজাইন ডিটেইলস

সর্বোচ্চ ১৮ জন অতিথি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ৯টি স্টেটরুম আছে কোরুতে । পাশাপাশি ৩৬ জন ক্রু সদস্যের থাকার ব্যবস্থাও আছে । তবে এই ইয়ট নির্মাণ কঠোর গোপনীয়তা মেনে হওয়ায় এর টেকনিক্যাল ও অন্দরের অনেক ফিচারই এখনো রহস্যই রয়ে গেছে।

বিজ্ঞাপন

ওসিয়ানকো-র ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ইয়টটির ইন্টেরিয়র ডিজাইন চিরায়ত ও আধুনিকতার সংমিশ্রণ। আর্কিটেকচারাল ডাইজেস্ট জানিয়েছে, এতে আছে একাধিক আউটডোর লাউঞ্জিং স্পেস, তিনটি জ্যাকুজি ও একটি সুইমিং পুল।  এই বৈশিষ্ট্যগুলো কোরুকে আরও আরামদায়ক ও রাজকীয় করে তুলেছে।

তিন মাস্তুলবিশিষ্ট কোরু বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সেইলিং ইয়ট
তিন মাস্তুলবিশিষ্ট কোরু বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সেইলিং ইয়ট

বোট ইন্টারন্যাশনালের মতো তিন মাস্তুলবিশিষ্ট কোরু বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সেইলিং ইয়ট। এই নৌযানটিতে রয়েছে কাইনেটিক এনার্জি প্রযুক্তি। ফলে এটি সমুদ্রের ঢেউয়ের গতি থেকে বিদ্যুৎ তৈরি করে। রাতে নোঙর অবস্থায়ও বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে রয়েছে হাইব্রিড পাওয়ার সিস্টেম ও বিশাল ব্যাটারি ব্যাংক।

সুপারইয়ট কোরুর ডেক সেগুন কাঠের তৈরি । নিচের অংশ নীল রঙের স্টিলে আর তার ওপর সাদা রঙের দুইতলা অ্যালুমিনিয়ামের সুপারস্ট্রাকচার। গোপনীয়তা রক্ষার্থে এতে রয়েছে বিশেষ নকশা । মূলত জাহাজের পেছনের অংশ ঢালু, সরু ও বাঁকা করে তৈরি করা হলে একে ক্যানো স্টার্ন বলে। এখানে সেই প্যাটার্নই দেখা যায়। সাধারণ চ্যাপটা ও খোলা নকশার অন্যান্য জাহাজের চেয়ে এর গোপনীয়তা বেশি হয়।

এই সুপারইয়টের সবচেয়ে আলোচিত দিকগুলোর আরেকটি হলো এর সামনের অংশে থাকা নারীমূর্তিটি। অনেকের কাছেই একে লরেন সানচেজের মতো মনে হয়। তবে ২০২৩ সালে ভোগ ম্যাগাজিনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সানচেজ পরিষ্কার বলেন এটি তার থেকে প্রাণিত নয়। বরং মূর্তিটি আসলে নর্স পুরাণের প্রেম, উর্বরতা ও সোনার দেবী ফ্রেয়াকে উৎসর্গ করে বানানো।  

কোরুর সঙ্গে ৭৫ মিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি সাহায্যকারী জাহাজ থাকে
কোরুর সঙ্গে ৭৫ মিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি সাহায্যকারী জাহাজ থাকে

কোরুর সঙ্গে ৭৫ মিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি সাহায্যকারী জাহাজ থাকে। বিয়ের এই আয়োজনে সেটিও থাকছে ভেনিসে। এর নাম আবেওনা। আবেওনাতে আছে হেলিপ্যাড, হ্যাঙ্গার ও ওয়াটারটয়স । একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী , এই দুটি জাহাজ রক্ষণাবেক্ষণে বেজোসের বার্ষিক খরচ হয় ৩০ মিলিয়ন ডলার। বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল বিয়ে বোধহয় একেই বলে। এখন শুধু অপেক্ষার পালা।

তথ্য: সি এন এন, পিপল

ছবি: উইকিপিডিয়া ও ইন্সটাগ্রাম

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৫, ১৭: ৫৭
বিজ্ঞাপন