আধুনিক সময়েও টিকে আছে যে ৫টি প্রাচীন রূপরহস্য
শেয়ার করুন
ফলো করুন

শত শত বছর ধরে গ্রিক, মিসরীয় ও ভারতীয়রা ত্বকের যত্নে ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে প্রাকৃতিক বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করত। এসব উপাদানের ব্যবহার আজকের আধুনিক সময়েও হচ্ছে। তাৎক্ষণিক ফলাফলের জন্য ক্ষতিকর কেমিক্যালযুক্ত বিভিন্ন প্রসাধনী ব্যবহার না করে প্রাচীন সৌন্দর্যের এসব উপাদান ব্যবহার করলে ত্বক থাকবে দীপ্তিময়। চলুন এমন পাঁচটি প্রাচীন রূপরহস্যের কথা জেনে নেওয়া যাক।

সামুদ্রিক শৈবাল

সমুদ্রের লোনাপানিতে থাকা শৈবালও যে ত্বকে জেল্লা ফিরিয়ে আনতে পারে, ভেবেছেন কখনো? পিচ্ছিল ও থকথকে এ উপাদানে আছে অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান। সংবেদনশীলতা কমাতে এবং ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি কমাতে এর জুড়ি মেলা ভার। প্রাচীন রোমানরা সংবেদনশীলতা, লালচে ভাব, জ্বলা ভাব, ব্যথা ও র‍্যাশের মতো সমস্যা সমাধানে এটি ব্যবহার করত। গ্রিসে শৈবাল থেকে লাল রং বের করে মালবেরির সঙ্গে ব্লেন্ড করে ঠোঁট রাঙাতে ব্যবহার করা হতো। লবণ পানি, জলজ উদ্ভিজ্জ আর কাদার সঙ্গে শৈবাল মিশিয়ে ত্বকের যত্ন নেওয়া হতো। আধুনিক এই যুগে উপাদানটি দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে নানা প্রসাধনী।

জাফরান

মিসরের রানি ক্লিওপেট্রার সৌন্দর্য নিয়ে নানা কিংবদন্তি প্রচলিত আছে। বলা হয়, ছাগলের দুধের সঙ্গে জাফরান ও গোলাপের পাপড়ি মিশিয়ে তিনি গোসল করতেন। জাফরানের লাল ও হলুদ স্ট্র্যান্ড গুঁড়া করে পারফিউম, লিপস্টিক ও তেলে ব্যবহার করা হতো। মধ্যপ্রাচ্যে নকশা করার জন্য হলুদ ও মেহেদি মিশিয়ে হাতে লাগানো হতো।

বিজ্ঞাপন

গাছের ছাল

একাদশ শতাব্দীর দিকে মিয়ানমারের মানুষেরা থানাকাগাছের ছাল পানিতে ভিজিয়ে একটা পাটার ওপর বৃত্তাকারভাবে ঘষে ঘষে পেস্ট তৈরি করত। মেয়েরা এই পেস্ট মুখে লাগিয়ে বাইরে যেত। এর ব্যবহারে তাদের ত্বক সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে সুরক্ষিত থাকত এবং ত্বকের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হতো না। যার কারণে ত্বকের লাবণ্য বজায় থাকত অনেক বয়স পর্যন্ত।

গোলাপের পাপড়ি

গোলাপের পাপড়ি তো এখনো পারফিউম, ক্রিম, ময়েশ্চারাইজার ও তেলে ব্যবহার করা হয়। তুর্কি ডিলাইটে পানির সঙ্গে মিশিয়েও এটি খাওয়া হতো। প্রাচীন নানা সংস্কৃতিতে খাবারের স্বাদ বাড়াতেও এর ব্যবহার ছিল। খ্রিষ্টপূর্ব সাড়ে তিন হাজার বছর আগে সুমেরীয় ও আসারীয়রা গোলাপের পাপড়ি থেকে সুগন্ধি পাওয়ার জন্য গরম পানিতে এটি জ্বাল দিয়ে তেল যুক্ত করে তাপ দিত। এরপর সেটি ব্যবহার করত ত্বকে ও চুলে।

অ্যালোভেরা

ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে, ব্রণ কমাতে, ত্বকের পোড়া ভাব কমানোসহ ত্বকের নানা সমস্যার সমাধান লুকিয়ে আছে অ্যালোভেরাতে। হাজার বছর আগে এর উপকারিতা সম্পর্কে জানা যায়। এর পর থেকেই ক্যাকটাস সম্প্রদায়ের এই গাছটি জায়গা করে নেয় ত্বকের যত্নে। মিসর, ভারত, জাপান, চীনসহ বিভিন্ন দেশের মানুষ চুল পড়া কমাতে এবং ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে অ্যালোভেরা ব্যবহার করত। সময় বদলে গেলেও আধুনিকতার এই যুগে অ্যালোভেরার গুরুত্ব এতটুকু কমেনি।

ছবি: ইনস্টাগ্রাম, উইকিপিডিয়া, পেকজেলসডটকম

বিজ্ঞাপন
প্রকাশ: ১২ জুন ২০২৫, ০৭: ৫৮
বিজ্ঞাপন