হেয়ার জেল ব্যবহারে যে ক্ষতি হতে পারে
শেয়ার করুন
ফলো করুন

চলতি শতাদ্বির প্রথম দুই দশকে হেয়ার জেলের ব্যবহার অনেক বেড়ে যায়; বিশেষ করে ছেলেদের মধ্যে। তখন এটাই ছিল সবচেয়ে বড় বিউটি ট্রেন্ড। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর প্রচার কমে এলেও হেয়ার জেল কিন্তু একেবারে হারিয়ে যায়নি। বিভিন্ন পারলারে বা হেয়ার স্যালনে এখনো চুলের স্টাইলিং করতে এটি ব্যবহার করা হয়। বাজারেও নানা ব্র্যান্ডের হেয়ার জেল পাওয়া যায়। তবে এটি ব্যবহার করে চুল হারানো মানুষের সংখ্যা কম নয়। কারণ, অনেকেই এর ক্ষতিকর দিক ও ব্যবহারের সঠিক নিয়ম জানেন না। অতিরিক্ত হেয়ার জেল ব্যবহারে চুলে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এটি এড়াতে এর সঠিক ব্যবহার জানা জরুরি। আর চাইলে এর প্রাকৃতিক বিকল্পও ব্যবহার করা যেতে পারে, যা চুলের স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো হবে।

চুল পড়ে যায়

বাজারে যে জেল পাওয়া যায়, তাতে অনেক ক্ষতিকারক রাসায়নিক উপাদান থাকে। এগুলো চুলকে রুক্ষ ও শুষ্ক করে ফেলে। দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে এই রাসায়নিকের জন্য চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে গিয়ে চুল পড়া শুরু করে।

মাথার ত্বকের আর্দ্রতা নষ্ট হয়

শুধু চুলই নয়, মাথার ত্বকও শুষ্ক করে ফেলে হেয়ার জেল। বেশির ভাগ হেয়ার জেলে অ্যালকোহল ও প্রোপিলিন গ্লাইকল থাকে। এ দুই উপাদান মাথার ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। অ্যালকোহল ত্বককে শুষ্ক করে ফেলে। আর প্রোপিলিন গ্লাইকল মাথার ত্বকের প্রোটিনকে ভেঙে ফেলে। ফলে এর সেলুলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে মাথার ত্বক তাঁর স্বাভাবিক আর্দ্রতা হারায়। তখন চুল পড়ার সঙ্গে সঙ্গে চুলে ফ্রিজি ভাব দেখা দেয়।

বিজ্ঞাপন

চুলে সংক্রমণ ও খুশকি দেখা দেয়

হেয়ার জেল মাথার ত্বকের সিবাম উৎপাদনকে বাধাগ্রস্ত করে। মাথার ত্বক এই কারণেও শুষ্ক হয়ে যায়। শুষ্কতার কারণে মাথায় সাদা ফ্লেকস দেখা দেয়। অন্যদিকে দীর্ঘ সময় ধরে হেয়ার জেল ব্যবহারের ফলে মাথার ত্বকের স্বাভাবিক বাস্তুসংস্থানের কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটে। ফলাফলস্বরূপ এখানে ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস খুব সহজে আক্রমণ করতে পারে। তখন ফাঙ্গাসের কারণে চুলে খুশকির মতো বিরক্তিকর সমস্যা দেখা দেয়। আর ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের জন্য মাথার ত্বকে ব্রণ হয়।

দ্রুত চুল পেকে যায়

অতিরিক্ত হেয়ার জেল ব্যবহারে চুল বিবর্ণ হয়ে যায় এবং বয়সের আগেই চুল পাকতে শুরু করে। কারণ, এর ক্ষতিকর রাসায়নিকগুলো মাথার ত্বকে পিএইচের ভারসাম্যে হস্তক্ষেপ করে। এ জন্য চুল ধীরে ধীরে নিস্তেজ ও বিবর্ণ হয়ে যায়।

বিজ্ঞাপন

হেয়ার জেল ব্যবহারের সঠিক নিয়ম

চুলের স্টাইলিংয়ের জন্য যাঁরা হেয়ার জেলের ওপর নির্ভরশীল, তাঁরা একটু নিয়ম মেনে এটি ব্যবহার করলে এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে চুল রক্ষা করতে পারবেন। যেমন হেয়ার জেল সামান্য পরিমাণে ব্যবহার করা যেতে পারে। ব্যবহারের পর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।

খেয়াল রাখতে হবে, হেয়ার জেল চুলে ৪৮ ঘণ্টার বেশি যেন রাখা না হয়। তাহলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে শুরু করবে। প্রতিদিন এটি ব্যবহার করা যাবে না। সবচেয়ে ভালো হয় সপ্তাহে এক দিন ব্যবহার করলে।

হেয়ার জেলের প্রাকৃতিক বিকল্প

আগেই বলা হয়েছে, বাজারে যে হেয়ার জেল পাওয়া যায়, তাতে অনেক ধরনের ক্ষতিকারক রাসায়নিক উপাদান থাকে। তাই চাইলে ব্যবহার করতে পারেন এর প্রাকৃতিক বিকল্প। এ ক্ষেত্রে অ্যালোভেরা জেলকে এগিয়ে রাখা যেতে পারে। এর অনেক উপকারিতা রয়েছে। চুলের স্বাস্থ্য রক্ষার পাশাপাশি এটি স্টাইলিং করতেও ভালো কাজ করতে পারে। এ ছাড়া জেলের পরিবর্তে তেলও ব্যবহার করা যায়। সেটা যেকোনো তেল হতে পারে। তবে সবচেয়ে ভালো হয় জোজোবা বা জলপাইয়ের তেল ব্যবহার করলে।

ছবি: ইনস্টাগ্রাম ও পেকজেলসডটকম

প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৪, ০৮: ২৫
বিজ্ঞাপন