
অ্যালার্জি না সংক্রমণের বিষয়টি পরিষ্কার করতে ডার্মাটোলজিস্টর কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের মতে, শীতকালে রোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যে বিভ্রান্তি দেখা যায়, তা হলো অ্যালার্জি আর সংক্রমণের লক্ষণ একসঙ্গে চলে আসা।

অ্যালার্জি চেনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হলো চুলকানি।
চোখ, নাক, গলা বা ত্বকে যদি চুলকানি থাকে, তাহলে সেটি সংক্রমণের চেয়ে অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। সংক্রমণে সাধারণত চুলকানির বদলে শরীর ব্যথা, দুর্বলতা বা কাঁপুনি বেশি দেখা যায়।

শীতকালে আমাদের জীবনযাত্রার কিছু পরিবর্তন অ্যালার্জির ঝুঁকি বাড়ায়—
ইনডোর অ্যালার্জেন: ঠান্ডার কারণে জানালা বন্ধ থাকে, ঘরের ভেতর বেশি সময় কাটাতে হয়। এতে ডাস্ট মাইট, ছত্রাক, পোষা প্রাণীর লোমের প্রভাব বেড়ে যায়।
উলের পোশাক ও ভারী কাপড়: গরম সোয়েটার বা শাল অনেকের ত্বক বা নাকে চুলকানি তৈরি করে।
শুষ্ক বাতাস: হিটার ব্যবহারে বাতাস শুষ্ক হয়ে যায়, ফলে ত্বক ও নাকের ভেতরের অংশ আরও সংবেদনশীল হয়ে পড়ে।
অন্যদিকে, শীতকালীন সংক্রমণ, যেমন সর্দি বা ফ্লু—সাধারণত চুলকানি তৈরি করে না। বরং শরীর ব্যথা, জ্বর, ঠান্ডা লাগা আর প্রচণ্ড ক্লান্তি দেখা দেয়।

খুব সাধারণ দুটি জিনিস দিয়েই পার্থক্য বোঝা যায়—একটি থার্মোমিটার, আরেকটি সময়ের হিসাব।
জ্বর আছে কি না
অ্যালার্জি হলে কখনোই জ্বর হয় না। শরীরের তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেও সেটি সংক্রমণের ইঙ্গিত।
ভাইরাল বা সাধারণ সর্দি সাধারণত ৭-১০ দিনের মধ্যে সেরে যায়।
কিন্তু অ্যালার্জি। যতদিন অ্যালার্জেনের সংস্পর্শে থাকবেন, ততদিন চলতে পারে। তিন সপ্তাহ ধরে হাঁচি চলছে, কিন্তু শরীর ভালো—এটা প্রায় নিশ্চিতভাবেই অ্যালার্জি।
নাক দিয়ে বের হওয়া মিউকাস দুই ক্ষেত্রেই হতে পারে, তবে রং আর ঘনত্বে পার্থক্য থাকে—
অ্যালার্জি: পরিষ্কার, পাতলা ও পানির মতো মিউকাস
সংক্রমণ: ঘন, হলুদ বা সবুজ রঙের মিউকাস

পরামর্শ অনুযায়ী শীতে কিছু সহজ অভ্যাস অ্যালার্জি ও সংক্রমণ দুটো থেকেই রক্ষা করতে পারে—
* পর্যাপ্ত পানি পান করা
* ঘরে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা
* ত্বকে সেরামাইডযুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা, যাতে ত্বকের ব্যারিয়ার শক্ত থাকে
তবে লক্ষণ যদি ১০ দিনের বেশি স্থায়ী হয়, তাহলে নিজে নিজে ওষুধ না খেয়ে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
শীতকাল মানেই অস্বস্তি নয়—শরীরের সংকেতগুলো ঠিকভাবে বুঝতে পারলেই সুস্থ থাকা অনেক সহজ হয়ে যায়।
সূত্র: হেলথলাইন
ছবি: এআই