সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়াকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, “ব্রণ দূর করতে আপনার নিজস্ব কোনও হ্যাক আছে কি না?” প্রশ্নের উত্তরে তিনি হাসতে হাসতে বলেন, “লালা। হ্যাঁ, ব্রণে লালা লাগালে তা কাজ করে।” আশপাশে থাকা সবাই মুখ গোমড়া করলেও তামান্না আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, “এটা সত্যিই কাজ করে!”
এবং এটা প্রথমবার নয়, এর আগেও ২০২১ সালে পিঙ্কভিলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘সকালের প্রথম লালা ব্রণ শুকিয়ে দিতে সাহায্য করে। যদিও এটা অদ্ভুত শোনায়, তবুও আমার অভিজ্ঞতা বলছে এটা কার্যকর।” তবে সেই সময় তিনি এটাও বলেন, ব্রণ যদি স্থায়ী সমস্যা হয়, তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস-এর চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. গার্গী তনুজা স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “ব্রণে লালা লাগানো বিপজ্জনক একটি ভুল।” তিনি আরও জানান, “এটা একেবারে মিথ যে মুখের লালা ব্রণ কমাতে বা ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। বরং এতে অনেক রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি থাকে।”
চিকিৎসকদের মতে, মানুষের মুখের লালায় থাকে অনেক ব্যাকটেরিয়া, যার অনেকগুলোই ক্ষতিকর। জেনে নিন কেন লালা ত্বকে দেওয়া উচিত নয়:
ব্যাকটেরিয়ার ঝুঁকি: মুখের মধ্যে থাকা জীবাণু ত্বকে সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
ত্বক জ্বালা: লালায় থাকা এনজাইম ত্বকে অ্যালার্জি বা লালচে ভাব তৈরি করতে পারে।
পিএইচ ভারসাম্য: লালার অম্লীয় পিএইচ ত্বকের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে।
কোনো কার্যকর উপাদান নেই: ব্রণ কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান বা ওষুধ লালায় নেই।
অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস: লালা দেওয়া একধরনের বাজে অভ্যাস ও অপরিচ্ছন্নতা। ত্বকে লাগানো তো আরও খারাপ।
চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন-
- স্যালি–সাইলিক অ্যাসিড, বেনজয়েল পার অক্সাইড, রেটিনল জাতীয় উপাদান ব্যবহার করুন, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে।
- ত্বক পরিষ্কার রাখুন, এবং নিজের ত্বক বোঝার চেষ্টা করুন।
সেলিব্রিটিরা অনেক সময় অদ্ভুত বিউটি হ্যাক শেয়ার করেন, কিন্তু তার মানেই সেটা বিজ্ঞানসম্মত নয়। তামান্না ভাটিয়ার ‘ইয়াক হ্যাক’ যতই অভিনব হোক, বাস্তবে তা আপনার ত্বকে বিপদ ডেকে আনতে পারে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
ছবি: ইনস্টাগ্রাম