ত্বক আর্দ্র রাখতে কার্যকর খনিজ তেল
শেয়ার করুন
ফলো করুন

আপনি যদি প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের যত্নের কথা ভাবেন, তাহলে খনিজ তেল আপনার জন্য উপযুক্ত। ত্বকের যত্নে আমরা সাধারণত যে পণ্যগুলো ব্যবহার করতে পছন্দ করি, যেগুলো বেশি সুগন্ধিযুক্ত, প্রক্রিয়াজাত হয়ে থাকে, যা সবার ত্বকের জন্য ভালো কিছু না–ও হতে পারে এ ছাড়া নানা ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তো আছেই। সে জন্য খনিজ তেল ব্যবহার করার কথা বিবেচনা করতে পারেন।

সামগ্রিকভাবে খনিজ তেল ত্বককে আর্দ্র করে শুষ্কতা দূর করে। এ ছাড়া খুশকি, কানের তৈলাক্ততা দূর এবং কোষ্ঠকাঠিন্যেরও চিকিৎসায় কার্যকর ভূমিকা রাখে।

খনিজ তেল কী

খনিজ তেলকে ‘বর্ণহীন, তৈলাক্ত, প্রায় স্বাদহীন, জলে দ্রবণীয় তরল’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। এটি সাধারণত হয় হালকা ও ভারী ঘনত্বের। এটি বেশির ভাগ অ্যালকেন এবং সাইক্লোয়ালকেন দ্বারা গঠিত।

এ ধরনের তেল পেট্রোলিয়াম থেকে আসে এবং প্রসাধনী, ক্যারিয়ার তেল, কিছু ওষুধ ও লুব্রিকেন্ট ল্যাক্সেটিভের মতো পণ্যগুলোতে পাওয়া যায়। এটি পেট্রোল তৈরির জন্য অপরিশোধিত তেল পরিশোধনের উপজাত হিসেবে তৈরি করা হয়। অপরিশোধিত তেলকে বায়ুমণ্ডলীয় চাপে ফেলা হলে বাষ্প হয়ে তরলে রূপান্তরিত হয়। পরে এই বাষ্পকে জমিয়ে ঘন করা হয়।

এটি উদ্ভিজ্জ তেল থেকে আলাদা, তবে এটি পেট্রোলিয়াম জেলির সঙ্গে সম্পর্কিত। খনিজ তেল একাধিক মানে হয়। এটা পরিশোধন প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে। এই তেল প্যারাফিন তেল অথবা লিকুইড প্যারাফিন (একটি অত্যন্ত পরিশোধিত মেডিকেল গ্রেড) উৎকৃষ্ট মানের। এই তেল এখন ওষুধের দোকান ও সুপারমার্কেটে পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের দেশে যে ‘পমেড’ নামে এ ধরনের জেল পাওয়া যায় সেটি অনেক ভালো। সেটি খনিজ তেল থেকে আসে এবং ত্বকের চিকিৎসার উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

যদিও এটি ত্বককে মোলায়েম করার জন্য ব্যবহার করা হয়। তবে মলম বা ক্রিম লুব্রিকেন্টের আকারে আসে। এটি শিশুদের ত্বকের জন্য সুগন্ধিযুক্ত খনিজ তেল হিসেবেও বিবেচনা করা হয়, যা নিরাপদে শিশুদের ত্বকে প্রয়োগ করা যেতে পারে।
খনিজ তেলে জোলাপের সক্রিয় উপাদানও আছে। ফলে এই তেল ব্যবহারে পায়ুপথের অনেক ধরনের সমস্যা দূর করা যায়, কোষ্ঠবদ্ধতা থাকেনা।  

বিজ্ঞাপন

যেসব উপকার পাওয়া যাবে

• ২০১৭ সালের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ‘খনিজ তেল ত্বক এবং ঠোঁটের যত্নের প্রসাধনীতে ব্যবহার করা হয়। কারণ, ত্বক সুরক্ষা ও পরিচ্ছন্নতার জন্য কার্যকর।’  দীর্ঘ গবেষণায় দেখা গেছে, এটি ত্বককে কোমল করে। সংবেদনশীল ত্বক বা শিশুদের ত্বকের যত্নে এবং চোখের নিচে ফুলে যাওয়া, কালো দাগ পড়া রোধ করতে নিরাপদে প্রয়োগ করা যেতে পারে। এই তেল ত্বককে আর্দ্র। ত্বক ফাটা রোধ করে।

• শিশুদের মধ্যে ক্রেডল ক্যাপ এবং ডায়াপারের জন্য সৃষ্ট ফুসকুড়ি রোধের ব্যবহার করা যেতে পারে। অ্যাকজিমা–আক্রান্ত স্থানে প্রয়োগ করা হলে উপকার পাওয়া যায়।

• পায়ের ফাটা দূর করতে এটি অত্যন্ত কার্যকর।  

• অত্যন্ত পরিশোধিত হওয়ায় এবং বিশুদ্ধ খনিজ তেল হওয়ার কারণে কানের ময়লা পরিষ্কারেও ব্যবহার করা যেতে পারে।

• চুল এবং মাথার ত্বকের জন্য উপকারী। খুশকি দূর করতেও সহায়ক।
যেহেতু এটি খনিজ থেকে আসা, তাই এই তেল নিরাপদ; যদিও মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার যথার্থ নয়। সংবেদনশীলতা সবার অভিন্ন নয়; তবে এটা নিশ্চিত যে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের চেয়ে এই তেল অনেক নিরাপদ।

ছবি: পেকজেলসডটকম

লেখক: খাদ্য ও পথ্যবিশেষজ্ঞ; প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র

বিজ্ঞাপন
প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৬: ০০
বিজ্ঞাপন