অনেকে মনে করেন পাকা চুল তুললে আরও চুল পাকতে শুরু করে, যা আসলে ভ্রান্ত ধারণা। সাধারণত বয়সের সঙ্গে চুল পাকা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। ৩০ বছর বয়সের পর থেকে প্রতি দশকে মোটামুটিভাবে ১০ থেকে ২০ শতাংশ করে চুল পাকতে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে ৫০ বছর বয়স হলে ৫০ শতাংশ চুল পেকে যায়। পাকা চুল টেনে তুললে সেই জায়গার অন্য চুল পেকে যায় বা আরও পাকা চুল গজায় আমাদের দেশে এমন ধারণা অনেকের। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ কুসংস্কার এবং ভ্রান্ত ধারণা।
সুইডেনের স্টকহোমের চুলের সৌন্দর্যচর্চাকেন্দ্র সাচাহুয়ানয়ের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর অব এডুকেশন ও হেয়ার স্টাইলিস্ট ট্রে গিলিয়েন বলেন, একটি নির্দিষ্ট চুলের গোড়ায় থাকা ফলিকলের মধ্যকার পিগমেন্ট কোষগুলো যতদিন বেঁচে থাকবে, ততদিন চুল সাদা হবে না। একটা চুলের গিপমেন্ট কোষ মারা গেলে তার পাশের চুলের কোষে এর কোনো প্রভাব পড়ে না।
তবে পাকা চুল বার বার টেনে তোলার অন্য ক্ষতিকর দিক আছে। রিয়েলসিম্পল ডটকম–এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে গিলিয়েন আরও বলেন, ‘একটি চুলের ফলিকল থেকে একটাই চুল গজানো সম্ভব। আর যে চুলটি একবার সাদা হয়ে গেছে, তার মানে হল ওই চুলের ফলিকলের পিগমেন্ট কোষ ইতিমধ্যেই মারা গেছে। সেটা টেনে তুলে ফেললে সেখানো আবার সাদা চুলই গজাবে।’
তবে বারবার পাকা চুল টেনে তোলার কারণে ওই ফলিকলটি ক্রমেই ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। একপর্যায়ে সেই ফলিকল থেকে চুল গজানোই বন্ধ হয়ে যাবে। একেবারে না থাকার তুলনায় পাকা চুল নিঃসন্দেহে ভালো। এ ছাড়াও চুল টেনে তোলার কারণে ওই স্থানে প্রদাহ দেখা দিতে পারে, দাগ হয়ে যেতে পারে, চুল পাতলা হওয়া শুরু হওয়াও সম্ভব, নিয়মিত পাকা চুল তুললে সংক্রমিত ত্বকে হাইপারপিগমেন্টেশন দেখা দিতে পারে। ফলিকল নষ্ট হয়ে চুলের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। মাথার নির্দিষ্ট অংশ থেকে ক্রমাগত চুল তুলে গেলে দেখা দিতে পারে ট্রিকোটিলোম্যানিয়া৷ তার থেকে দীর্ঘ স্থায়ী হতে পারে চুল পড়ার সমস্যা।
ছবি: ইন্সটাগ্রাম