শীতে শুষ্ক ত্বক: ৭ দিনেই ফিরবে স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা
শেয়ার করুন
ফলো করুন

ইউরোপের স্কিনকেয়ার জগতে পরিচিত নাম ডা. আলেকসান্দ্রা ব্রাউন, একজন ডার্মাটোলজিস্ট যিনি ইনস্টাগ্রামে নিয়মিত শীতকালীন স্কিন হেলথ নিয়ে কনটেন্ট তৈরি করেন। তাঁর মতে, শীতে সুন্দর ত্বকের মূল চাবিকাঠি হলো—হাইড্রেশন, ব্যারিয়ার প্রোটেকশন এবং লাইফস্টাইল সচেতনতা। এছাড়া তিনি কিছু কার্যকর স্কিনকেয়ার রুটিন মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন।  

শীতে ত্বক সুরক্ষার সহজ কিন্তু কার্যকর রুটিন

মৃদু ক্লিনজিং, প্রতিদিনের ভিত্তি

ডা. আলেকসান্দ্রা বলেন, শীতে ত্বক পরিষ্কার করার সময় অতিরিক্ত ফোমিং ক্লিনজার এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের। সেরামাইড বা ওটসযুক্ত মাইল্ড, ক্রিম-বেসড ক্লিনজার ত্বকের আর্দ্রতা নষ্ট না করেই পরিষ্কার রাখে। গোসল বা মুখ ধোয়ার সময় পানি হবে কুসুম গরম, সময় ৫-১০ মিনিটের মধ্যে। তোয়ালে দিয়ে ঘষে নয়, আলতো করে মুছতে হবে।

ভেজা ত্বকেই সিরাম

ত্বক ধোয়ার পর যখন ত্বক সামান্য ভেজা থাকে, তখনই লাগাতে হবে হায়ালুরোনিক অ্যাসিড বা গ্লিসারিনযুক্ত সিরাম। এগুলো ত্বকের ভেতরে পানি ধরে রাখে। শহুরে দূষণে ক্লান্ত ত্বকের জন্য নাইয়াসিনামাইড কার্যকর, আর হালকা উজ্জ্বলতার জন্য ভিটামিন সি ব্যবহার করা যায়—তবে সেনসিটিভ স্কিন হলে কম মাত্রায় ব্যবহার করতে হবে।

দিনে দু’বার ময়েশ্চারাইজার—কোনো ছাড় নয়

শীতকালে ময়েশ্চারাইজার শুধু শুষ্ক ত্বকের জন্য নয়। ডা. আলেকসান্দ্রা জানান, পেট্রোলিয়াম, শিয়া বাটার বা স্কুয়ালেনযুক্ত ঘন ক্রিম ত্বকের ব্যারিয়ারকে শক্তিশালী করে। ক্লিনজিংয়ের তিন মিনিটের মধ্যে লাগালে আর্দ্রতা সবচেয়ে ভালোভাবে আটকে থাকে। তেলতেলে বা ব্রণ প্রবণ ত্বকেও এটি জরুরি।

বিজ্ঞাপন

এক্সফোলিয়েশন কম, কিন্তু বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে

মরা কোষ জমে থাকলে ত্বক ময়েশ্চার শোষণ করতে পারে না। সপ্তাহে একবার ল্যাকটিক বা ম্যান্ডেলিক অ্যাসিড যথেষ্ট। রুক্ষ স্ক্রাব ত্বকে ক্ষতি করতে পারে। সংবেদনশীল ত্বকের জন্য ওটমিল-ভিত্তিক মাস্ক হতে পারে নিরাপদ সমাধান।

স্কিনকেয়ারের বাইরে জীবনযাপনেও নজর

ডা. আলেকসান্দ্রা তাঁর ইনস্টাগ্রাম কনটেন্টে বারবার বলেন, শীতকালীন স্কিনকেয়ার শুধু প্রসাধনীতে সীমাবদ্ধ নয়। ঘরের আর্দ্রতা ৪০-৬০ শতাংশে রাখলে ত্বক স্বস্তি পায়। খাবারে ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ উপাদান যেমন ফ্ল্যাক্সসিড বা আখরোট, পর্যাপ্ত পানি ও মাঝে মাঝে ডাবের পানি ত্বককে ভেতর থেকে হাইড্রেট রাখে।

শীতেও সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাব এড়িয়ে চলা জরুরি। প্রতিদিন সকালে মিনারেল-বেসড এপিএফ ৩০ বা তার বেশি সানস্ক্রিন ব্যবহার করার পরামর্শ দেন তিনি। রাতে হাত, পা বা গোড়ালিতে এমোলিয়েন্ট ক্রিম লাগিয়ে নরম সুতির কাপড় পরলে ত্বক আরও সুরক্ষিত থাকে।

বিজ্ঞাপন

যেগুলো শীতে এড়িয়ে চলাই ভালো

ডা. আলেকসান্দ্রা সতর্ক করেন, শীতকালে শক্তিশালী রেটিনল বা আক্রমণাত্মক অ্যান্টি-এজিং প্রোডাক্ট ত্বককে অতিরিক্ত সংবেদনশীল করে তুলতে পারে। দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে যদি শুষ্কতা, লালচে ভাব বা চুলকানি না কমে, তাহলে নিজে নিজে পরীক্ষা না করে ডার্মাটোলজিস্টের শরণাপন্ন হওয়াই শ্রেয়।

নিয়ম মেনে এই রুটিন অনুসরণ করলে, তাঁর অভিজ্ঞতায়, মাত্র ৭-১০ দিনের মধ্যেই ত্বকে ফিরতে পারে নরমভাব, স্বাস্থ্যকর টেক্সচার আর স্বাভাবিক শীতকালীন গ্লো, যা কোনো ফিল্টার ছাড়াই চোখে পড়বে।

সূত্র: স্কিনকেয়ারডটকম

ছবি: এআই

প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ২৫
বিজ্ঞাপন