কোরিয়ানদের ত্বক দেখলেই মনে হয় যেন স্বচ্ছ কাচের মত ঝকঝকে আর মসৃণ। কোরিয়ান ভাষায় এই ধরনের ত্বককে বলা হয় ইউরি পিবু যার অর্থ ঝকঝকে, উজ্জ্বল ও মসৃ্ণ ত্বক। সত্যিই যেন তাই। তাঁদের ত্বকে যেন কোনো খুঁত নেই৷ এই ধরনের ত্বক পাওয়া যে সহজ তা নয়, আবার একেবারেই পাওয়া অসম্ভব তাও নয়। এই কোরিয়ানদের মতো গ্লাস স্কিন পেতে বজায় রাখতে হবে স্কিন কেয়ারের ধারাবাহিকতা। শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। আর ছোট খাটো কিছু টোটকা কাজে লাগাতে পারলেই আপনিও পেতে পারেন কোরিয়ানদের মতো গ্লাস স্কিন। চলুন জেনে নেওয়া যাক, যেভাবে ৮ ধাপে পাবেন এমন আরাধ্য ত্বক
১.ডাবল ক্লেনজিং
ত্বককে ঝকঝকে রাখার প্রথম যে ধাপ তা হলো ডাবল ক্লেনজিং। ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার না হলেই কিন্তু রোমকূপে ধুলো-ময়লা আর মেকআপ জমে গিয়ে একনি, ব্রণ, ব্লাকহেডস, হোয়াইটহেডস জাতীয় সমস্যা দেখা দেয়। গ্লাস স্কিন পেতে চাইলে ডাবল ক্লেনজিং অত্যন্ত জরুরী। তাই প্রথমে একটি অয়েলবেজড ক্লেনজার দিয়ে ত্বক ভালো ভাবে পরিষ্কার করে নিন। এতে ত্বকের সব মেকআপ ভালো ভাবে পরিষ্কার হয়ে যাবে। এর পরে ওয়াটারবেজড একটি ক্লেনজার ব্যবহার করুন, যা আপনার ত্বকে জমে থাকা সব ধরনের ধুলোময়লা পরিষ্কারে কাজ করবে।
২. নিয়মিত এক্সফোলিয়েশন
আমাদের ত্বকের মৃত কোষ কিংবা ডেড সেলগুলো দূর করতে নিয়মিত এক্সফোলিয়েশন বেশ জরুরী। নিয়মিত এক্সফোয়েশনে ত্বকের ডেড সেল দূর হয় ও রোমকূপ পরিষ্কার থাকে। ফলে ত্বক থাকে মসৃন। তবে নিজের ত্বকের ধরন বুঝেই কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটরগুলো ব্যবহার করতে হবে।
৩. এসেন্স টোনিং
এসেন্স টোনিং কোরিয়ানদের একটি ব্যতিক্রম স্কিন কেয়ার। এসেন্স সিরামের থেকে কম ঘনত্বের একটি স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট। ডাবল ক্লেনজিং এর পরেই এটি ত্বকে ব্যবহার করে কোরিয়ানরা৷ এসেন্স ত্বকে বলিরেখা ও বয়সের ছাপ কমিয়ে আপনার ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখে৷ সেই সঙ্গে ত্বককে হাইড্রেটেড রাখতেও এর কোনো জুড়ি নেই।
৪. ময়েশ্চারাইজিং
গ্লাস স্কিনের জন্য ত্বককে হাইড্রেটেড রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য ব্যবহার করতে হবে একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার। এমন কোনো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন যা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত আপনার ত্বকের হাইড্রেশন ধরে থাকে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো ফলাফল পেতে হায়ালুরোনিক অ্যাসিডযুক্ত কোনো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন।
৫. স্নেইল মিউসিন
স্নেইল মিউসিন হলো একটি জনপ্রিয় কোরিয়ান স্কিন কেয়ার উপাদান। এটি গ্লাইকোপ্রোটিন, গ্লাইকোলিক অ্যাসিডসহ বিভিন্ন ভিটামিনে সমৃদ্ধ। এটি ত্বকে কোলাজেনের উৎপাদনকে বাড়াতে সাহায্য করে। যা ত্বকের স্থিতিস্থাপকতাও বৃদ্ধি করে।
৬. পর্যাপ্ত ঘুম
ত্বকের যত্নে ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। ত্বক ভালো রাখতে আপনাকে অবশ্যই ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। ঘুম ভালো হলে আপনার কোষগুলো ভালো ভাবে পুনরায় তৈরি হতে পারে। এছাড়া ঘুম ঠিক থাকলে আপনার ত্বকের সব ক্লান্তি ভাবও দূর হয়ে যায়। যার ফলে ত্বক থাকে সতেজ ও দীপ্তিময়।
৭. হাইড্রেটেড থাকুন
অবশ্যই পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। অন্যথায়, আপনার ত্বক পানিশূন্য হয়ে পড়বে। দৈনিক আট গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন। পর্যাপ্ত পানি পান করলে আপনার ত্বক থেকে সব ধরনের টক্সিন বের হয়ে যায় এবং ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়ে। ত্বক থাকে হাইড্রেটেড।
৮. ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্মি থেকে রক্ষা করতে হবে
ত্বককে অবশ্যই সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনী রশ্মি থেকে রক্ষা করতে হবে। এই অতিবেগুনী রশ্মির কারণেই ত্বকে অল্প বয়সেই বয়সের ছাপ পড়ে। ত্বকে মেছতার সমস্যাও দেখা যায়। তাই সব সময় কমপক্ষে এসপিএফ৩০ যুক্ত কোনো সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
ছবি: হাল ফ্যাশন