শীত এসে গেছে। মানুষ ঠান্ডার প্রকোপ থেকে বাঁচতে খুবই সচেতন। কিন্তু এরই সঙ্গে তাল মিলিয়ে অনেকেরই চুলের খুশকি বেড়ে চলছে। তাদের জামা কাপড়, বাসার বিছানা কিংবা বালিশে হয়তো খুশকি ছড়িয়ে থাকে। এটি খুবই সাধারণ একটা সমস্যা। যদিওবা এটি ছোঁয়াচে বা সংক্রমণ না। কিন্তু খুশকি হতে রেহাই পাওয়া খুব কষ্টকর। আবার এই খুশকি খুবই বিরক্তিকর আর একই সঙ্গে বিব্রতকর। তাছাড়া খুশকির ফলে মাথায়, মুখের বিশেষ কিছু জায়গায় যেমন ভ্রু, গালে কিংবা চিবুকে অনবরত চুলকানির সমস্যা দেখা যায়। মানুষের মাথার ত্বক থেকে যে মৃতচামড়া উঠে যায় মূলত সেটাই খুশকি। মাথার ত্বক শুষ্ক হওয়া খুশকির অন্যতম কারণ। তাছাড়া বিশেষ কিছু ছত্রাকও দায়ী এই খুশকির জন্য। খুশকি যে কোনো বয়সের মানুষেরই হতে পারে। যদিও মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের খুশকি বেশি হয়।
১. যাদের মাথার ত্বক বেশি তৈলাক্ত, তাদের খুশকি হওয়ার প্রবণতাও বেশি।
২. তাছাড়া মাথার ত্বক বেশি শুষ্ক থাকলে খুশকিও বেশি হয়।
৩. চুলের ফ্যাশনের জন্য অনেকেই না জেনে ক্রিম, জেলের মতো নানা ধরনের চুলের প্রোডাক্ট ব্যবহার করেন, কিছু মানুষের ত্বক অনেক সংবেদনশীল । সেক্ষেত্রে এধরনের চুলের প্রোডাক্ট ব্যবহার করলেও খুশকি হতে পারে।
৪. কিছু ইস্ট জাতীয় ছত্রাক আছে যেমন, ম্যালাসেজিয়া। এই জাতীয় ছত্রাক মাথার ত্বক কিংবা চোখের ভ্রুয়ের ত্বকের তেল শুষে নিয়ে ত্বক শুষ্ক করে, ফলে ত্বক ফেটে যায় এবং খুশকির সৃষ্টি করে।
৫. তাছাড়া যাদের একজিমা বা সোরিয়াসিসের মতন চর্ম রোগ আছে তাদের খুশকি অনেক বেশি হয়। যারা পার্কিনসন রোগে ভুগছে, তাদেরও খুশকির সমস্যায় বেশি ভুগতে হয়।
৬. বাতাস দূষিত থাকলেও খুশকি বেশি। তাছাড়া যারা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কম থেকে তাদের খুশকি সঙ্গে লেগেই থাকে।
৭. অনেকেই সাশ্রয়ের কথা ভেবে, পরিমাণের চেয়ে কম শ্যাম্পু ব্যবহার করেন। এক্ষেত্রে মাথার ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার হয় না। ফলে খুশকি দেখা দেয়।
৮. খাবারের ডায়েট ঠিকঠাক না থাকলে।
১. ভালো অ্যান্টিড্যানড্রফ বা খুশকিনাশক শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন। সুপারশপ বা ফার্মেসিতে এই জাতীয় শ্যাম্পু পেতে পারেন। মাথায় শ্যাম্পু দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ধুয়ে না ফেলে, আলতো ভাবে পুরো মাথার ত্বক ঘষে পরিষ্কার করতে হবে। তাছাড়া শ্যাম্পুর সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস দিয়েও মাথা পরিষ্কার করতে পারেন।
২. প্রতিদিন পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। তাছাড়া প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। যেসব খাদ্যে ওমেগা - ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, সেইসব খাদ্য অবশ্যই খেতে হবে।
৩. বেশি স্ট্রেসে থাকলেও খুশকি হওয়ার প্রবণতা বাড়ে। তাই স্ট্রেস কমাতে হবে।
৪. শ্যাম্পু কিনলে অবশ্যই উল্লেখযোগ্য যেকোনো একটি উপাদান যেন শ্যাম্পুতে থাকে তা দেখে কিনুন:
- জিংক পাইরিথায়োন
- সেলেনিয়াম সালফাইড
- কিটোকোনাজল
- সেলিসাইলিক অ্যাসিড
- কোল টার
৫. আধ কাপ আপেল সাইডার ভিনেগারের সঙ্গে আধা কাপ পানি মিশিয়ে মিক্সচার তৈরি করুন। এরপর এই মিশ্রণ মাথার ত্বকে ভালো করে লাগিয়ে নিন। এরপর ভালো করে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন। ১০ - ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে শ্যাম্পু দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। আপেল সাইডার ভিনেগার বেশিক্ষণ চুলে লাগিয়ে রাখলে ক্ষতি হতে পারে। তাই বেশিক্ষণ না রাখাই ভালো।
যারা সারাবছর ধরেই অত্যন্ত খুশকির সমস্যায় ভুগছেন তারা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
ছবি: ইনস্টাগ্রাম