স্লাগিংয়ের সময় এখনই
শেয়ার করুন
ফলো করুন

সেই ২০২০ সালে অতিমারির যখন ‘পিক টাইম’, ঠিক তখন কোরীয়দের হাত ধরে প্রথম লাইমলাইটে আসে স্লাগিং। টিকটক স্কিনফ্লুয়েন্সারদের বদৌলতে আবার আলোচনায় এসেছে এটি। কারণ, শীতে ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখতে এর জুড়ি মেলা ভার।

বিজ্ঞাপন

উদ্ভট সব স্কিনকেয়ার ও বিউটি হ্যাকের জন্মস্থান হিসেবে এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রায় সমানভাবে প্রশংসিত ও নিন্দনীয়। তবে এখান থেকে যেসব ট্রেন্ডের জন্ম হয়, তার পেছনে মূল কলকাঠি নাড়েন বিউটি ইনফ্লুয়েন্সাররা। কোনো এক ইনফ্লুয়েন্সারের দেখানো একটি হ্যাক যত বেশি ভিউ হবে, হ্যাকটির নতুন ট্রেন্ড হওয়ার সম্ভাবনাও তত বেশি। এর কারণে নানা সময় এমন কিছু স্কিনকেয়ার ট্রেন্ড আসে, যেগুলো নিয়ে প্রচুর মাতামাতি হলেও কার্যকারিতা ও নিরাপত্তার দিক দিয়ে সেগুলো থাকে একেবারে তলানিতে। আবার কিছু ট্রেন্ডের জন্ম হয়, যা বেশ ভালো। এমনকি এসব ট্রেন্ড অনেক সময় ‘স্কিনটেলেকচুয়াল’ অর্থাৎ বিউটিশিয়ান, এস্থেটিশিয়ান ও ডার্মাটোলজিস্টদের মাধ্যমে অনুমোদিত হয়। এমনই একটি স্কিনকেয়ার ট্রেন্ড হলো স্লাগিং।

রাতে ঘুমানোর আগে আমরা এখন মুখের ত্বকে অনেক কিছুই লাগাই। যেমন টোনার এসেন্স, সিরাম ও শেষে ক্রিম। এগুলো ত্বকের আর্দ্রতা বাড়ায় বা বজায় রাখে। কিন্তু রাতে আমাদের ত্বকের ওপরের স্তর থেকে পানি বা আর্দ্রতার ক্ষয় হয়, যাকে ট্রান্স–এপিডার্মাল ওয়াটার লস বলা হয়। তাই যত হাইড্রেটিং পণ্যই ব্যবহার করেন না কেন, তার কিছুটা হলেও ত্বক থেকে উবে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর এ জন্যই বিশেষজ্ঞরা স্লাগিংয়ের দ্বারস্থ হতে বলেন।

ত্বকের আর্দ্রতাকে তালা দিতে রূপরুটিনের একদম শেষ ধাপে কোনো ভারী অকক্লুসিভ ব্যবহার করুন। এটি ময়েশ্চারাইজিং এজেন্ট, যা আপনার ত্বকের উপরিভাগে একটি প্রতিরক্ষামূলক স্তর তৈরি করে ও আর্দ্রতা কমতে বাধা দেয়।

বিজ্ঞাপন

এখন পর্যন্ত সবার খুব পছন্দের অকক্লুসিভ হচ্ছে পেট্রোলিয়াম জেলি। অনেক ত্বকবিশেষজ্ঞের মতে, এটি নাকি ত্বকে ব্যবহারের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ পণ্য। পেট্রোলিয়াম জেলি ত্বকে আর্দ্রতা বা পানি পুরোপুরি ধরে রাখার মতো অসাধ্য সাধন করতে পারে। এটি ছাড়া ফেস অয়েল বা পেট্রোলিয়াম, মিনারেল অয়েল ও গ্লিসারিন, এই উপাদান আছে এমন ভারী ক্রিমও স্লাগিংয়ের জন্য ভালো।

শীতের এই সময় স্লাগিংয়ের জন্য সবচেয়ে উপযোগী সময়। স্লাগিংয়ের ক্ষেত্রে কিছু ডু’স অ্যান্ড ডোন্ট’স বা সতর্কতা রয়েছে। চলুন সেগুলো জেনে নেওয়া যাক।
* পেট্রোলিয়াম বা মিনারেল অয়েলভিত্তিক পণ্য ব্যবহার করুন।
* এ ছাড়া পছন্দের নন-কমেডোজেনিক ফেস অয়েলও ব্যবহার করা যাবে। যেমন মারুলা অয়েল, রোজ হিপ সিড অয়েল ইত্যাদি।
* ত্বকের অবস্থা যদি ‘দ্য আতকামা’ মরুভূমির মতো হয়, তাহলে স্লাগিংকে অবশ্যই ‘হ্যাঁ’ বলুন।
* ত্বকে যদি জ্বালাপোড়া ভাব বা একজিমার মতো যন্ত্রণা থেকে থাকে, নির্দ্বিধায় এই ট্রেন্ডে গা ভাসিয়ে দিন।
* স্লাগিংয়ের জন্য এমন অকক্লুসিভ পণ্য কিনুন, যা ত্বকের ধরনের সঙ্গে মানিয়ে যায়। যেমন অতিরিক্ত শুষ্ক ত্বকের জন্য ভ্যাসলিন, মিশ্র ত্বকের জন্য ক্ল্যাসিক নীল টিনের কৌটার নিভিয়া ক্রিম, তৈলাক্ত ও সংবেদনশীল ত্বকের জন্য স্কুয়ালেন অয়েল বেশ ভালো।

* একনে-প্রোন বা অনেক ব্রণ আছে, এমন ত্বকে ভুলেও স্লাগিং করা যাবে না।
* মিশ্র ত্বক হলে পুরো ত্বকে অকক্লুসিভ না করলেও চলবে। শুধু শুষ্ক অংশে ব্যবহার করুন।
* যে রাতে আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড (এএইচএ) বা বিটা হাইড্রক্সি অ্যাসিডের (বিএইচএ) মতো কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর বা রেটিনয়েড ব্যবহার করা হবে, সে রাতে স্লাগিং করার কোনো দরকার নেই। এতে ত্বকে একটা খারাপ প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা থাকে।

ছবি: পেকজেলসডটকম

প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯: ০০
বিজ্ঞাপন