পানিশূন্যতা, একনে কিংবা ছোট ছোট বাম্পস- আবহাওয়া পরিবর্তনের এই সময়ে সমস্যাগুলো অনেক বেশি দেখা যায়। চলুন আজকে জেনে নেওয়া যাক যেকোনো আবহাওয়ায় ত্বককে সুস্থ- সুন্দর রাখতে ও এর যত্নে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হয়।
হিটওয়েভ মানেই প্রচণ্ড ঘাম হওয়া, আর ঘামের সঙ্গে বেরিয়ে যায় শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক নিউট্রিয়েন্টস। এই নিউট্রিয়েন্টস যে শুধু আমাদের কিডনি বা হার্টের জন্য প্রয়োজনীয় তা নয়, বরং ত্বকের জন্যও অতি প্রয়োজনীয়। তাই এই নিউট্রিয়েন্টস না পেলে স্কিন তার সহজাত পূর্ণতা তো হারাবেই! পানি পান করার বিষয়টি আমরা অনেকেই সেভাবে গুরুত্ব দেই না, তবে ত্বক সুস্থ রাখতে চাইলে এইটুকু তো করতেই হবে! দিনে অন্তত দেড়-দুই লিটার পানি শরীরের স্বাভাবিক ফাংশন ঠিক রাখার পাশাপাশি স্কিনকেও করে তুলবে লাবণ্যদীপ্ত! এ ছাড়া বাইরের তাপমাত্রার কারণে ত্বকের শুষ্ক হয়ে যাওয়া রোধ করতে ব্যবহার করতে পারেন হায়ালু্রোনিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার। এতে করে ত্বক ভেতর ও বাহির দুই দিক থেকেই থাকবে সুরক্ষিত।
সানস্ক্রিন এই গরমে সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি রশ্মি থেকে আমাদের ত্বককে সুরক্ষা দেয়। তাই নিয়ম করে বের হওয়ার ১৫ মিনিট আগে তিন আঙুলের সমান পরিমাণ সানস্ক্রিন লাগিয়ে নিন। ত্বকের সঙ্গে মানানসই সানস্ক্রিন খুঁজে নেওয়া উচিত। এবং এসপিএফ হতে হবে ৫০ বা এর থেকে বেশি। অনেক সময় সানস্ক্রিন মুখে সাদা হয়ে থাকে (হোয়াইট কাস্ট)। বের হওয়ার বেশ কিছুক্ষণ আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে ত্বকে তা ভালোভাবে বসে যায় এবং হোয়াইট কাস্ট কমে আসে। সানস্ক্রিন ত্বককে শুধু রোদের পোড়া ভাব কমায় না, বরং অকালে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়াও রোধ করে।
যখন সূর্য একেবারে মাথার উপড়ে থাকে, বিশেষ করে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩টা। এসময় চেষ্টা করতে হবে যথাসম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে থাকতে। এতে করে ত্বক সরাসরি সূর্যরশ্মি থেকে যেমন বাঁচবে, একই সঙ্গে স্বস্তিতেও থাকবে। যদি এই সময় একান্তই বাইরে যেতে হয়, তাহলে ছাতা কিংবা লম্বা হাতাযুক্ত জামাকাপড় ব্যবহার করা জরুরি। এতে ত্বক যথাসম্ভব আবৃত থাকবে এবং ক্ষতিকর ইউভি রশ্মি থেকেও সুরক্ষিত থাকবে।
সপ্তাহে ১-২ বার ত্বক এক্সফোলিয়েট করা উচিত। এতে ত্বকের উপরিভাগে মরা কোষ পরিষ্কার করবে। রাতের বেলা ত্বক নিজেই সারাই প্রক্রিয়া চালায়। তাই সবচেয়ে ভালো হয় যদি এই গরমে নাইট স্কিন কেয়ারের প্রতি একটু সতর্ক হওয়া যায়। ত্বক ভালোভাবে ফেইসওয়াশ দিয়ে ক্লিন করে নিয়ে ত্বকের কনসার্ন অনুযায়ী সিরাম লাগিয়ে ভালো একটি ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করে রাতে ঘুমোতে গেলে সকালে সফট অ্যান্ড ব্রাইট স্কিন পাওয়া আসলেই দুষ্কর নয়।
গরম বা বৃষ্টি যাই হোক, কাজ তো আর থেমে থাকে না। যতই আমরা চাই স্কিন সুস্থ-সুন্দর, উজ্জ্বল থাকুক। কিন্তু প্রতিদিন ত্বককে লড়াই করতে হয় ধুলাবালি, ময়লা, দূষণের সঙ্গে। যার ফলে স্কিন দিনের পর দিন হয়ে যায় নিষ্প্রাণ ও নির্জীব। তাই ত্বক সুন্দর রাখার সবচেয়ে ভালো সমাধান হলো স্কিনকেয়ার রুটিনে ভিটামিন-সি যুক্ত করা। ত্বকের জন্য ক্ষতিকর উপাদানগুলোর বিরুদ্ধে কাজ করে এই ভিটামিন-সি। এ ছাড়া এটি কোলাজেন তৈরি করে, যার ফলে নতুন কোষ তৈরি হয় এবং ত্বকের তারুণ্যদীপ্ত বজায় থাকে। ভিটামিন- সি দিনের বেলায় ব্যবহার করলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
আমাদের প্রকৃতির নিয়মের ওপর হাত নেই ঠিকই, কিন্তু নিজেদের অভ্যাস, জীবনযাপন এসব আমরা চাইলেই পরিবর্তন করতে পারি। এবং ত্বক সুস্থ-সুন্দর রাখতে পারি। একটু সতর্কতাই এই আবহাওয়ায় মধ্যে আপনার ত্বককে রাখতে পারে সুরক্ষিত।
হিরো ইমেজ: এফা তাবাসসুম
ছবি: পেকজেলসডটকম