এই ৪টি দেশি গাছের পাতার আছে অবাক করা গুণ
শেয়ার করুন
ফলো করুন

সৌন্দর্যচর্চায় বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার হয়ে আসছে প্রাচীনকাল থেকেই। এই প্রাকৃতিক উপাদানগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পাতা। ত্বক ও চুলের পরিচর্যায় নিম ও তুলসীপাতার উপকারিতার কথা কমবেশি সবাই জানে। তাই সৌন্দর্যচর্চায় এ দুই পাতার জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। তবে আমরা অনেকেই জানি না, এ দুটি পাতা ছাড়াও আমাদের পরিচিত আরও অনেক পাতা আছে, যাদের রয়েছে অসাধারণ সব ঔষধি গুণ, যা আমাদের ত্বক ও চুলের সুস্থতায় বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।

শজনেপাতা

ছবি: হাল ফ্যাশন
ছবি: হাল ফ্যাশন

শজনেডাঁটার মতো এর পাতাও বিভিন্ন রকম ঔষধি গুণাগুণে ভরপুর। এ পাতায় রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিন বি ৬, আয়রন, ভিটামিন এ, সি, ম্যাগনেশিয়াম এবং প্রচুর অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। ত্বকের বলিরেখা, ব্রণ এবং দাগছোপ দূর করতে এটি বেশ কার্যকর।

এক চামচ শজনেপাতার গুঁড়ার সঙ্গে আধা চামচ মধু, আধা চামচ গোলাপজল এবং আধা চামচ লেবুর রস যোগ করে ঘন ও মসৃণ মিশ্রণ তৈরি করুন। মিশ্রণটি ১০ মিনিট মুখে লাগিয়ে রেখে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
শজনেপাতার অ্যান্টি–ব্যাকটেরিয়াল উপাদান চুলের খুশকি দূর করতে পারে। এর জন্য নারকেল তেলের সঙ্গে শজনেপাতা পেস্ট মিশিয়ে মাথার ত্বকে এক ঘণ্টা লাগিয়ে অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে খুশকি দূর হওয়ার পাশাপাশি স্কাল্পের শুষ্কভাব দূর হবে।

বিজ্ঞাপন

পানপাতা

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

পানপাতা মুখের স্বাদ বাড়ানো বা খাবার হজম করার পাশাপাশি ত্বক ও চুলের নানা সমস্যা সমাধান করতে বেশ সহায়ক। ত্বকে ব্রণ বা অ্যালার্জির সমস্যা দূর করতে সাত-আটটা পানপাতা পানিতে জ্বাল দিয়ে সেই পানি দিয়ে মুখ ধুতে কিংবা গোসল করতে পারেন। এ ছাড়া পানপাতা হলুদের সঙ্গে মিশিয়ে বেটে মুখে লাগালে ব্রণ বা ফুসকুড়ি দ্রুত সেরে যাবে।

পানপাতা ক্যালসিয়ামের খুব ভালো উৎস। এ জন্য চুল পড়ার হার কমাতে নারকেল তেলের সঙ্গে পানপাতার পেস্ট মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। সপ্তাহে তিন থেকে চারবার এই মিশ্রণ ব্যবহার করলে চুল ঝরার সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আসবে এবং নতুন চুলও গজাবে।

বিজ্ঞাপন

পেয়ারাপাতা

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

অনেক দেশে অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন অসুখের চিকিৎসায় পেয়ারাপাতার ব্যবহার হয়ে আসছে। এতে আছে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, অ্যান্টি–ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি–ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান। এর অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ফ্রি র‍্যাডিক্যাল ধ্বংস করে ত্বকের বার্ধক্য রোধ করতে সহায়তা করে। এ ছাড়া ব্ল্যাকহেডস, ব্রণ কমাতে পেয়ারাপাতা ব্যবহার করা যায়।

২ টেবিল চামচ পেয়ারাপাতার সঙ্গে, আধা চামচ তুলসীপাতা, আধা চামচ গোলাপজল, সামান্য হলুদ ও এক চামচ দুধ মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। পরিষ্কার ত্বকে প্যাকটি ১০ থেকে ১৫ মিনিট লাগিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বক হবে উজ্জ্বল ও টান টান।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি গবেষণায় দেখা গেছে, পেয়ারাপাতায় থাকা ভিটামিন বি চুলের গোড়া মজবুত করে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। এ জন্য কয়েকটি পেয়ারাপাতা পানিতে ২০ মিনিট জ্বাল দিয়ে সেই পানি চুলে ঘণ্টাখানেক লাগিয়ে ধুয়ে ফেললেই হবে।

পেঁপেপাতা

ছবি: উইকিপিডিয়া
ছবি: উইকিপিডিয়া

পেঁপেপাতায় থাকা কার্পাইন ত্বকের স্বাস্থ্যকর বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এ ছাড়া পাতাটিতে বিদ্যমান ভিটামিন আর খনিজ উপাদান যেমন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, সোডিয়াম আর আয়রন ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে ত্বক ফরসা করে থাকে।

স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক পেতে ২ টেবিল চামচ পেঁপেপাতাবাটার সঙ্গে ১ চা–চামচ চন্দনগুঁড়া মিশিয়ে ব্যবহার করুন। এ ছাড়া ত্বকের কোনো সংক্রমণ সারাতে, ২ টেবিল চামচ পেঁপেপাতার সঙ্গে ১ টেবিল চামচ হলুদ বা নিম পাউডার মিশিয়ে মিশ্রণটি সংক্রমিত স্থানে লাগালে উপকার পাওয়া যাবে।

প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৪, ১৫: ৪৬
বিজ্ঞাপন