
সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে শেয়ার করা এক ভিডিওতে তিনি তুলে ধরেছেন তার সম্পূর্ণ মর্নিং রুটিন—যা ত্বক, শরীর ও মন—তিনটির একসঙ্গে যত্নই নেয়।
মানুষীর সকালের প্রথম ধাপ খুবই সাধারণ। তিনি সকালে কোনো ফেসওয়াশ ব্যবহার করেন না। শুধুমাত্র পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নেন। তার যুক্তি—রাতে ত্বক নিজে থেকেই প্রাকৃতিক তেল তৈরি করে, যা সকালে ধুয়ে ফেললে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে যাদের ড্রাই স্কিন, তাদের জন্য এটি বেশ কার্যকর।
একটি ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস—মুখ ধোয়ার পর তোয়ালে দিয়ে ঘষে নয়, আলতো করে চাপ দিয়ে পানি মুছে নেওয়া।

সকালের সবচেয়ে প্রিয় ধাপ হিসেবে মানুষী বেছে নেন মধু। কখনো তিনি মধু দিয়ে মুখ ধুয়ে নেন, আবার সময় থাকলে সেটিকে মাস্ক হিসেবে কিছুক্ষণ রেখে দেন। মধু ত্বককে গভীরভাবে হাইড্রেট করে, গ্লো বাড়ায় এবং ত্বককে নরম রাখে—এ কারণেই এটি তার স্কিনকেয়ারের স্থায়ী অংশ।

মুখে মাস্ক থাকাকালীনই মানুষী তৈরি করেন তার দিনের প্রথম পানীয়—হাইড্রোজেনেটেড পানি। এটি তার বাবার পরামর্শে শুরু করা। মানুষের মতে, এই পানি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি গুণে ভরপুর এবং এটি খাওয়ার পর থেকে তিনি শক্তি ও এনার্জির পার্থক্য অনুভব করছেন।

জিমে যাওয়ার আগে ভারী কোনো স্কিনকেয়ার তিনি একেবারেই পছন্দ করেন না। তাই ব্যবহার করেন ওজোনেটেড গ্লিসারিন—যা হালকা, নন-কমেডোজেনিক এবং ত্বককে প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা দেয়। ব্রণ প্রবণ ও শুষ্ক—দুই ধরনের ত্বকের জন্যই এটি উপযোগী।

মানুষীর রুটিনের সবচেয়ে ব্যতিক্রমী অংশ তার বিশেষ ড্রিংক। ডাক্তারের পরামর্শে তিনি ম্যালিক অ্যাসিড, অ্যাসকরবিক অ্যাসিড (ভিটামিন সি), অল্প পটাশিয়াম ক্লোরাইড, আয়োডিন ও মিথিলিন ব্লু গ্রহণ করেন। তার মতে, এই ছোট ছোট উপাদানগুলো শরীরের এনার্জি, ত্বক ও ইনফ্ল্যামেশনের ওপর ধীরে কিন্তু স্পষ্ট প্রভাব ফেলে।
ফিটনেস মানেই যে জটিল ডায়েট, মানুষী তা বিশ্বাস করেন না। তার প্রি-ওয়ার্কআউট মিল একেবারেই ঘরোয়া—সামান্য ডাল, ভাত ও ঘি। এতে থাকে প্রয়োজনীয় কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট, যা ওয়ার্কআউটের জন্য যথেষ্ট শক্তি জোগায়।

ব্যায়াম ও নাশতার পর শুরু হয় তার স্কিনকেয়ারের মূল পর্ব। প্রথমে ময়েশ্চারাইজার—যাকে তিনি শুধু ত্বকের যত্ন নয়, নিজের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটানোর সুযোগ হিসেবেও দেখেন। এরপর আই ক্রিম এবং অবশ্যই সানস্ক্রিন। কলেজ জীবন থেকেই সানস্ক্রিন ব্যবহারে নিয়মিত মানুষী, যা তার আজকের সুস্থ ত্বকের বড় কারণ বলে তিনি মনে করেন।
মানুষী ছিল্লারের মর্নিং রুটিন আমাদের মনে করিয়ে দেয়—গ্লোয়িং স্কিন কোনো ম্যাজিক নয়। বরং নিয়মিত ছোট অভ্যাস, প্রাকৃতিক উপাদান, শরীরের প্রয়োজন বোঝা এবং নিজের জন্য সময় বের করাই আসল সৌন্দর্যের চাবিকাঠি।
হাল ফ্যাশনের পাঠকদের জন্য এই রুটিন হতে পারে এক বাস্তব অনুপ্রেরণা—যেখানে বিলাস নয়, সচেতন যত্নই সৌন্দর্যের মূল দর্শন।
ছবি: মানুষী ছিল্লারের ইনস্টাগ্রাম