চুল ভেজানোর আগে ভালো করে ব্রাশ করতে হবে, যাতে স্নানের সময় ভিজে গেলে আর জট না লাগে। একই সঙ্গে স্নানের আগে চুলে তেল দিয়ে কন্ডিশন করুন। চুলকে কন্ডিশন ও ময়েশ্চারাইজ করার একটি ভালো উপায় হলো, তেল দিয়ে ম্যাসাজ করা। ধোয়ার আগে নারকেল, বাদাম বা অলিভ অয়েল দিয়ে চুল ও মাথার ত্বক এক ঘণ্টা আগে ম্যাসাজ করা উচিত। তেল আপনার চুলকে নরম, ঝলমলে এবং ফ্রিজ-মুক্ত করে ভেতর থেকে পুষ্টি জোগাবে।
দ্বিতীয়ত, মাথার ত্বকের ছিদ্রগুলো প্রায়ই তেল আর ময়লায় আটকে থাকে। সেগুলো পরিষ্কার করার সর্বোত্তম উপায় হলো চুলকে স্টিম করা। এটি করার জন্য গরম পানিতে একটি তোয়ালে ভিজিয়ে পানি নিংড়ে তা মাথার চারপাশে জড়িয়ে রাখুন। স্নানের ২০ মিনিট আগে এটা করতে হবে।
শ্যাম্পু করার আগে স্টিম করা চুলে ম্যাসাজ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। চুল স্টিম করার পর কয়েক মিনিট আঙুল দিয়ে মাথার ত্বকে আলতোভাবে ম্যাসাজ করতে হবে, যা মাথার ত্বকের ময়লা এবং চুলের জমাট বাঁধা দূর করতে সাহায্য করবে।
স্নানে ঠান্ডা বা ঈষদুষ্ণ পানি ব্যবহার করা উচিত। চুলের জন্য অতিরিক্ত গরম পানি বা হিট সরঞ্জামের ব্যবহার ক্ষতির কারণ হতে পারে। গরম পানির তাপ চুলের গোড়ায় থাকা প্রাকৃতিক তেলকে নষ্ট করে দিতে পারে এবং চুলের কিউটিকলগুলোও খুলে যায়। ফলে চুলের সব আর্দ্রতা বেরিয়ে যায়। অন্যদিকে, ঠান্ডা বা ঈষদুষ্ণ পানির ব্যবহার কিউটিকল বন্ধ করতে এবং আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
শুধু মাথার ত্বকে শ্যাম্পু লাগাতে হবে। শ্যাম্পু করার উদ্দেশ্য হলো মাথার ত্বক থেকে ময়লা, মৃত কোষ পরিষ্কার করা। তাই এক–চতুর্থাংশ পরিমাণ শ্যাম্পু নিয়ে এটি চুলের গোড়া এবং মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করতে হবে। শ্যাম্পু করার সময় বৃত্তাকার গতিতে আলতোভাবে আঙুল দিয়ে মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করলে ভালো। ফলে সহজেই ময়লা পরিষ্কার হবে এবং চুলের ফলিকলগুলোতে রক্ত সঞ্চালন ঘটবে। এটি চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। সেই সঙ্গে সপ্তাহে একবার ডিপ কন্ডিশনার বা হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করতে পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
শ্যাম্পু করার সময় বাড়াবেন না। চুল ভেজা অবস্থায় সবচেয়ে ভঙ্গুর অবস্থায় থাকে। সুতরাং চুল ভেজানোর ১৫ মিনিটের মধ্যে শ্যাম্পু করে কন্ডিশন করা উচিত। প্রতিদিন চুলে শ্যাম্পু করাও উচিত নয়। বেশির ভাগ শ্যাম্পুতে এমন রাসায়নিক উপাদান থাকে, যা প্রতিদিন ব্যবহার করলে চুল অত্যন্ত শুষ্ক এবং ভঙ্গুর হতে পারে। চুলের স্বাস্থ্য এবং সর্বোত্তম আর্দ্রতা বজায় রাখতে বিশেষজ্ঞরা সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিনের বেশি চুল না ধোয়ার পরামর্শ দেন।
স্নানের পর একটি সুতি টি-শার্ট বা মাইক্রোফাইবার তোয়ালে ব্যবহার করা শ্রেয়। সুতির টি-শার্ট বা মাইক্রোফাইবার তোয়ালে প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ছাড়াই অতিরিক্ত জল শুষে নিতে পারে। পাশাপাশি চুল শোকাতে ব্লো ড্রায়ার ব্যবহার এড়িয়ে চলা বাঞ্ছনীয়। কারণ, ব্লো ড্রায়ারের তাপ চুলের ক্ষতি করতে পারে।
সব সময় আধা শুকনা অবস্থায় চুলে আঁচড়াতে হবে। ভেজা চুল ব্রাশ করা যাবে না, তা আপনার চুলের জন্য সবচেয়ে ক্ষতির কারণ হতে পারে। ভেজা চুলের গোড়া নরম থাকে, তাই আধা শুকনা চুল আঁচড়াতে হবে।
ছবি: পেকজেলসডটকম