সুন্দর ঘন ভ্রু পেতে হলে যা করতে হবে
শেয়ার করুন
ফলো করুন

এখন বিউটি ট্রেন্ডে ঘন ভ্রুর বেশ কদর দেখা যাচ্ছে। কিন্তু এখন একে কেবল একটা ট্রেন্ড হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে না। এই লুক নারীদের জন্মগত শারীরিক বৈশিষ্ট্যের যে স্বাভাবিক সৌন্দর্য, তা উপলব্ধি করতে উৎসাহ জোগাচ্ছে। কিন্তু সবার তো আর ঘন, কালো ভ্রু থাকে না। অনেক কারণে এটি বৃদ্ধি পায় না। যেমন জিন, পুষ্টির অভাব, হরমোন, বড় কোনো রোগের চিকিৎসা বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, আঁটকে থাকা রোমকূপ, বার্ধক্য। এসব সমস্যার জন্য যাঁদের ভ্রু বৃদ্ধি পায় না, তাঁদের অনেকেই মাইক্রোব্লেডিং বা মাইক্রোশেডিংয়ের মতো সেমি পার্মানেন্ট মেকআপ টেকনিকের দ্বারস্থ হচ্ছে। কিন্তু এতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার অনেক সম্ভাবনা থাকে। সত্যি কথা বলতে, প্রাকৃতিকভাবে ভ্রুর বৃদ্ধি ঘটানো কিন্তু সম্ভব। এ জন্য দরকার কিছু প্রাকৃতিক উপাদান, স্মার্ট গ্রুমিং ও অনেক ধৈর্য।

এক্সফোলিয়েশন

ভ্রুর বৃদ্ধিতে সবার প্রথমে নজর দিন এক্সফোলিয়েশনে এবং সেটি করতে হবে সঠিকভাবে। ত্বক যখন স্ক্রাব করা হয়, তখনই এটি করতে পারেন। স্ক্রাব বা এক্সফোলিয়েটর দিয়ে ভ্রু এবং এর আশপাশে ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড ম্যাসাজ করলেই চলবে। তবে খুবই সাবধানে ও আলতোভাবে। বেশি জোরে ম্যাসাজ করলে হিতে বিপরীত হতে পারে।

ক্যাস্টর অয়েল

প্রাকৃতিকভাবে ভ্রু বৃদ্ধির এটি সবচেয়ে সাধারণ কিন্তু কার্যকর উপায়। এতে রয়েছে ৯০ শতাংশ রাইসিনোলিয়েক অ্যাসিড। এই অ্যাসিড চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। কয়েক ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল নিয়ে আঙুলের সাহায্যে ভ্রুতে ম্যাসাজ করতে হবে। ত্রিশ মিনিট রেখে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

বিজ্ঞাপন

নারকেল তেল

চুলের পরিচর্যায় যুগ যুগ ধরে নারকেল তেলের ব্যবহার হয়ে আসছে। চুলের মতো ভ্রু বৃদ্ধিতেও এটি বেশ ভালো ভূমিকা রাখতে পারে। কারণ এটি প্রয়োজনীয় সব মিনারেল, ভিটামিন এবং ফ্যাটি অ্যাসিডে পরিপূর্ণ। এসব উপাদান ভ্রুর ফলিকলকে উদ্দীপিত করে তা দ্রুত বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে। আঙুল বা তুলার সাহায্যে ভ্রু এবং এর আশপাশে তেল দিয়ে ম্যাসাজ করে সারা রাত রেখে দিতে হবে। সকালে ঘুম থেকে উঠে ধুয়ে ফেললেই চলবে। ভ্রু ময়েশ্চারাইজ ও হাইড্রেট করতে নারকেল তেল দিয়ে নিয়মিত ম্যাসাজ করতে হবে।

জলপাই তেল

ত্বকের সুস্থতায় জলপাই তেল বেশ ভালোই কাজ করে থাকে। ভ্রুর ট্রিটমেন্ট করতেও এটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন। কারণ এতে রয়েছে ওলোরোপিন নামের একধরনের ফেনোলিক যৌগ, যা চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। জলপাই তেলে আরও আছে ভিটামিন এ এবং ই, যা চুলের সুস্থতার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

বিজ্ঞাপন

অ্যালোভেরা
বর্তমানে রূপচর্চায় ব্যবহৃত সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রাকৃতিক উপাদান হলো অ্যালোভেরা জেল। চুল ও ত্বকের পরিচর্যায় এর জাদুকরী ভূমিকায় মুগ্ধ সবাই। সুন্দর, ঘন ভ্রু পেতে চাইলে অ্যালোভেরা ব্যবহার করে দেখুন। এতে আছে অ্যালোনিন নামের একটি বিশেষ যৌগ। এই অ্যালোনিন চুলের বৃদ্ধি ঘটায়। তাই ভ্রুর বৃদ্ধিতেও অ্যালোভেরা বেশ কার্যকর উপাদান হতে পারে। এটি ভ্রুতে মেখে সারা রাতের জন্য রেখে সকালে ধুয়ে ফেলতে হবে।

ঘরোয়া সিরাম
দ্রুত ঘন ও সুন্দর ভ্রু পেতে হলে ব্যবহার করতে পারেন আইব্রো সিরাম। বাজারে অনেক ভালো মানের সিরাম পাওয়া যাচ্ছে। তবে এটি ঘরোয়াভাবেও বানানো যায়। হলিউডের বিখ্যাত বিউটি স্যালন ও ব্রো বার সাবলাইম আইজের অ্যাসথেটিশিয়ান ডেনিস উইলসন বিখ্যাত বিউটি ওয়েবসাইট বার্ডিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ক্যাস্টর অয়েল, আর্গান অয়েল ও ভিটামিন ই-এর মিশ্রণ কটন বাড বা আঙুলের সাহায্যে ভ্রুতে ঘষে লাগান এবং সকাল পর্যন্ত রেখে দিন। যেসব অংশে নতুন বা ঘন চুল গজাচ্ছে না, সেই দিকে মনোযোগ দিন। এটি একটি অনেক পুরোনো সৌন্দর্যরহস্য, যা আমরা স্যালনে ব্যবহার করি এবং ক্লায়েন্টরা কয়েক মাসের ভেতর এর ফলাফল দেখতে পান।

স্মার্ট গ্রুমিং

প্রথমে ধৈর্য ধরতে হবে। থাকতে হবে হাইড্রেটেড। ভেতর থেকে যেমন, বাইরে থেকেও ঠিক তেমনই। কারণ, সুস্থ এবং হাইড্রেটেড ত্বক ভ্রু বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য।

অবশ্যই টুইজিং এবং প্লাকিং থেকে দূরে থাকতে হবে। রোজ ভ্রুর আশপাশে ম্যাসাজ করার পাশাপাশি আপওয়ার্ড মোশনে আইব্রো ব্রাশ বা স্পুলি দিয়ে ভ্রু আঁচড়াতে হবে।

তথ্যসূত্র: অ্যালিউর

ছবি: হাল ফ্যাশন ও পেকজেলস ডট কম

প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৭: ৫৭
বিজ্ঞাপন