শুষ্কতা দূর করতে প্রসাধনী নয়, দরকার ত্বক চর্চার সঠিক রুটিন
শেয়ার করুন
ফলো করুন

শুষ্ক ত্বক নিয়ে ভোগান্তির শেষ নেই। কখনো ত্বকের চামড়া উঠে আসছে, খসখসে হয়ে যাচ্ছে, সংবেদনশীলতা বেড়ে যাচ্ছে। এই সমস্যা সমাধানের উপায় হচ্ছে কিছু নিয়ম মেনে চলা। সঙ্গে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে সঠিক প্রসাধনী ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা, খাবার নিয়ম ঠিক আছে কিনা, যেসব প্রসাধনী ত্বকের যত্নে ব্যবহার করা হচ্ছে সেগুলো প্রাকৃতিক কিনা। শুষ্ক ত্বককে কীভাবে সুন্দর ও আর্দ্রতাময় রাখা যায় সে সম্পর্কে চলুন জেনে নেয়া যাক।

শুষ্ক ত্বকের প্রতিদিনের রুটিন

ত্বকের ধরন যেমনই হোক, নিয়মিত যত্ন নেয়া জরুরি। শুষ্ক ত্বকে আর্দ্রতা ফেরাতে এই রুটিন আরও বেশি করে মানতে হবে। যে ধরনের রুটিন এ ক্ষেত্রে মেনে চলা উচিত-

ক্লিনজিং

শুষ্ক ত্বকের জন্য জেন্টল ও হাইড্রেটিং ক্লিনজার ব্যবহার করতে হবে যেটা ত্বকের প্রাকৃতিক তেল ধরে রাখবে। গ্লিসারিন ও হায়ালুরনিক অ্যাসিড যুক্ত ক্লিনজার এ ক্ষেত্রে আদর্শ বলা যায়। গরম পানি দিয়ে মুখ ধোয়া থেকে বিরত থাকুন।

সিরাম লাগানো

ময়েশ্চারাইজার লাগানোর আগে সিরাম দিয়ে ত্বক আর্দ্র করে নিন। এতে স্কিনের ময়েশ্চার লেভেল অনেকটাই ভালো থাকবে। হায়ালুরনিক অ্যাসিড ও রোজ এক্সট্র্যাক্ট রয়েছে এমন সিরাম বেছে নিন।

ময়েশ্চারাইজিং

ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার করে নেয়ার পর ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। এতে ত্বকে রুক্ষ ভাব থাকবে না। এক্ষেত্রে বেছে নিন এমন প্রসাধনী যেগুলোতে শিয়া বাটার, জোজোবা অয়েল, অ্যালোভেরা রয়েছে। এসব উপাদানে তৈরি ময়েশ্চারাইজার শুষ্ক ত্বককেও নরম ও কোমল করে তোলে।

সাপ্তাহিক যত্ন

যাদের ত্বক শুষ্ক তারা সপ্তাহে একটি হাইড্রেটিং মাস্ক ব্যবহার করলে উপকার পাবেন। অ্যালোভেরা, মধু, প্রাকৃতিক তেলযুক্ত উপাদান দিয়ে তৈরি এসব মাস্ক ত্বককে আর্দ্র রাখতে দারুণ কার্যকরী। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক হয়ে উঠবে উজ্জ্বলও।

বিজ্ঞাপন

শরীরের যত্ন

মুখের ত্বকের সঙ্গে সঙ্গে শরীরের যত্ন নেয়ার কথা ভুলে গেলে কিন্তু চলবে না। বডি অয়েল ব্যবহার করতে পারেন এ ক্ষেত্রে। এতে ত্বক আর্দ্র ও মোলায়েম থাকবে। গোসল শেষে লাগিয়ে নিলে ময়েশ্চার লক হয়ে যাবে, ত্বকের রুক্ষতা কমে যাবে।

খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন

আপনি কী খাচ্ছেন সেটার উপরও ত্বকের শুষ্ক হওয়া না হওয়া নির্ভর করে। যে ধরনের খাদ্যাভ্যাস এমন ত্বকের অধিকারীরা মেনে চলবেন-

পর্যাপ্ত পানি

সারাদিনে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে, অন্তত ৮ গ্লাস। এতে শরীর আর্দ্র থাকবে। শুষ্ক হওয়ার শঙ্কা কমে যাবে।

স্বাস্থ্যকর চর্বি

যেসব খাবারে স্বাস্থ্যকর চর্বি আছে সেগুলো খাদ্যতালিকায় যুক্ত করতে হবে। যেমন- বিভিন্ন ধরনের বাদাম, সবুজ শাকসবজি। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডও শুষ্ক ত্বকের সমস্যা কমায়। এই উপাদান যুক্ত খাবার খেলেও ত্বক ভালো থাকে।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট

যেসব ফল ও সবজিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উচ্চ মাত্রায় রয়েছে সেগুলো নিয়মিত খেতে হবে। যেমন- পালং শাক, গাজর, বেরি ইত্যাদি। পরিবেশগত দূষণ থেকে এসব খাবার ত্বক ভালো রাখে।

ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল বাদ দেয়া

ত্বক অল্প সময়ে শুষ্ক করে দিতে পারে ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল। এসব খাওয়া বাদ দিতে হবে যত দ্রুত সম্ভব। এর বদলে পানি পানের পরিমাণ বাড়াতে হবে।

ঘরোয়া উপাদান দিয়ে তৈরি মাস্ক

শুষ্ক ত্বককে আরাম দেয়ার জন্য ঘরোয়া কিছু মাস্ক দারুণ কার্যকর হতে পারে। কয়েকটি মাস্ক সম্পর্কে চলুন জেনে নেয়া যাক-

অ্যালোভেরা ও মধুর মাস্ক

সম পরিমাণ অ্যালোভেরা ও মধু মিশিয়ে নিন। মুখে লাগিয়ে ১৫/২০ মিনিট অপেক্ষা করে মুখ ধুয়ে ফেলুন। অ্যালোভেরা ত্বকে আর্দ্রতা দিবে, মধু ময়েশ্চার লক করবে।

ওটমিল ও টক দইয়ের মাস্ক

দুই চা চামচ ওটমিল গুঁড়ো করে সামান্য টকদইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। মাস্ক শুকিয়ে আসলে আলতো করে ঘষে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এই মাস্ক স্ক্রাবিং এর কাজও করবে, ত্বকে থাকা মৃত কোষ দূর করতে সাহায্য করবে। ত্বকের কোমলতা ফিরিয়ে আনবে।

নারিকেল তেল দিয়ে ম্যাসাজ

রাতে ঘুমানোর আগে সামান্য নারিকেল তেল নিয়ে মুখে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন। আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য এই তেল দারুণ কাজ করে, ত্বক শুষ্ক হওয়ার প্রবণতা কমিয়ে আনে।

অনেকেই ভাবেন ত্বক শুধু শীতকালেই শুষ্ক হয়, মোটেও তা নয়। গরমকালেও ত্বকের এই সমস্যা হতে পারে। তাই এই সময়েও ত্বকের যত্ন নিতে হবে নিয়ম মেনে।

বিজ্ঞাপন
প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০: ৪০
বিজ্ঞাপন