বিউটি ব্লকে বাকুচিওলের যাত্রা খুব বেশি দিনের নয়। এই নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। ২০১৯ সালে দ্য ব্রিটিশ জার্নাল অব ডার্মাটোলজির করা এক সমীক্ষায় এসেছে যে ত্বকের বলিরেখা ও হাইপারপিগমেন্টেশন দূর করার ক্ষেত্রে রেটিনল ও বাকুচিওলের কোনো পার্থক্য নেই; বরং বাকুচিওলকে রেটিনলের চেয়ে ভালো বলা যেতে পারে। কারণ, রেটিনল ব্যবহারে ত্বকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়। এর জন্য অনেকের ত্বক সংবেদনশীল হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু বাকুচিওল ব্যবহারে এ ধরনের কোনো সমস্যা হয় না। গবেষণায় দেখা গেছে যে ত্বকের সংবেদনশীলতা দূরে এটি ম্যাজিকের মতো কাজ করে।
সৌন্দর্যের দুনিয়ায় রেটিনল খুব পরিচিত একটি নাম। ত্বকের ব্রণ ও বলিরেখা নিরাময়ে অত্যন্ত কার্যকর এই উপাদান। কিন্তু এটি সবার ত্বকের জন্য নয়, বিশেষ করে যাঁদের ত্বক সংবেদনশীল। তবে এমন একটি উপাদান আছে, যাকে রেটিনলের সেরা বিকল্প বলা হয়। আর তা হলো বাকুচিওল। যদি কোনো ডার্মাটোলজিস্টকে জিজ্ঞাসা করা হয়, ত্বকের বার্ধক্য রোধ ও ব্রণ নিরাময়ের সবচেয়ে কার্যকর দাওয়াই কোনটা, তাহলে সবাই এক জবাবে রেটিনলের নাম বলবেন। কিন্তু এটি সব ত্বকের জন্য নয়।
সংবেদনশীল ত্বকের অধিকারী যাঁরা, তাঁদের রেটিনল ব্যবহার করলে ত্বকে জ্বলুনি, লালচে ভাব, চুলকানির মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে দেখা যায়। স্বাভাবিক ত্বকের অধিকারী যাঁরা, তাঁদের ত্বক রেটিনল ব্যবহারে আলোর প্রতি সংবেদনশীল হয়ে ওঠার ঝুঁকি থাকে। তাই অনেক উপকারী হওয়া সত্ত্বেও অনেকে রেটিনল ব্যবহার করতে সাহস পান না। তবে সুখবর হলো, বিজ্ঞানীরা অনেক গবেষণা করে এমন একটি উপাদান আবিষ্কার করেছেন, যা রেটিনলের সবচেয়ে ভালো বিকল্প হিসেবে কাজ করতে সক্ষম। আর এই উপাদানের নাম বাকুচিওল।
বাকুচিওলের উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। এটি ত্বককে আর্দ্র রাখে এবং ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে কালচে ছোপ বা হাইপারপিগমেন্টেশন দূর করে। রেটিনলের মতো বাকুচিওল ত্বকের কোষকে পুনরুজ্জীবিত ও কোলাজেন তৈরি করতে পারে। ফলে ত্বকের বলিরেখা বা বার্ধক্যের ছাপ কমতে থাকে। এতে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। তাই বাকুচিওল ব্রণও সারিয়ে তুলতে পারে। রেটিনল ব্যবহার করলে অন্যান্য স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হয়। রূপ রুটিনে রেটিনল থাকলে বাদ দিতে হবে ভিটামিন সি, বেনজয়েল পারঅক্সাইড, এএইচএ/ বিএইচএ অ্যাসিড। কিন্তু বাকুচিওল ব্যবহার করলে এত কিছু চিন্তা না করলেও চলে। সব ধরনের উপাদানের সঙ্গে এটি মিশিয়ে নেওয়া যায়।
বাকুচিওল গর্ভাবস্থায় ও ব্রেস্টফিডিংয়ের সময়ে ব্যবহার করা নিরাপদ। এ জন্য যাঁরা দীর্ঘ সময় ধরে রেটিনল ব্যবহার করে আসছেন, তাঁরা গর্ভবতী হলে ডার্মাটোলজিস্টরা তাঁদের বাকুচিওল ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
বর্তমানে বাকুচিওল দিয়ে সিরাম ও ময়েশ্চারাইজার তৈরি হচ্ছে। কিছু ব্র্যান্ড বেশ সাশ্রয়ী মূল্যে বাজারে এই পণ্য সরবরাহ করছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো দ্য অরডিনারি, দ্য ইঙ্কি লিস্ট, বুটস, বিওয়াইবিআই।
ছবি: ইনস্টাগ্রাম ও পেকজিলেসডটকম