জোজোবা অয়েল ও নারকেল তেল
জোজোবা অয়েলে আছে প্রাকৃতিক অ্যান্টি ফাঙ্গাল ও অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা আপনার স্ক্যাল্পকে খুশকিমুক্ত রাখতে সাহায্য করবে। এ ছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন ই এবং অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, যা স্ক্যাল্পের লালচে ভাব, চুলকানি ও শুষ্ক ও মৃত চামড়া তুলে ফেলতে সাহায্য করে। আর নারকেল তেলের নানাবিধ গুণ তো বলাই বাহুল্য। এর মধ্যে অন্যতম হলো নারকেল তেলে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড। এই ফ্যাটি অ্যাসিড খুশকির জ্বালাপোড়া এবং ফুসকুড়ির সমস্যা রোধে দারুণ কাজ করে। এ ছাড়া নারকেল তেলে থাকা ময়েশ্চারাইজার স্ক্যাল্পের মৃত কোষ নরম করে সহজে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। নারেকেল তেলে কয়েক ফোঁটা জোজোবা অয়েল নিয়ে স্ক্যাল্পে ভালোভাবে ম্যাসাজ করে নিন। এক ঘণ্টা পর গরম তোয়ালের ভাপ দুই থেকে তিনবার দিয়ে ভালো করে শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহে অন্তত তিন দিন ব্যবহারে নিজেই এর ফলাফল দেখতে পাবেন।
টক দই ও অলিভ অয়েল
অলিভ অয়েল হলো প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার, যা স্ক্যাল্পকে হাইড্রেটেড রেখে খুশকি কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া অলিভ অয়েলে আছে অ্যান্টি–ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা স্ক্যাল্প থেকে খুশকি, চুলকানি ও জ্বালাপোড়ার ভাব দূর করতে সাহায্য করে। টক দইয়ে আছে ল্যাকটিক অ্যাসিড ও প্রোবায়োটিক, যা স্ক্যাল্প থেকে খুশকিজনিত সমস্যা দূর করে স্ক্যাল্পে আনবে প্রশান্তির অনুভূতি। সেই সঙ্গে টক দই স্ক্যাল্পের পিএইচ লেভেলের ভারসাম্যও রক্ষা করে। এক কাপ টক দইয়ে এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে এর সঙ্গে কিছু পরিমাণে পানি দিয়ে পেস্ট তৈরি করে নিন। বিলি কেটে ভালোমতো পুরো স্ক্যাল্পে পেস্টটি লাগিয়ে নিন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত দুই দিন পেস্টটি ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন।
নিমপাতা, মেথি ও মধুর প্যাক
যেকোনো ধরনের চুলকানি দূর করতে নিমপাতা বহু বছর আগে থেকেই বেশ কার্যকরী ভেষজ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। নিমপাতার প্রাকৃতিক নির্যাস ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে খুবই উপকারী। আর মেথি ও মধুতেও কিন্তু আছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি ফাঙ্গাল উপাদান, যা স্ক্যাল্প থেকে খুশকি দূর করতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে মেথি মাথা ঠান্ডা রাখে এবং মেথি ও মধু স্ক্যাল্প থেকে রুক্ষতা, শুষ্কতা দূর করে স্ক্যাল্পকে রাখে ময়েশ্চারাইজড। আগের দিন রাতে মেথি ভিজিয়ে রেখে দিন। পরের দিন সকালে মেথি, নিমপাতা পাটায় বেটে অথবা ব্লেন্ড করে ভালোভাবে পেস্ট করে নেবেন। এই পেস্টের সঙ্গে মধু মিশিয়ে মিশ্রণটি ভালো করে স্ক্যাল্পে লাগিয়ে নিন। আধা ঘণ্টা পর ঠান্ডা পানি দিয়ে শ্যাম্পু করে ফেলুন। সপ্তাহে একদিন পেস্টটি ব্যবহার করলে খুশকি থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
ডিমের কুসুম
ডিমের কুসুমে আছে বায়োটিন, যা খুশকির সমস্যা সমাধানে প্রধান ভিটামিন। এ ছাড়া ডিমের কুসুম স্ক্যাল্প ও চুলকে ময়েশ্চারাইজড ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল রাখে। এ ক্ষেত্রে মনে রাখবেন, স্ক্যাল্প ও চুলের জন্য ডিমের সাদা অংশের চেয়ে কুসুমটাই বেশি উপকারী। আপনার সুবিধামতো একটি অথবা দুটি ডিমের কুসুম নিয়ে শুকনা স্ক্যাল্পে ভালো করে ডিমের কুসুম দিয়ে ম্যাসাজ করে নিন। একটি শাওয়ার ক্যাপ পরে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করে শ্যাম্পু করে ফেলুন। বলে রাখা ভালো যে ডিমের কুসুমের উটকো গন্ধ দূর করতে একবারের জায়গায় দুবার শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হতে পারে।
লেবু
লেবুতে আছে সাইট্রিক অ্যাসিড, যা খুব কার্যকরী এক্সফলিয়েটর হিসেবে কাজ করে। সেই সঙ্গে লেবুর রস স্ক্যাল্পের চুলকানি কমায়, পিএইচ ব্যালান্সও বজায় রাখতে সাহায্য করে ও স্ক্যাল্পের অতিরিক্ত তেলও শোষণ করে নেয়। এই অতিরিক্ত তেলই কিন্তু খুশকির সমস্যা তৈরি করে। নারকেল তেল অথবা অলিভ অয়েলের সঙ্গে কিছুটা লেবুর রস মিলিয়ে স্ক্যাল্পে ভালোভাবে ম্যাসাজ করে নিন। ৫ থেকে ১০ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ফেলুন। কার্যকরী ফল পেতে সপ্তাহে অন্তত দুবার ব্যবহার করুন।
আদার রস
আদার রস যে খুব ভালো অ্যান্টি–ইনফ্লেমেটরি হিসেবে কাজ করে, তা নিশ্চয়ই এর ঝাঁজ দেখেই আঁচ করতে পারেন। এ ছাড়া আদার রস স্ক্যাল্পের ছত্রাক সংক্রমণ দূর করতে সাহায্য করে। আদার রস স্ক্যাল্পে ভালোভাবে ম্যাসাজ করে ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন। স্ক্যাল্প বেশি রুক্ষ, শুষ্ক হলে আদার রসের সঙ্গে একটু মধু মিশিয়ে নিতে পারেন।
ছবি: ইন্সটাগ্রাম ও পেকজেলসডটকম