রূপচর্চা শব্দটি এখন শুধু নারীদের জন্য সংরক্ষিত নয়। পুরুষেরাও এখন ত্বকের যত্নের ব্যাপারে সচেতন হচ্ছেন। অনেক গবেষণায় উঠে এসেছে, বর্তমানে ২৫ থেকে ৩৪ বছর বয়সী পুরুষদের মধ্যে নির্দিষ্ট রূপ-রুটিন মেনে চলার আগ্রহ বেশ। অবশ্য এমন পুরুষও আছেন, যাঁরা ‘রূপচর্চা করা ঝামেলা বা খুব জটিল কাজ’, এসব চিন্তা থেকে পিছিয়ে যান। সত্যি বলতে, ত্বক সুস্থ ও সুন্দর রাখতে আসলে খুব বেশি কিছু না করলেও চলে। মাত্র তিন ধাপেই ছেলেদের ত্বকের যত্ন নেওয়া সম্ভব। এতে যে খুব বেশি সময় ব্যয় হয়, ব্যাপারটা এমন নয়। এই গরমে এই তিন ধাপ মেনে চললে পাওয়া যাবে সতেজ, স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক।
সকালে ঘুম থেকে উঠে ও বাইরে থেকে ঘরে ফিরেই একটি ভালো মানের ক্লিনজার দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। এটি খুব সহজে মুখের ত্বকের ঘাম, তেল, ধুলাবালু ও ময়লা পরিষ্কার করতে পারে। তবে নিজের পছন্দমতো যেকোনো একটা ক্লিনজার মুখে লাগালেই হবে না, ত্বকের ধরন অনুযায়ী ক্লিনজার ব্যবহার করতে হবে। যেমন শুষ্ক ত্বকে পেট্রোলাটাম, মিনারেল অয়েল, ল্যানোলিন, হায়ালুরোনিক অ্যাসিড, গ্লিসারিনযুক্ত ময়েশ্চারাইজিং ক্লিনজার ব্যবহার করা উচিত। আবার তৈলাক্ত বা ব্রণের সমস্যা আছে, এমন ত্বকের জন্য স্যালিসাইলিক অ্যাসিড, গ্লাইকোলিক অ্যাসিড, বেনজোয়েল পার-অক্সাইড, টি ট্রি অয়েল, নায়াসিনামাইডযুক্ত ক্লিনজার সবচেয়ে ভালো।
ত্বকের মৃত কোষ পরিষ্কার করাটা জরুরি। এতে ত্বক শুধু মসৃণ ও উজ্জ্বলই হয় না, ত্বকের ভেতর অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান ভালোভাবে প্রবেশ করে। এ জন্য সপ্তাহে অন্তত একবার এক্সফোলিয়েশন বা স্ক্রাব করতে হবে। ফিজিক্যাল ও কেমিক্যাল—দুই ধরনের এক্সফোলিয়েটর ছেলেরা ব্যবহার করতে পারেন। কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর খুব কোমলভাবে ত্বকের মৃত কোষ দূর করে। আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড, যেমন ল্যাকটিক অ্যাসিড, গ্লাইকোলিক অ্যাসিড এবং বেটা হাইড্রক্সি অ্যাসিড, যেমন স্যালিসাইলিক অ্যাসিড, এগুলো কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর। ত্বক পরিষ্কার করে মাত্র ১০ মিনিট মুখে লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে।
ফিজিক্যাল এক্সফোলিয়েটর বা স্ক্রাব চাইলে ঘরেই বানানো যায়। দরকার কেবল দুই চামচ মিহি গুঁড়া চিনি বা লবণ বা কফি এবং দেড় চামচ অলিভ অয়েল। দুটি উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগিয়ে রাখতে হবে পাঁচ মিনিট। এরপর পাঁচ মিনিট ভালোভাবে ম্যাসাজ করে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
অনেকে গরমে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে চান না। কিন্তু শীতের মতো গরম ও বর্ষায়ও ত্বক আর্দ্রতা হারাতে পারে, হতে পারে পানিশূন্য। তাই ত্বক সুস্থ-স্বাভাবিক দেখাতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। শুষ্ক ত্বকের জন্য ক্রিম বেজড ও তৈলাক্ত ত্বকের জন্য জেল বেজড ময়েশ্চারাইজার উত্তম।
ময়েশ্চারাইজারের মতো সারা বছর অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। কারণ, সূর্যের ক্ষতিকারক বেগুনি রশ্মি রাত ছাড়া কখনোই ছুটিতে থাকে না। আর এটিই ত্বকের সবচেয়ে বড় শত্রু। ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া রোধে ও ক্যানসার থেকে বাঁচতে প্রতিদিন সানস্ক্রিন ব্যবহার করতেই হবে।
ছবি: ফ্রিপিক