বর্তমানের সৌন্দর্যচর্চায় আলোচিত হচ্ছে এই জেরানিয়াম এসেনশিয়াল অয়েল। দক্ষিণ আফ্রিকার ট্রপিক্যাল আবহাওয়ায় বেড়ে ওঠা গ্রিন হাউস প্ল্যান্ট। যার বৈজ্ঞানিক নাম ‘জেরাস জেরানিয়াম’। গুল্মজাতীয় এই উদ্ভিদ গোলাকৃতির হয়ে থাকে। এই গাছ সাধারণত দুই ফুট উচ্চতার হয়ে থাকে, ফুল হয় সাদা, গোলাপি, লাল ও বেগুনি। বিভিন্ন রকমের সুগন্ধিতে এই জেরানিয়ামের নির্যাস ব্যবহার করা হয়।
এর রয়েছে ভেষজ গুন, যার মাধ্যমে চুলের গোড়ার সেবাম নিয়ন্ত্রিত হয়, কোলাজেন আর রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং হরমোন সঞ্চালনকে ত্বরান্বিত করে। এর রয়েছে অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্ট, অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট, এস্ট্রিজেন্ট, ডায়ুরেটিক, হেমোস্টেটিক , হাইপোগ্লাইসেমিক, কীট-নাশক, টনিক ও ভেসোকন্সট্রিকটরে জেরানিয়াম ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও ত্বকের যত্নে এই তেল দারুণ উপকারী। অবসাদ দূর করতে এই তেল ভালো কাজ করে বলে গবেষণায় জানা যায়। এর মধ্যে ‘জেরেনিয়া’ নামে একটি রাসায়নিক উপাদান থাকে যা একে খানিকটা ফুলেল ও গোলাপের সুবাস দেয়।
বিশেষ করে চুলের বৃদ্ধিতে রয়েছে এর দারুণ ভূমিকা-
* জেরানিয়াম তেল চুলের গোড়ায় ব্যবহার করলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়। চুলের গোড়া মজবুত করে, চুল হয় ঘন।
* জেরানিয়াম এসেনশিয়াল তেলকে ক্যারিয়ার অয়েল এর সঙ্গে কয়েক ফোঁটা মিশিয়ে মাথার তালুতে ৫-১০ মিনিট ম্যাসাজ করলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়, নতুন চুল গজায়। এছাড়াও শীতের সময় যাদের মাথার তালু শুষ্ক হয়ে যায়, তাদের জন্য এই তেল মাসাজ করলে আর্দ্রতা ফিরে আসে এবং সেবাম উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। ক্যারিয়ার তেল হিসেব নারকেল বা জোজবা তেল ব্যবহার করা যাবে।
ডি আই ওয়াই হেয়ার মাস্ক
আপনি যে হেয়ার মাস্ক বা কন্ডিশনার চুলে ব্যবহার করেন, তার সঙ্গে দুই থেকে তিন ফোঁটা মিশিয়ে সেটা ব্যবহার করুন। ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। স্বাস্থ্যকর উজ্জ্বল চুলের জন্য এটি দারুণ কাজ করে।
শ্যাম্পু বুস্ট
আপনি যে শ্যাম্পু ব্যবহার করেন তার সঙ্গে দুই থেকে তিন ফোঁটা জেরানিয়াম অয়েল মিশিয়ে ব্যবহার করুন। এটা আপনার মাথার ত্বক পরিষ্কার করে এবং নতুন চুল গজাতে সহায়তা করে।
চুলের যত্নে
* নিয়মিত জেরানিয়াম এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহারে চুলের গোড়া মজবুত হয়, চুল পড়া কমে ও চুল উজ্জ্বল হয়। চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়।
* খুশকি প্রতিরোধে এই তেল দারুণ কাজ করে। কারণ এর রয়েছে ফাঙ্গাস রোধী গুণাবলি যা খুশকি হওয়াকে বাধাগ্রস্ত করে।
* নারকেল তেলের সঙ্গে জেরানিয়াম তেল মিশিয়ে চুলের আগায় ব্যবহার করলে চুলের আগা ফেতে যাওয়া বা সিপ্লিট এন্ড সমস্যার সমাধান হয় আর চুল হয় ঝকঝকে।
* তৈলাক্ত মাথার তালুর জন্য এই তেল ব্যবহারে, তেলের উৎপাদন নিয়ন্ত্রিত হয় ফলে অতিরিক্ত তেল উৎপাদন কমে গিয়ে চুল চিটচিটে হওয়া বন্ধ হয়।
সতর্কতা
এর সুবাস বেশ কড়া সেকারণে নারকেল বা জোজবা তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করুন। এর ঘনত্ব বেশি হওয়ার জন্য ক্যারিয়ার ওয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করা শ্রেয়। এই তেল সরাসরি ব্যবহারে অ্যালার্জি হতে পারে তাই অবশ্যই অন্য তেলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করুন। এই তেলের গন্ধের প্রতি বিড়ালরা সংবেদনশীল তাই তাদের কাছ থেকে দুরে রাখুন। দুই বছরের কম বয়সই বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও দূরে রাখা বাঞ্ছনীয়।
ছবি: ইনস্টাগ্রাম