টেইলর সুইফট নিজেকে মিডিয়া থেকে গুটিয়ে রেখেছেন অনেক দিন থেকেই। প্রেমিক ট্রাভিস কেলসির সঙ্গেও তাঁর দেখা পাওয়া যাচ্ছে না বললেই চলে। সম্প্রতি নিজের গানের স্বত্ব ফিরে পাওয়ার খুশিতে কিছুদিন আগে তাঁকে দেখা গিয়েছিল নিউইয়র্কে, তাঁর প্রিয় রেস্তোরাঁয়, তাও তো খুব বেশি সময়ের জন্য নয়।
কেন এই পরিবর্তন? এ নিয়ে প্রশ্ন ঘুরছে এখন ভক্তদের মাঝে। করছেন জল্পনাকল্পনাও। এসব জল্পনাকল্পনা আর গুজবের মধ্যেই সামনে এল নতুন আর চাঞ্চল্যকর তথ্য, যা আশঙ্কারও। টেইলর সুইফটের খ্যাতি তাঁকে নিয়ে ফেলেছে ভয়াবহ এক বিপদে। ‘খ্যাতির বিড়ম্বনা’র ধারণাটি এখন সত্যি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক ভক্ত তাঁর প্রেমে এতটাই মত্ত যে টেলরের নিরাপত্তা রীতিমতো এখন সংকটের মুখে।
এই ভক্তের নাম ব্রায়ান জেসন ওয়াগনার। ৪৫ বছর বয়সী এই ব্যক্তি দীর্ঘদিন থেকে তাঁকে অনুসরণ করছেন। সূত্রমতে, গত মাসে এই ব্যক্তি টেইলরের লস অ্যাঞ্জেলেসের বাড়িতে দুবার ঢোকার চেষ্টা করেন। তবে অন্য আরও অনেক ভক্তের মতো এই ভক্ত সাধারণ কোনো মানুষ নন। কাজেই ঘটনা এখানেই থেমে নেই। কারণ, মানুষটি আগে জেলেও ছিলেন। জেল থেকে তিনি টেইলরের বাড়ির কর্মচারীদের কাছে দীর্ঘ এক চিঠি পাঠান। তাতে তিনি নিজেকে এই তারকার ‘রোমান্টিক পার্টনার’ হিসেবে দাবি করেন! এ ছাড়া তিনি এ–ও দাবি করেছেন, তিনি টেইলরের বাড়িতে থাকেন ও এই তারকা তাঁর সন্তানের মা!
এ নিয়ে এখন ভয়ে আছেন টেইলর। তিনি বলেন, ‘আমি কোনো ওয়াগনার নামের ব্যক্তির রোমান্টিক পার্টনার কিংবা স্ত্রী তো নই-ই; বরং বারবার আমার বাড়ির কর্মচারীদের এ রকম চিঠি পাঠানো, এরপর আবার বাড়িতে ঢুকে পড়ার চেষ্টা দেখে সত্যিই ভয় পাচ্ছি।’
এই ব্যক্তি যেসব অদ্ভুত দাবি করছেন, তার একটিরও সত্যতা নেই বলে জানান টেইলর। ওয়াগনার নামের এই ব্যক্তি প্রথম টেইলরের বাড়িতে আসেন প্রায় এক বছর আগে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে। এমনকি একবার তাঁর হাতে এমন এক কাচের বোতলও দেখা যায়, যা দিয়ে কারও ক্ষতি করা যেতে পারে। এবার ওয়াগনার দাবি করছেন, টেইলরের সঙ্গে সামনাসামনি দেখা করাটা তাঁর খুব দরকার। এমনকি এর আগে টেইলরের ব্যক্তিগত ই–মেইল আইডির অ্যাকসেস পাওয়ারও চেষ্টা করেন এই ব্যক্তি, যা সত্যিই আশঙ্কার।
এ কারণে আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েও যেতে হচ্ছে টেইলরকে। আদালত একটি সাময়িক নিবৃত্তি আদেশ দিয়েছেন ওয়াগনার নামের এই ব্যক্তির উদ্দেশে। বিচারক ডেবরা আর আর্চুলেটা এই ব্যক্তিকে টেইলর সুইফট থেকে এক শ গজ দূরে থাকার আদেশ দেন। এই নিবৃত্তি আদেশ এই মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
টেইলরের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাটিই ভক্তি আর বিকৃত ফ্যানাটিজমের সবচেয়ে বড় উদাহরণ। এ দুটি জিনিসের মধ্যে যে সূক্ষ্ম পার্থক্য আছে, অনেকেই সেটা বোঝেন না।
কারও গান বা অভিনয় ভালো লাগলেই তাঁর ব্যক্তিগত স্পেসের মধ্যে এভাবে ঢুকে পড়ার চেষ্টা সত্যিই অনুচিত। এই বিড়ম্বনার কারণেই টেইলর নিজেকে মিডিয়া থেকে সরিয়ে নিয়েছেন বলেই ধারণা করছেন ভক্তরা। কেউ আবার বলছেন, ব্রায়ান নামের এই ব্যক্তি মানসিক ভাবে অসুস্থ। তাই তাঁরা এ সমস্যার দ্রুত সমাধান আশা করছেন, যাতে আবার নিজের স্বাভাবিক গতিতে ফেরেন সুইফট।
বলিউডে এ ঘটনা নতুন নয়, তবে এ ঘটনা আবার মনে করিয়ে দেয় যে তারকা হলেও কেউ নিরাপদ নন; বরং জনপ্রিয়তা অনেক সময় উল্টো তাঁদের ঝুঁকির কারণ হতে পারে।