এই দুই প্রতিযোগী ইতিমধ্যে তৃতীয় রাউন্ডে পৌঁছে গেছে ইনফ্লুয়েনশিয়াল নেশন অব দ্য ইয়ার– ভোটিংয়ের মাধ্যমে। ফলে শীর্ষ ১৫–তে পা রাখার কাছে পৌঁছে গেছে তারা।
নানা দেশের প্রতিযোগীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিতব্য এই প্রতিযোগিতায়ে কেবল বাহ্যিক সৌন্দর্যই বিবেচ্য নয়; বরং মেধা, মনন ও ঐতিহ্যের বিভিন্নতার নিরিখে সৌন্দর্যকে উদ্যাপন।
তাই এবার ভিয়েতনামের হো চি মিন শহরে বিভিন্ন দেশের, নানা জাতি ও বর্ণের প্রতিযোগীরা উপস্থিত হবেন নিজের মেধা পরখ করতে। তাঁরা নিজেদের মেধা ও সৌন্দর্য দিয়েই শুধু মঞ্চ মাতাবেন না, নিজের দেশ, দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরবেন পৃথিবীর সামনে। তাঁদের দেশের যা কিছু সুন্দর, সেসবের প্রতিনিধি তাঁরা। এই তালিকায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন সাজরিয়া তাবাসসুম প্রমা ও রেজাউল ইসলাম স্বাধীন।
গেল অক্টোবরে আর্কা ফ্যাশন উইক ২০২৩–এ অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ পর্ব। সেখানে মোট ২০ জন প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্য থেকে ‘মিস অ্যান্ড মিস্টার সেলিব্রিটি ইন্টারন্যাশনাল’–এর বিজয়মুকুট উঠেছিল প্রমা ও স্বাধীনের মাথায়। এরপর দীর্ঘ ১০ মাসের বেশি সময় ধরে ‘মিস অ্যান্ড মিস্টার সেলিব্রিটি ইন্টারন্যাশনাল’–এর জাতীয় পরিচালক ও আজরা মাহমুদ ট্যালেন্ট ক্যাম্পের স্বপ্নদ্রস্টা আজরা মাহমুদের তত্ত্বাবধানে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর, এবার তাঁরা মূল মঞ্চে নিজের দেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে প্রস্তুত।
এই প্রতিযোগিতা সম্পর্কে আজরা মাহমুদ বলেন, প্রমা ও স্বাধীনকে এত বড় মঞ্চে দেখতে পাব, ভেবে সত্যিই খুব আনন্দ হচ্ছে। এট ভীষণ গর্বের বিষয়। দেশকে বৈশ্বিক মঞ্চে তুলে ধরার মতো আত্মবিশ্বাস, মেধা, দক্ষতা ও যোগ্যতা উভয়েরই আছে। আশা করছি, তারা আমাদের মুখ উজ্জ্বল করবে।
ইন্টারনেটের কল্যাণে ইদানীং গোটা পৃথিবীই এখন মুঠোবন্দি। ফলে সামাজিক মাধ্যমগুলো যেন হয়ে উঠেছে একেকটি বাড়ি এবং সেলিব্রিটি ও ইনফ্লুয়েন্সাররা সেই বাড়ির কর্তা-কর্ত্রী।
মিস অ্যান্ড মিস্টার সেলিব্রেটি ইন্টারন্যাশনালের মঞ্চ শুধু দেশের সংস্কৃতি তুলে ধরার ওপরের জোর দেয় না; বরং সাধারণ মানুষের জীবনে তারকা বা সেলিব্রেটিরা কেমন প্রভাব বিস্তার করতে পারেন এবং সমসময়ে তাঁরা তাঁদের প্রভাব সমাজের কল্যাণে আদৌ কাজে লাগাচ্ছে কি না, সেটিও গুরুত্ব সহকারে আমলে নেওয়া হয়। এ জন্য প্রমা ও স্বাধীন কেবল সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার প্রতিযোগী হিসেবে লড়বেন না; বরং তাঁরা পৃথিবীকে টেকসই ও কল্যাণময় করার ক্ষেত্রে তাঁদের ভাবনাকেও উপস্থাপন ধরবেন।
এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়ে সেটা কাজে লাগাতে চান স্বাধীন বলে জানিয়েছেন স্বাধীন। বাংলাদেশ পর্বে বিজয়ী হওয়ার পর থেকেই তিনি নিজেকে একটু একটু করে প্রস্তুত করেছেন। এখন মূল মঞ্চে নিজেকে উপস্থাপনের পালা।
বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে নিজেকে যোগ্যতর অবস্থানে উন্নীত করার পাশাপাশি দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে প্রত্যয়ী স্বাধীন।
কথা প্রসঙ্গে নিজের উত্তেজনা চেপে রাখতে পারেননি প্রমা। এই প্রথমবারের মতো কোনো বৈশ্বিক আসরের বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছেন তিনি। এটা তাঁর জন্য বিশেষ গর্বের বিষয়। মূল আসরে নিজের মেধা, দক্ষতা আর যোগ্যতার ছাপ রেখে আসতে চান তিনি। বিজয়ী হতে না পারলেও বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরতে চান তিনি। তবে এই অবস্থানে আসার পেছনে নিজের অভিভাবক আর আজরা মাহমুদ ট্যালেন্ট ক্যাম্পের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন প্রমা।
‘আজরা মাহমুদ ট্যালেন্ট ক্যাম্প’–এর সহায়তায় বাংলাদেশ এখন বিশ্ব সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার মঞ্চে গুটি গুটি পায়ে হলেও ফেলছে তার সাহসী পদক্ষেপ। এই ক্যাম্পের কাজ হলো দেশীয় ও বিশ্ব মঞ্চের জন্য দক্ষ মডেল ও সৌন্দর্য প্রতিযোগীদের ঘষে–মেজে তৈরি করা। বাংলাদেশের সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার পরিসর বড় হচ্ছে।
আমাদের পাচ্ছি সুন্দর আগামীর আগমনী বার্তা। বর্তমানে আজরা মাহমুদ ট্যালেন্ট ক্যাম্পের হাতে মিস অ্যান্ড মিসেস সেলিব্রেটি ইন্টারন্যাশনালের শুধু বাংলাদেশের লাইসেন্স নয়, আছে ভারত, পাকিস্তান ও নেপালের লাইসেন্সও।
উল্লেখ্য, গত বছর মিস অ্যান্ড মিস্টার সেলিব্রিটি ইন্টারন্যাশনাল ২০২৩-এ বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন নুজহাত তাবাসসুন ইফা এবং রনি ইমরান। ইফা শীর্ষ ১০–এও স্থান করে নিয়েছিলেন।
ছবি: এএমটিসি