অবশেষে টেইলর সুইফট ফিরে পেলেন নিজের গানের মালিকানা, গুনতে হলো ৪০০০ কোটি টাকার বেশি
শেয়ার করুন
ফলো করুন

সম্প্রতি পেজ সিক্স প্রকাশ করেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। এক সময়ের শত্রু স্কুটার ব্রনই এখন পপ রাজকুমারী টেইলর সুইফটের নতুন বন্ধু। আর সেই বন্ধুত্বের সূত্র ধরেই টেইলরের শিল্পীজীবনের প্রায় হারিয়ে যাওয়া এক অধ্যায় ফিরে পেলেন তিনি। স্কুটার ব্রনের সহায়তায় নিজের ৬টি উল্লেখযোগ্য অ্যালবামের পুরোনো মাস্টার রেকর্ডিং এবার এল টেইলরের আয়ত্তে। অথচ এই স্কুটারই একসময় নিজের গানের মালিকানা থেকে খুব বাজেভাবে বঞ্চিত করেছেন পপ রাজকুমারীকে। চলুন জেনে নিই পুরো কাহিনি।

প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, অবসরপ্রাপ্ত সংগীত সম্রাট স্কুটার ব্রন উদ্যোগ নিয়ে টেইলরের প্রায় হারিয়ে যাওয়া এসব রেকর্ডিং ফিরিয়ে দিলেন তাঁকে। এ জন্য কষ্টও করতে হয়েছে বেশ। বিনিয়োগ সংস্থা শ্যামরক ক্যাপিটালকে রাজি করিয়েছেন তিনি, যেন তাঁরা সুইফটকে তাঁর প্রথম ছয়টি অ্যালবামের মাস্টার রেকর্ডিং বিক্রি করে দেয়। শেষ পর্যন্ত হয়েছেও তা। আর ৬ টি অ্যালবামের মাস্টার কপি বাবদ টেইলরকে গুনতে হলো ৩৬০ মিলিয়ন ডলার যা বাংলাদেশি টাকায় ৪ হাজার কোটিরও বেশি। তবে শ্যামরকও এ নিয়ে বেশ ঝামেলা করেছে। কারণ এর আগে টেইলরকে দৃশ্যপটের বাইরে রেখেই স্কুটার তাঁর গানের মালিকানা শ্যামরককে বিক্রি করেছেন।

এটি শুধু টেইলরের একার বিজয় নয়, ভক্তদের জন্যও একটি দারুণ সুখবর
এটি শুধু টেইলরের একার বিজয় নয়, ভক্তদের জন্যও একটি দারুণ সুখবর

টেইলরের মাস্টার রেকর্ড নিয়ে বিতর্ক আজকের নয়, বরং বেশ পুরোনোই বলা যায়। ২০১৯ সালে স্কুটার ব্রনের কোম্পানি ইথাকা হোল্ডিংস বিগ মেশিন রেকর্ডস কিনে নেয়। তখনই শুরু হয় এই বিতর্ক। এই চুক্তির ফলে ব্রন সুইফটের ২০০৬ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত প্রকাশিত ছয়টি অ্যালবামের - টেইলর সুইফট, ফিয়ারলেস, স্পিক নাও , রেড , নাইন্টন এইটিনাইন, এবং রেপুটেশন এর মালিকানা পেয়ে যান।

বিজ্ঞাপন

এই মালিকানার অর্থ ছিল , সুইফটের পুরোনো গান যেকোনোভাবে ব্যবহার করতে চাইলে, অনুমতি নিতে হতো ব্রনের থেকে। বিষয়টি নিয়ে সুইফট তখন তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন, দাবি করেন তিনি বহুবার নিজের রেকর্ডিংগুলো কিনতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি।

স্কুটার ব্রনের সহায়তায় ৬টি  অ্যালবামের পুরোনো মাস্টার রেকর্ডিং এখন টেইলরের আয়ত্তে
স্কুটার ব্রনের সহায়তায় ৬টি অ্যালবামের পুরোনো মাস্টার রেকর্ডিং এখন টেইলরের আয়ত্তে

২০১৯ সালের জুনে তিনি টাম্বলারে লেখেন, “আমি বহু বছর ধরে অনুরোধ করেছি, চেষ্টা করেছি যেন নিজের কাজের মালিক হতে পারি। আমার অনুরোধে কান না দিয়ে ,বরং আমাকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল আবার বিগ মেশিনে সাইন করলে প্রতিটি নতুন অ্যালবামের বদলে একটা পুরোনো মাস্টার ফিরিয়ে দেওয়া হবে। আমি সে চুক্তি প্রত্যাখ্যান করি।”

তার র অভিযোগ ছিল, স্কট বরচেটা ইচ্ছাকৃতভাবে তাকে সেই চুক্তিতে বাঁধতে চেয়েছিলেন যাতে পরবর্তীতে লেবেল বিক্রির সময় টেইলরের সোনালি ভবিষ্যৎ সংকটের মুখে পড়ে।

এরপর ঘটনা আরও বহুদূর যায়। ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে ব্রন মাস্টারগুলো প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলারে বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান শ্যামরক ক্যাপিটালের কাছে বিক্রি করেন। তবে তখনো সুইফটের কোনো সম্মতি নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি তিনি।
এই রেশারেশির সূত্র ধরেই সুইফট সিদ্ধান্ত নেন নিজেই নিজের অ্যালবামগুলো পুনরায় রেকর্ড করবেন। এখন পর্যন্ত তিনি প্রকাশ করেছেন ফিয়ারলেস (টেইলর’স ভার্সন), রেড (টেইলর’স ভার্সন),স্পিক নাউ  (টেইলর’স ভার্সন) এবং নাইটিন এইটিনাইন  (টেইলর’স ভার্সন)। এগুলো আগেরগুলোর চেয়েও বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই পপতারকার ভক্তদের কাছে।

এখন সেই শত্রুভাবাপন্ন স্কুটার ব্রনের মধ্যস্থতায় সুইফট তাঁর মাস্টার রেকর্ড গুলো ফিরে পেলেন। আর স্কুটারও তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, আমি তাঁর (টেইলরের) জন্য আনন্দিত। আসলে এটি শুধু টেইলরের একার বিজয় নয়, ভক্তদের জন্যও একটি দারুণ সুখবর।

ছবি: ইনস্টাগ্রাম

বিজ্ঞাপন
প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৫, ১০: ৩৪
বিজ্ঞাপন