চট্টগ্রামের উদ্যোক্তা তৌহিদুল ইসলাম দেশীয় পণ্যকে বিশ্বমানে পৌঁছে দেওয়ার প্রয়াসে শুঁটকি নিয়ে কাজ শুরু করেন। তাঁর উদ্যোগের নাম ‘শুঁটকিজ’। তিনি শুরুতেই বাঙালির প্রিয় শুঁটকি প্রস্তুতকরণ থেকে রান্না—সব ধাপেই প্রথমে সমস্যাগুলো খুঁজে বের করেন। তাঁর মতে, উদ্যোক্তার কাজই হচ্ছে প্রথমে সমস্যাগুলো খুঁজে বের করা। শুঁটকির ক্ষেত্রেও আমরা তা–ই করেছি। যেমন সঠিক মাছ বাছাই থেকে শুরু করে, তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও প্রক্রিয়াজাত করে প্যাকেজিং পর্যন্ত গুণগত মান বজায় রাখা। পাশাপাশি সঠিকভাবে পরিবহনের ব্যবস্থা করা।
‘শুঁটকিজ’ উদ্যোগের পাশাপাশি তিনি আয়োজন করেন শুঁটকির রেসিপি নিয়ে ‘হুনি রাঁধনত গুণী হন’ শিরোনামে রান্নার প্রতিযোগিতা। দুটি সিজনে সারা দেশের সেরা রন্ধনশিল্পীদের কাছ থেকে আসে ৫০০ রেসিপি। শুঁটকির মাঞ্চুরিয়ান, ডিপ ফ্রাইড শুঁটকি, পাতুরি ইউথ গ্রিন সস, কাচকি শুঁটকির ঝাল গোল্লা, কোরাল শুঁটকির মাসালা গতানুগতিক সব রেসিপির বাইরে বাছাইকৃত এমন সব ১০১ রেসিপি নিয়ে ‘শুঁটকির ১০১’ বইটি। এনামুল তাহসানের প্রচ্ছদ ও অলংকরণে বইটির মূল্য ধরা হয়েছে ৫৫০ টাকা।
রেসিপি ছাড়াও ভালো শুঁটকি চেনার উপায়, শুঁটকির ইতিহাসসহ পুরো শুঁটকির ইতিবৃত্ত পাওয়া যাবে বইটিতে। মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেই সব রন্ধনশিল্পী, যাঁদের রেসিপি ছাপা হয়েছে বইটিতে। রন্ধনশিল্পীরা শুঁটকিজের উদ্যোগের প্রশংসা করেন। রন্ধনশিল্পী ফারজানা রহিম বলেন, ‘অনেকেই শুঁটকি খেতে পছন্দ করেন না। সন্তানেরাও খেতে চায় না। রান্নার কৌশল আর ভিন্নতা নিয়েই আমরা কাজ করেছি। যাতে ঐতিহ্যবাহী ও মুখরোচক খাবারটি দেশি–বিদেশি ভোজনপ্রেমীদের কাছে পৌঁছে যায়।’
মেলায় শুঁটকিজের স্টল রয়েছে ‘সাগর থেকে নগরে’ ট্যাগ লাইনে। যেখানে দেখা যায় ক্রেতাদের ভিড়। তৌহিদুল ইসলাম জানান, শুঁটকির গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্টাল ধরন তাঁরা আনেন। এবারের মেলায় আছে নাগা মরিচের বালাচাও, অক্টোপাসের শুঁটকি, শুঁটকির চানাচুর ইত্যাদি। শুঁটকিজের চিংড়ির বালাচাও ক্রেতাদের কাছে খুবই জনপ্রিয় বলে জানান তৌহিদুল ইসলাম। এ ছাড়া স্টলে ম্যাগাজিনের আদলে একটি স্বচ্ছ ফটোবুথ রয়েছে।