অনুষ্ঠিত হলো উদীয়মান নারী ডিজাইনার ও উদ্যোক্তাদের তৈরি পণ্যের বিশেষ প্রদর্শনী ‘ফ্যাশন উইথ পারপাস’
শেয়ার করুন
ফলো করুন

৭ ও ৮ জুন রাজধানীর মতিঝিলে অবস্থিত রহমান চেম্বারে অনুষ্ঠিত হলো ‘ফ্যাশন উইথ পারপাস: আ ক্রিয়েটিভ জার্নি উইথ বিবি রাসেল অ্যান্ড প্রিমিয়ার শোকেস অব এমার্জিং ট্যালেন্ট’ শীর্ষক প্রদর্শনী। এর আয়োজন করে উইমেন ইন ডিজিটাল এবং সার্বিক সহযোগিতায় ছিল বিবি প্রোডাকশন। এতে অংশগ্রহণ করেন স্বনামধন্য ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেলের কাছ থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ২০ জন নতুন ফ্যাশন ডিজাইনার ও উদ্যোক্তা। উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ নারীদের জন্য ‘ফ্যাশন ডিজাইন ক্র্যাশ কোর্স উইথ বিবি রাসেল’ শীর্ষক ফ্যাশন ডিজাইন প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছিল।

প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য নাদিয়া বিনতে আমিন, রামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবুল খায়ের পাটোয়ারী, ভোরের কাগজের সম্পাদক ও প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, সিলেট উইমেন চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি স্বর্ণলতা রায়, বাংলা ক্রাফটের সভাপতি এস ইউ হায়দার, সিআরআইয়ের হেড অব রিসার্চ অ্যান্ড কমিউনিকেশন সৈয়দ মফিজ কামাল অনিক, বিশ্বব্যাংকের হোসনে আরা ফেরদৌস সুমি, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের হেড অব অপারেশনস ও আইডিয়া প্রজেক্ট সিদ্ধার্থ গোস্বামীসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

অংশগ্রহণকারী নতুন ফ্যাশন ডিজাইনার ও উদ্যোক্তারা হলেন তানিয়া ওয়াহাব (ট্যান), ফারহানা মুনমুন (বেনে বৌ জামদানি), মাহজাবীন রহিম মৈত্রী (ওল্ড স্কুল আর্ট স্কুল), জান্নাতুল ফেরদৌস হীরা ও ফারাহ সিরাজ (বনোরিটা), রেহেমুমা হোসেন (রিঙ্কি’স অ্যাটায়ার), রাহনুমা সুলতানা (টার্য মেন’স ওয়্যার), শাহীন আক্তার কণা (সীমন্তিনী), মাহমুদা রহমান (কিডস অ্যান্ড মম বাজার), মাসহুদা হক ইফা (প্রিয়তমেষু), এভলী চাকমা (তারা বাই লি), নাসিমা আক্তার (ক্রনিক ফ্যাশন), রুবাইয়াত চৌধুরী (চৌধুরী’স), শাহীন শানীল (অ্যাস্টিলবি), অলকা রানী (ট্র্যাডিশনাল বিডি), মাকসুদা পারভীন ইভা (আমি আমরা), তৌহীদা আক্তার সংগীতা (ফ্রেশ ফ্যাশন), ফারহানা আলম (আরুশের মায়ের দোকান), রাইসা মনিজা আক্তার (আর্টজেনিক্স)।

এই উদীয়মান ডিজাইনাররা বিবি রাসেলের কাছ থেকে শিখেছেন কীভাবে দেশীয় কাপড়কে ব্যবহার করে কীভাবে ট্রেন্ডি ও ফিউশনধর্মী পোশাক ও অনুষঙ্গ তৈরি করতে হয় এবং রং (কালার থিওরি) ও সুতার বিভিন্ন রকম ব্যবহারের নানা দিক। এসব শিক্ষা কাজে লাগিয়ে তাঁরা যে কালেকশন তৈরি করেছেন, সেটাই প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত হয়েছে। বিবি রাসেল প্রশিক্ষণার্থী উদ্যোক্তাদের পণ্য নির্বাচন থেকে শুরু করে পণ্যের গুণগত মান যাচাই এবং যেকোনো সমস্যার সমাধানে নিজে উদ্যোগ নিয়েছেন। এখানে গামছা, জামদানি, টাঙ্গাইল সুতি, মণিপুরি ইত্যাদি কাপড়ের তৈরি শাড়ি, কুর্তি, ফ্রক, স্কার্ট, টপ, পাঞ্জাবি, ওয়েস্টকোট ইত্যাদি প্রদর্শিত হয়। এ ছাড়া আরও ছিল পুঁতি, পাট, তামা, পিতলের তৈরি গয়না এবং চামড়া, পাট ও ডেনিমের তৈরি ব্যাগ, স্যান্ডেল।

প্রদর্শনীতে হাল ফ্যাশনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে নিজেদের উদ্যোগ ও তৈরি পোশাক ও অনুষঙ্গ নিয়ে কথা বলেন। মণিপুরি শাড়ি নিয়ে কাজ করেন রেহেমুমা হোসেন। তাঁর উদ্যোগের নাম রিঙ্কি’স অ্যাটায়ার। শ্রীমঙ্গলের তাঁতিদের দিয়ে তিনি শাড়িগুলো তৈরি করেন। শাড়ি তৈরি করতে গেলে ডিজাইনে কখনো কখনো গরমিল হতে পারে। তখন ওই কাপড় ফেলে দেন তাঁতিরা। কিন্তু রেহমুমা হোসেন ওই শাড়িগুলো দিয়েই তৈরি করছেন ফিউশনধর্মী পোশাক, ব্যাগ ও গয়না।

বিজ্ঞাপন

চামড়ার তৈরি নানা ধরনের ব্যাগ ছিল ট্যানের সংগ্রহে। তানিয়া ওয়াহাব জানান, ‘প্রথমে শুধু চামড়া দিয়ে শুরু করলেও পরে এর সঙ্গে দেশীয় উপকরণ যেমন জুট, খাদি, গামছা, সিল্ক ইত্যাদির সমন্বয় করে ব্যাগ বানাই। এ ছাড়া চামড়ার ব্যাগে হ্যান্ডপেইন্টও করেছি। আমাদের দেশে সাধারণত ব্যাগ রপ্তানি করে আনা হয়। আমি মনে করি, আমাদের যে দেশীয় উপকরণ যা এখানের ঐতিহ্যের অংশ, তা দিয়ে যদি আমি দৃষ্টিনন্দন কিছু পণ্য তৈরি করতে পারি, তাহলে রপ্তানি কমাতে পারব। ফলে দেশের টাকা দেশেই থাকবে।’

হাতে তৈরি গয়নার উদ্যোগ ফ্রেশ ফ্যাশন নিয়ে ছিলেন তৌহিদা আক্তার সঙ্গীতা। তাঁর সিগনেচার পণ্য হলো বিড লুমিংয়ে তৈরি গয়না। গয়নার মাধ্যমে দেশীয় ডিজাইনকে তুলে ধরছেন। সুতি, হাফ সিল্ক ইত্যাদি কাপড় দিয়ে তৈরি শাড়ি, অফিসওয়্যার ও ক্যাজুয়াল কমফোর্টওয়্যার নিয়ে ছিলেন আরুশের মায়ের দোকানের স্বত্বাধিকারী ফারহানা আলম। সেই সঙ্গে তাঁর সংগ্রহে ছিল পিইউ লেদার আর ফুলেল কাজ করা ক্রস স্যান্ডেল। ঐতিহ্যবাহী জামদানি শাড়ি নিয়ে এসেছিলেন চৌধুরী’সের রুবাইয়াত চৌধুরী ও বেনে বৌ জামদানির ফারহানা মুনমুন। সহোদরা জুটি জান্নাতুল ফেরদৌস হীরা ও ফারাহ সিরাজের উদ্যোগ বনোরিটায় ছিল গামছা, সুতি কাপড়ের ওভারসাইজড প্যাটার্নের লং শার্ট, কুর্তি, কিমোনো স্টাইলের শ্রাগ, কো-অর্ড সেট।

ছবি: হাল ফ্যাশন

প্রকাশ: ১০ জুন ২০২৪, ১৪: ৩৬
বিজ্ঞাপন